কোনাে একটি কৃষি অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত মােট কর্ষিত জমিতে উৎপাদিত এক বা একাধিক শস্যের পারস্পরিক বণ্টনগত গাণিতিক সম্পর্ককে শস্য সমন্বয় (Crop Combination) বলে। জে. সি. উইভার-এর মতে (1954) শস্য সমন্বয় বলতে বােঝায়কোনাে একটি অঞ্চলের কোনা একটি শস্য কতটুকু স্থান দখল করে আছে তার শতাংশ নির্ণয় করার মাধ্যমে ভূমির শ্রেণিবিভাগের পদ্ধতিকেই বলা হয় শস্য সমন্বয় বা শস্য সংযুক্তিকরণ। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ভূগােলবিদ হুইটলসে (Whittlesey)-এর মতে—কোনাে নির্দিষ্ট অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের যেসব শস্য উৎপাদিত হয় তার ভিত্তিতে অঞ্চল বিশেষে যে শস্য বিন্যাস গড়ে ওঠে তাকে বলা হয় শস্য সমন্বয়।

(১) একাধিক শস্য চাল: কোনাে একটি অঞ্চলের শস্য সমন্বয় গড়ে ওঠে একাধিক শস্য চাষের মাধ্যমে।

(২) এক বা একাধিক শস্যের প্রাধান্য: একটি অঞ্চলে বহু শস্যের চাষ করা হলেও কোথাও একটি শস্য আবার কোথাও একাধিক শস্যের প্রাধান্য লক্ষ করা যায়।

(৩) গাণিতিক পদ্ধতিতে বিশ্লেষণ : শস্য উৎপাদক অঞ্চলের পরিসংখ্যানকে গাণিতিক পদ্ধতিতে বিশ্লেষণ করা হয়।

(৪) সঠিক সীমারেখা নির্ণয় কঠিন: একটি শস্য সমন্বয় অঞ্চল অন্য একটি শস্য সমন্বয় অঞ্চলের সাথে মিশে যায় বলে সীমারেখা নির্ণয় করা বেশ কঠিন।

(৫) কৃষি অঞ্চলের গঠন: শস্য সমন্বয়ের মাধ্যমে এক-একটি কৃষি অঞ্চল গড়ে ওঠে।

(১) আধিপত্যযুক্ত শস্য নির্ণয় : কোনাে এলাকায় উৎপাদিত বিভিন্ন শস্যের মধ্যে কোন্ কোন শস্যের আধিপত্য রয়েছে তা শস্য সমন্বয়ের মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়।

(২) দৈশিক আধিপত্যের ক্রম নির্ণয় : আধিপত্যযুক্ত শস্যগুলির মধ্যে বণ্টনগত পরিমাপের যে তারতম্য থাকে তার সাহায্যে দৈশিক আধিপত্যের ক্রম কীরূপ হবে তা নির্ণয় করা হয়।

(৩) ভূমির ব্যবহারের স্বরূপ ও গুণাগুণ নির্ণয় : দৈশিক আধিপত্যের ক্রম অনুযায়ী ভূমির ব্যবহারের প্রকৃতি কী হবে তা নির্ণয় করা যায়।

(৪) চাষ-আবাদের প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা : শস্য সমন্বয়ের মাধ্যমে কোনাে একটি কৃষি অঞ্চলে চাষ-আবাদের প্রকৃতি কী প্রকৃতির হবে সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

(৫) ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রূপায়ণ : শস্য সমন্বয়ের ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে ভূমি ব্যবহার কী প্রকৃতির হবে সে সম্পর্কে পরিকল্পনা গ্রহণ ও রূপায়ণ করা যায়।