লিওলেন মেসির – জীবনী  সম্পর্কে জানতে আমাদের সবারই আগ্রহ হয় কারণ মেসি হল এই প্রজন্মের শ্রেষ্ঠ ফুটবলার। তাই আমি লিওলেন মেসির – জীবনী সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি। আর যাদের লিওলেন মেসির – জীবনী  সম্পর্কে জানার আগ্রহ রয়েছে আমার পোস্টটি তাদের জন্য।

মেসি হলেন আর্জেন্টিনার একজন শ্রেষ্ঠ ফুটবলার। ২০২২ সালে তিনি বিশ্বকাপ জয় করেছেন। লিওলেন মেসির – জীবনী সম্পর্কে তাই আমাদের সবার জানতে ইচ্ছে করে। আর এই কারণে আমিলিওলেন মেসির – জীবনী সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। নিচে লিওলেন মেসির – জীবনী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো- 

লিওলেন মেসির – জীবনী

লিওনেল মেসি হলেন বর্তমানের সবচেয়ে ভালো এবং সেরা ফুটবল খেলোয়াড়। লিওলেন মেসির পুরো নাম হল লিওলেন আন্দ্রেস লিও মেসি। ১৯৮৭ সালের ২৪ শে জুন নিউলেন মেসি আর্জেন্টিনার রোজারি ওতে জন্মগ্রহণ করেন। মেসি একজন পেশাদার ফুটবল খেলোয়ার। লিওলেন মেসিকে বলা হয় রেকর্ডের বরপুত্র। মেসি ফরাসি পেশাদার লিগের শীর্ষ স্তর লিগ ১ এর ক্লাব পারিসাঁ জেরমাঁ এবং একজন আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড় হিসেবে আর্জেন্টিনার জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় হয়ে খেলেন।

তিনি বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়ক হিসেবে। ২০২১ সালের ৫ ই আগস্ট তারিখে বার্সেলোনা মেসির ক্লাবের সাথে চুক্তি নবায়ন করবে না বলে ঘোষণা করে। ক্লাবটি মেসির চলে যাওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে স্প্যানিশ লিগার নিয়ম কানুন দ্বারা সৃষ্ট আর্থিক এবং কাঠামো গত বাধা।মেসি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত।

তিনি ভ্যালেন্ট ডিয়ার বিজিতা হিসেবে সর্বাধিক খেলোয়াড় আর তাকে বলা হয় ফুটবলের দেবতা। তিনি তার পায়ের জাদু দিয়ে মাঠ মাতিয়ে রাখেন কারণ তিনি একজন শৈল্পিক খেলোয়াড়। আর তার খেলা দেখে দর্শকদের মনে আনন্দের উল্লাস বয়ে যায়। মেসি একজন বিশ্ব মাতানো খেলোয়াড়। লিওলেন মেসির ক্লাব এবং জাতীয় দলের আক্রমণ ভাগ সামলে রাখেন এবং তিনি একজন আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়। তিনি বর্তমানে ফরাসি ক্লাব প্যারিস সাইন্ট জিমারে খেলে থাকেন।

ছোটবেলায় মেসি আক্রান্ত হন গ্রোথ হরমোন নামক জটিলতায়। সেসময় তার পরিবারের পক্ষে তার চিকিৎসার খরচ বহন করা সম্ভব ছিল না। সে সময় বার্সেলোনা ক্লাব তার পাশে এসে দাঁড়াই এবং তার চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করে। মেসি বার্সেলোনা ক্লাবের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন মাত্র ১৩ বছর বয়সে এরপর তিনি পাড়ি জমান  স্পেনে।

লিওলেন মেসির জন্ম

১৮৮৭ সালের ২৪ শে জুন লিওলেন মেসি জন্মগ্রহণ করেন আর্জেন্টিনার রোজারিওতে। বর্তমানে মেসির বয়স হল ৩৪ বছর।

লিওলেন মেসির মা

লিওনেল মেসির মায়ের নাম হল সেলিয়া মারিয়া কুস্তিত্তিনি। মেসির মা পেশায় একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। তিনি এই কাজ করতেন খন্ডকালীন সময়ের জন্য।

মেসির বাবা

আর্জেন্টিনায় জন্মগ্রহণ করা মেসির বাবার নাম হল হোর্হো হোরাসিও মেসি।  লিওনেল মেসির বাবা হোর্হো  হোরাসিও মেসি কাজ করতেন একটি ইস্পাত কারখানায়। মেসি দুই বড় ভাই ছিলেন এবং একজন ছোট বোন রয়েছেন মেসির বড় দুই ভাইয়ের নাম হলো রাদ্রগো এবং মাতিয়াস। আর মেসির বোনের নাম হল মারিয়াসোল।

