অথবা, শাসন বিভাগের গঠন প্রণালী উল্লেখ কর।
ভূমিকাঃ সরকারের কার্য পরিচালনার জন্য তিনটি বিভাগ রয়েছে, তার মধ্যে শাসন বিভাগ অন্যতম। আইন বিভাগ কর্তৃক প্রণীত আইনকে কার্যকরী করার জন্য যে বিভাগ রয়েছে তাকে শাসন বিভাগ বলে। সরকারের শাসন বিভাগই হলাে সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। কেননা প্রতিটি দেশেই শাসন বিভাগকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন পরিচালিত হয়।
শাসন বিভাগের গঠনঃ শাসন বিভাগকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা- ১. শাসন বিভাগের রাজনৈতিক অংশ এবং ২. শাসন বিভাগের অরাজনৈতিক অংশ।
শাসন বিভাগের রাজনৈতিক অংশ আবার দুটি অংশে গঠিত। যথাঃ ক. সরকারের শীর্ষ পদাধিকারী এবং খ. সহযােগী রাজনৈতিক পদাধিকারী।
বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় শীর্ষ পদাধিকায়ী প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রপতি, চ্যান্সেলর, রাজা বা রানী ইত্যাদি নামে পরিচিত। তাদের মধ্যে কেউ উত্তরাধিকার সূত্রে, কেউ মনােনীত আবার কেউ নির্বাচিত হন। প্রশাসনিক কার্যে স্থায়ীভাবে নিযুক্ত কর্মচারিগণ হলেন অরাজনৈতিক অংশের অন্তর্ভুক্ত। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এরা রাষ্ট্রকৃত্যক বা রাষ্ট্রভূত্যক নামে পরিচিত। অনেক সময় এদেরকে আমলাও বলা হয়ে থাকে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আমরা শাসন বিভাগকে ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করি না, বরং সংকীর্ণ অর্থেই ব্যবহার করে থাকি। এ অর্থে শাসন বিভাগ বলতে রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী এবং তার উপদেষ্টামণ্ডলীকে বুঝায়। উদাহরণস্বরূপ, আমেরিকার নির্বাহী বা শাসন বিভাগ বলতে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ও ক্যাবিনেট সদস্যদের বুঝানাে হয়। আবার ব্রিটেনের নির্বাহী বিভাগ বলতে সে দেশের রাজা বা রানী, প্রধানমন্ত্রী ও তার ক্যাবিনেট সদস্যদের বুঝানাে হয়।
উপসংহারঃ আলোচনা শেষে বলা যায়, সরকারের যে বিভাগ সরাসরি শাসন পরিচালনায় নিয়ােজিত তাকে শাসন বিভাগ বলে। আধুনিক শাসনব্যবস্থায় শাসন বিভাগের ভূমিকা খুব বেশি, কারণ অদক্ষ আইনসভা থাকার কারণে একটি দেশের সকল কাজ এখন শাসন বিভাগের সাহায্য ছাড়া সমাধান হয় না। কেননা শাসন বিভাগ গঠিত হয় মেধাবীদের নিয়ে।
Leave a comment