প্রশ্নঃ ‘শক্তিধর রাষ্ট্রের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের উপর আন্তর্জাতিক আইনের ভবিষ্যত নির্ভর করে”- আলোচনা কর। 
ভূমিকাঃ শান্তি চায় না এমন কোন মানুষ বা জাতি নেই। সকল জাতি ও সকল মানুষের একান্ত কাম্য হলাে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। তারপরও বিভিন্ন কারণে যুদ্ধ-বিগ্রহ আরম্ভ হয়। ইতিমধ্যে দু’টি বিশ্বযুদ্ধও অনুষ্ঠিত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয় জাতিসংঘ। প্রতিষ্ঠার পর জাতিসংঘ ঘােষণা করে যে, বিভিন্ন রাষ্ট্রের বৈধতা বা আচার আচরণের মাপকাঠি হবে আন্তর্জাতিক আইন। 


‘শক্তিধর রাষ্ট্রের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের উপর আন্তর্জাতিক আইনের ভবিষ্যত নির্ভর করে’:  
সকল মানুষ চায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু একার পক্ষে বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। বিংশ শতাব্দিতে বিশ্ববাসী দুইটি বিশ্বযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছে। সাথে সাথে বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতাও প্রত্যক্ষ করেছে। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গঠিত হয় জাতিসংঘ।

বিশ্ব নেতাদের নিরলস প্রচেষ্টায় জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়। এর অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বব্যাপী স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। জাতিসংঘের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন বাস্তবায়ন করা হয়।

বিশ্বের অনেক দেশ এখন মরণাস্ত্রের অধিকারী। এর অন্যতম একটি হলাে পারমাণবিক বােমা। এই সকল অস্ত্রকে সামনে রেখে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। যার ফলে আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা এই সকল অস্ত্র সীমিত করনের চেষ্টা চালানাে হয়। মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে হলে এই সকল অস্ত্র উৎপাদনের প্রতিযােগিতা বন্ধ করতে হবে। শক্তিধর রাষ্ট্রগুলিকে এই সকল অস্ত্র তৈরি বন্ধ করতে হবে।

বর্তমানে অনেকক্ষেত্রে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের ইচ্ছা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক আইন পরিচালিত হয়। অর্থাৎ তারা নিজেদের সুবিধা মতাে আন্তর্জাতিক আইন ব্যবহার করে। তাইতাে বলা হয় ‘শক্তিধর রাষ্ট্রের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের উপর আন্তর্জাতিক আইনের ভবিষ্যত নির্ভর করে।


উপসংহারঃ আন্তর্জাতিক আইনের বিভিন্ন বিষয় পর্যালােচনা করে বলা যায়, রাষ্ট্র হলাে আন্তর্জাতিক আইনে প্রথম বিষয়বস্তু। তবে ক্ষেত্র বিশেষ কোন ব্যক্তিকেও আন্তর্জাতিক আইনের বিষয় হিসেবে গণ্য করা যায়।