লিওলেন মেসির উচ্চতা

লিওনেল মেসির উচ্চতা হল ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি বা ১.৭০ মিটার।

মেসির পৈতৃক  আদি নিবাস

লিওলেন মেসির আদি পৈতৃক নিবাস হলো ইতালির আকোনা শহরে। তবে মেসির জন্ম আর্জেন্টিনা রোজারিতে।

লিওলেন মেসির ব্যক্তিগত জীবন

লিওলেন মেসির আন্তোনেল্লা রোকুজ্জা নামের বান্ধবী ছিল। তার সাথে মেসির বহুদিন ধরে সম্পর্ক ছিল। মেসির আন্তোনেল্লা রোকুজ্জার সাথে বিয়ে হয় ২০১৭ সালে। তবে বিয়ের পূর্বে তাদের দুটি সন্তান ছিল। সন্তানদের মধ্যে একজন হল থিয়াগো। ২০১২ সালে নভেম্বর মাসের ২ তারিখে থিয়াগো জন্মগ্রহণ করে। মেসির অপর সন্তানের নাম মাত্তেও। মাত্তেও ২০১৫ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করে। সন্তান তাদের বিয়ের পূর্বেই জন্মগ্রহণ করে।

আন্তোনেল্লা রোকুজ্জা ছিল মেসির প্রিয় বন্ধু ও সহকর্মী ফুটবল খেলোয়াড় লুকাস স্কাগলিয়া এর চাচাতো বোন।২০১৭ সালে মেসি এবং আন্তোনেল্লা রোকুজ্জার বিয়ের পর ২০১৮ সালে তাদের আরেকটি সন্তান জন্মগ্রহণ করে এই সন্তানের নাম সিত্তরো। মেসি একজন সেরা ফুটবল খেলোয়াড় হওয়া সত্বেও তার জীবনধারা বিনয়ী এবং মহান। মেসি তার নিজস্ব শহর অর্থাৎ তার জন্মস্থান রোজারি ওর সাথে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করেন।

 

ফুটবল খেলোয়াড় মেসি কাজ করতেন ইউনিসেফ এর একজন রাষ্ট্রদূত হিসাবে এবং তিনি একটি নিজস্ব দাতব্য ফাউন্ডেশন চালান যা শিশুদের খেলাধুলা ও শিক্ষা গ্রহণের সহায়তা ও অনুপ্রাণিত করে। মেসি হরমোন ডেফিসিয়েন্সি জনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছিলেন যার চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাই মেসি তার আর্জেন্টিনার হাসপাতালে এই হরমোনের চিকিৎসার জন্য অর্থ প্রদান করে থাকেন।

ফুটবল প্রেমী মেসি

লিওনেল মেসির পরিবার যদিও আর্থিকভাবে অসল ছিল তবুও তার পিতা তাদের ভবিষ্যতের জন্য উজ্জ্বল স্বপ্ন দেখাতেন। ফুটবলকে মেসি ছোট বেলা থেকেই ভালবাসতে শুরু করেন। মাত্র ১৩ বছর বয়স থেকেই তিনি ফুটবলের সাথে  অতপ্রত ভাবে জড়িয়ে পড়েন। তিনি অল্প বয়সে ফুটবল খেলতে শুরু করেন। তিনি ফুটবলের একজন খুদে জাদুকর ছিলেন। মেসি বাল্যকাল থেকেই ছন্দময় ও শৈল্পিক ফুটবল খেলতেন। লিওনেল মেসির প্রতিভা খুব শীঘ্রই সবার দৃষ্টি কাড়ে এবং সবার কাছে তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

নিউ অয়েলের ওল্ড বয়েজ মেসি

লিওলেন মেসির বাবা-মা সহ তার দাদি মা ও তাকে উৎসাহিত করতেন ফুটবল খেলার জন্য। তাই তিনি মনোযোগ দেন ফুটবল খেলায়। ১৯৯৫ সালে মেসি  প্র্যাকটিস করতেন নিউ ওল্ড বয়েস নামক একটি ক্লাবে। তখন মেসির বয়স ছিল মাত্র নয় বছর। মেসি মাত্র ৯ বছর বয়সেই মেসি ফুটবলকে এতটাই আয়ত্ত করেছিলেন যে তার পা থেকে ফুটবল নেওয়া অনেকটা কঠিন ছিল।

১০ মিনিট বা তার অধিক সময় ধরে মেসি তার পায়ে বল রাখতেন যার কারণে তার প্রতিপক্ষের অবস্থা খারাপ হয়ে যেত। এটি তখনকার সময়ের একটি বড় বিষ্ময় ছিল। লিওনেল মেসিকে তার ভবিষ্যত হাতছানি দিয়ে ডাকছিল। কিন্তু হঠাৎ করে মেসি হরমোন ডেফিশিয়েন্স নামক হরমোন জনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে যান। আর এই সমস্যা এতটাই ভয়ংকর যে সঠিকভাবে চিকিৎসা করাতে না পারলে তার ফুটবল খেলার স্বপ্ন কেবল স্বপ্নই থেকে যাবে।

