রাশিতথ্যকে মােটামুটিভাবে সহজে বােধগম্য করার জন্য যে বিশেষ লেখ-এর মাধ্যমে তা প্রকাশ করা হয়, তাকে লেখচিত্র বলে। লেখচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপনের অনেকগুলি পদ্ধতি রয়েছে। এই পদ্ধতিগুলি হল— আয়তলেখ, পরিসংখ্যা বহুভুজ, ওজাইভ, পাইচিত্র, রেখাচিত্র ইত্যাদি।
উল্লেখযােগ্য লেখচিত্র হল:
- তথ্য পরিবেশক লেখচিত্র: এই প্রকার লেখচিত্রে শুধু তথ্য পরিবেশন করা হয় যেমন— পরিসংখ্যা বহুভুজ, স্তম্ভ লেখচিত্র।
- তাৎপর্য নির্ণায়ক লেখচিত্র: এই ধরনের লেখচিত্র তথ্যের গুরুত্ব বা তাৎপর্যের প্রকাশ করে। যেমন— ওজাইড।
লেখচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপনের সুবিধা
লেখচিত্রের মাধ্যমে তথ্য উপস্থাপনের সুবিধাগুলি নীচে আলােচনা করা হল—
(১) তথ্য উপস্থাপন: লেখচিত্রের মাধ্যমে যেমন সহজে তথ্য উপস্থাপন করা যায় ঠিক তেমনি তাকে সহজে বিশ্লেষণও করা যায়।
(২) তথ্য সংক্ষেপে পরিবেশন: লেখচিত্রের মাধ্যমে তথ্যকে সংক্ষেপে পরিবেশন করা যায়।
(৩) স্কোরের তুলনা: বিভিন্ন স্কোরের মধ্যে লেখচিত্রের মাধ্যমে তুলনা করা যায়।
(৪) ত্রূটিবিচ্যুতি: স্কোরগুলিতে কোনাে ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে তা লেখচিত্রের মাধ্যমে সহজে নির্ণয় করা যায়।
(৫) জটিল স্কোররের অনুধাবন: জটিল স্কোরগুলিকে লেখচিত্রের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করলে সহজেই তা অনুধাবন করা যায়।
(৬) নিরক্ষর মানুষের দের জন্য সহজবোধ্য: নিরক্ষর মানুষের কাছেও লেখচিত্র বােধগম্য।
(৭) বিশিষ্ট্য নির্ণয়: স্কোরগুলির মধ্যে অবস্থিত বৈশিষ্ট্যগুলি সহজে নির্ণয় করা যায়।
(৮) চলকের পরিবর্তন: চলকের মানসমূহ কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে তা দ্রুত জানা যায়।
(৯) রাশিমালা প্রবণতা: রাশি তথ্যমালার কোনাে বিশেষ প্রবণতা থাকলে তা সহজেই দৃষ্টিগােচর হয়। রাজ্য বা রাষ্ট্রের উন্নতি, অবনতি সব জানা যায়।
লেখচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপনের অসুবিধা
(১) অধিক সময় : লেখচিত্র আঁকতে অনেক সময় লাগে।
(২) সব তথ্যের প্রকাশ অসম্ভব : সব তথ্যের প্রকাশ বিশেষত কোনাে বর্ণনামূলক বিষয়কে লেখচিত্রের দ্বারা প্রকাশ সম্ভব নয়।
(৩) সঠিক মান প্রকাশে ত্রূটি : লেখচিত্র কখনও সঠিক মান উপস্থাপন করতে পারে না।
(৪) দক্ষতার প্রয়ােজন : দক্ষতা না থাকলে লেখচিত্র অঙ্কন করা সম্ভব নয়।
(৫) চোখের উপর চাপ সৃষ্টি : লেখচিত্র অঙ্কন পদ্ধতি খুব সূক্ষ্ম, যে কারণে চোখের উপর চাপ সৃষ্টি হয়।
লেখচিত্র প্রস্তুতির নিয়মাবলি
লেখচিত্র প্রস্তুতির নিয়মাবলিগুলি হল—
(১) দুটি অক্ষের সাহায্যে লেখচিত্র অঙ্কন করতে হয়, একটি হল X অক্ষ, অপরটি Y অক্ষ।
(২) Xএবং Y অক্ষ যেখানে ছেদ করে তাকে বলে মূলবিন্দু যা চিহ্নিত হয়।
(৩) O বিন্দুর সঙ্গে অনুভূমিকভাবে X অক্ষ অবস্থান করে এবং উল্লম্বভাবে অবস্থান করে Y অক্ষ।
(৪) Xএবং Y অক্ষের দৈর্ঘ্যর অনুপাত 75% বা 4:3। লেখচিত্রের আকার ও আয়তন ঠিক রাখতে এই হিসেবে করা হয়, যাতে X অক্ষে যে পরিমাণ বর্গক্ষেত্র ব্যবহৃত হয়, Y অক্ষে তার 3/4 ভাগ বর্গক্ষেত্র ব্যবহৃত হয়।
(৫) অনভূমিক X অক্ষের O-এর বাম পাশে অবস্থিত অংশ ঋণাত্মক এবং ০-এর ডান পাশে X অক্ষ ধনাত্মক।
(৬) O বিন্দু বরাবর উপরের দিকে Y অংশ ধনাত্মক এবং নীচের দিকে Y অংশ ঋণাত্মক।
(৭) O বিন্দুর চারদিকে যে-কোনাে কো-অর্ডিনেটে X ও Y-এর মান বসানাের নিয়ম হল। বন্ধনীর মধ্যে প্রথম X-এর মান ও তারপর Y-এর মান হবে।
Leave a comment