প্রশ্নঃ শাং রাজবংশের ইতিহাস বর্ণনা কর।
অথবা, শাং রাজবংশের ইতিহাস আলোচনা কর।

ভূমিকাঃ খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে চীনের সামাজিক, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে প্রভূত পরিবর্তন সাধিত হওয়ার ফলে বিস্তার ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। পুরাতন মূল্যবােধ বর্জন করে নতুন মূল্যবােধের আলােকে চৈনিক দার্শনিক নতুন করে ধর্ম প্রচার শুরু করেন। এ সময়ের চীনের ধর্ম দর্শন দ্বারা বিভিন্ন সভ্যতা প্রভাবিত হয়। চৈনিক ধর্মের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দার্শনিকতার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে অনেকে এটাকে দর্শনভিত্তিক ধর্ম বলে আখ্যায়িত করেছেন।

শাং রাজবংশের ইতিহাসঃ শাং রাজবংশ খ্রিস্টপূর্ব ১৭০০ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ১১০০ পর্যন্ত দক্ষিণে হুয়াই নদীর উপত্যকা থেকে পূর্বে পার্বত্য শানটাং উপদ্বীপ পর্যন্ত বিশাল ভূমিতে প্রাধান্য স্থাপন করে। তাদের রাজ্য প্রায় ৪০,০০০ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে গঠিত ছিল। প্রাচীন চীনা শুচিং (ইতিহাস গ্রন্থ) অনুসারে শাং বংশের রাজারা ভিন্ন ভিন্ন পাঁচটি রাজধানী থেকে রাজ্য শাসন করত। হােনান প্রদেশের ‘শাং’ নগর ছিল তাদের প্রথম রাজধানী ‘আও’ এবং ‘ইম’ ও তাদের রাজধানী নগরী ছিল। পার্শ্ববর্তী গ্রাম ও শহরসহ নগরগুলাে ছিল তাদের সভ্যতার কেন্দ্র। শাংরা ছিল চীনা বংশােদ্ভূত। তারা ছিল বেশ প্রভাবশালী, তাদের সেনাবাহিনী ছিল বিশাল। তারা ছিল রাজ্যে সেনাবাহিনী প্রধান ও প্রধান পুরােহিত। শাংদের নগরগুলােতে যােদ্ধা ও অভিজাত শ্রেণির প্রভাব ছিল অপরিসীম। তাদের অধীনে। লেখক, কেরানী, দক্ষ কারিগর ও ধাতব কাজে দক্ষ লােকেরা চাকরি করত। শাং সংস্কৃতি পরবর্তীকালে চীন, জাপান, ও দূরপ্রাচ্যের অন্যান্য অংশের সভ্যতার ওপর প্রভাব ও অবদান রেখেছে।

পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাচীনকালে পৃথিবীতে বিভিন্ন সভ্যতা বিকাশ লাভ করেছে। আর এসকল সভ্যতার মধ্যে প্রাচীন শাং সভ্যতা বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। তারা চীনা সভ্যতাকে উচ্চতর পর্যায়ে অধিষ্ঠিত করে। স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও সংস্কৃতিতে শাং যুগের রাজারা বেশ জোরালাে অবদান রেখেছেন, যা আজও বিশ্ব সভ্যতাকে নাড়া দেয়।