 

কারণ এই হরমোন জনিত সমস্যা হলো শারীরিক বিকাশে বড় একটি বাধা। কিন্তু এই চিকিৎসা ছিল বড় একটি বাধা। কারণ এই চিকিৎসা ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আর মেসির এই বাধা সমস্যা ধরা পড়ে মাত্র ১১ বছর বয়সে যার কারণে মাত্র ১১ বছর বয়সে তার পরিবার ও তার ক্লাবের মাথায় বাজ ভেঙ্গে পড়ে। তার চিকিৎসার খরচ তার ক্লাব বার্সেলোনা গ্রহণ করে।

আর্জেন্টিনার হয়ে মেসির গোল সংখ্যা

২০০৫ সালের ১৭ই আগস্ট ১৮ বছর বয়সে লিওলেন মেসির জাতীয় দলে হাঙ্গেরির বিপক্ষে অভিষেক হয়। আর্জেন্টিনার হয়ে মেসির ১৩৮ টি ম্যাচে ৭০ গোল রয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত মেসির ৮৫৫টি ম্যাচে ৬৯৬ টি গোল করেছেন। লিওনেল মেসি ১৫২ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৯৮ গোল করেছেন আর এই গোল তাকে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা বানিয়েছে।

২০২২ সালে বিশ্বকাপে লিওলেন মেসি সাত ৭টি গোল করেছেন আর্জেন্টিনার পক্ষ থেকে। তিনি হলেন নিজ দেশের সর্বোচ্চ গোলদাতা। লিওলেন মেসি পাঁচ ৫টি ফিফা কাপ খেলেছেন ২০০৬, ২০১০, ২০১৪-২০১৮ এবং ২০২২ সালে। মেসি ২০২২ সালের বিশ্বকাপে গোল করেছেন ৭ টি। বিভিন্ন বিশ্বকাপে অর্থাৎ পাঁচ ৫টি বিশ্বকাপে তিনি গোল করেছেন মোট তেরো ১৩ টি এবং লিওলেন মেসি আর্জেন্টিনার পক্ষে সর্বোচ্চ গোলদাতা।

ন্যাপকিন পেপারে প্রথম চুক্তি স্বাক্ষর

মাত্র ১১ বছর বয়সে মেসি হরমোন জনিত সমস্যায় আক্রান্ত হলে তার জীবন প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তার এমন পরিস্থিতি হয়েছিল যে হয়তো হারিয়ে যাবে এই প্রতিভাবান খেলোয়াড় কিন্তু সেই সময় বার্সেলোনার ম্যানেজার ছিলেন কার্লোস রেক্সন। তিনি মেসির পাশে ত্রাতা হয়ে দাঁড়ান। বার্সেলোনা রেক্সন বিস্মৃত হন মেসির প্রতিভা এবং ফুটবল মেধা দেখে। তিনি মেসিকে দেখে অর্থাৎ মেসির খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন।

তিনি মেসির সাথে চুক্তি করতে চান কিন্তু তার সাথে কোন চুক্তিপত্র ছিল না বা স্বাক্ষর করার মত কোন কাগজ-কলমও ছিল না। আর কাগজ বা কোন চুক্তিপত্র না থাকায় কার্লোস রেক্সন মেসির বাবার সাথে একটি ন্যাপকিন পেপারে তার বাবার সাথে স্বাক্ষর করেন। আর এই চুক্তি ছিল বার্সেলোনা মেসির যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করবে। এরপর থেকে শুরু হয় মেসির জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

বার্সেলোনায় লিওলেন মেসি

২০০০ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত লিওলেন মেসি খেলেছেন

    • কাদেতে এ দলে
    • ইনফান্তিন বি
    • কাদেতে বি

মেসি বার্সেলোনার কাদেতে এ দলে ৩০ খেলায় ৩৭ টি গোল করেন। মেসির বয়স যখন ১৭ বছর এবং বার্সেলোনা চুক্তির বয়স যখন ১১৪ দিন তখন বার্সেলোনার অভিষেক হয়। এবং মেসির অভিষেক ম্যাচটি ছিল ইস্পানিওলের  বিপক্ষে। আর সে সময় মেসি ছিলেন বার্সেলোনার তৃতীয় কনিষ্ঠতম খেলোয়াড়। ২০০৪ সালের ১৬ই অক্টোবর মেসির প্রথম অভিষেক হয়।

২০০৫ সালের পয়লা মে বার্সেলোনার সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে লা লিগার গোল করার রেকর্ড গড়েন।এছাড়াও  লিওনেল মেসি একটি রেকর্ড গড়েন আলকাবেতে বালো স্পাইয়ের  বিপক্ষে। আর এই রেকর্ড গড়ার সময় মেসির বয়স ছিল ১৭ বছর ১০ মাস সাত দিন।

মেসির এওয়ার্ডস

লিওলেন মেসির জীবনে রয়েছে অনেক সাফল্যের গল্প তিনি তার ব্যক্তিগত জীবনে অনেক সাফল্য অর্জন করেছেন মেসির জীবনের সাফল্যগুলো হলো

ব্যালন ডি আর

 

ব্যালন ডি আর হল ফিফার সবচেয়ে বড় একক পুরস্কার। আর এই পুরস্কার শুরু হয় ১৯৫৬ সাল থেকে। লিওলেন মেসি তার জীবনে ব্যালন ডি আর জিতেছেন মোট ছয় ৬বার। মেসি ২০০৯-২০১০- ২০১১-২০১২ সাল  পর্যন্ত নির্বাচিত হন ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড় হিসাবে। ২০০৯ সালে ফিফা ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার লাভ করেন। এছাড়াও আরো দুইবার অর্থাৎ ২০১৫ ও ২০১৯ লাভ করেন। ২০১৯ সালের সেরা পুরস্কার লাভ করেন।

 

ইউরোপীয় সোনার জুতো

ইউরোপীয় সোনার জুতো লাভ করেন লিওলেন মেসি। ২০০৯-১০, ২০১১- ১২ ২০১২-১৩, ২০১৬-১৭,২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ মৌসুমে তিনি সোনার জুতো লাভ করেন।

পি চিচি লা লিগা

 

২০০৯-১০, ২০১১-১২, ২০১২-১৩, ২০১৬-১৭,-২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০,২০২১ সালে পি চিচি লা লিগা লাভ করেন।

এমভিপি লা লিগা

 

২০০৮-৯,-২০০৯- ১০, ২০১০-১১- ২০১১-১২, ২০১২-১৩, ২০১৪-১৫, ২০১৬ ২০১৭, ২০১৭-১৮/২০১৮-১৯ সালে এমভিপি লা লিগা লাভ করেন।

চ্যাম্পিয়ন সর্বোচ্চ গোলদাতা

২০০৮-৯,-২০০৯- ১০, ২০১০-১১,২০১১-১২,২০১৪-১৫-২০১৮-১৯

মেসির আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার

গোল্ডেন বয় – ২০০৫

ফিফপ্রো – ২০০৬

ব্রাভো পুরস্কার – ২০০৭

বর্ষসেরা ফুটবলার ২০১০-১১,২০১৪-১৫

বিশ্বকাপ সোনার বল – ২০১৪

ওঞ্জ ডি আর – ২০০৯- ২০১১-২০১২-২০১৮

মেসির দা মেশন অফ ৮৭ অর্জন

১৯৯৫ সালে মেসি রোজারিও ভিত্তিক ক্লাবে যোগ দেন এবং মেসি যে ক্লাবে যোগ দেন তার নাম ছিল নিউয়েলস ওল্ড বয়েজ। আরেকটি স্থানীয় যুব শক্তি ক্লাব ও মেসি একই সাথে যোগ দেন যার কারণে ক্লাবটি পরবর্তী চার বছর মাত্র একটি খেলায় পরাজিত হয়েছিল। এবং স্থানীয়ভাবে মেসি পরিচিত হয়ে ওঠেন দা মেশন অফ ৮৭ নামে।

এই সময় যারা পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন তাদের সবাইকে জন্মসাল যোগ করে ডাকা হতো। আর মেসির জন্ম গ্রহণ করেন ১৯৮৭ সালে তাই মেসিকে দা মেশন অফ ৮৭ নামে ডাকা হতো। আর এভাবেই তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন দা মেশন  অফ ৮৭ নামে।

লিওনেল মেসির ক্যারিয়ার

২০০০ সালে লিওনেল মেসির ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল তিনি যখন জুনিয়র সিস্টেম র‍্যাস্কের হয়ে খেলতেন। তিনি পাঁচ দলের বিভিন্ন খেলার একসঙ্গে খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন এবং তিনি অল্প দিনের মধ্যেই হয়ে ওঠেন। ২০০৪-৫ মৌসুমে যখন তিনি লিগে গোল করার জন্য সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হয়ে ওঠে তখন তিনি তার উপস্থিতি দেখান। ২০০৬ সালের মে সে যারা ডাবল জিতেছেন সেই দলের অংশ নিয়েছিলেন যেটি চ্যাম্পিয়ান্স লিগ এবং লা লিগা স্প্যানিশ লীগ উভয়ে জিতেছিল।

পরবর্তী মৌসুমে অর্থাৎ ২০০৬-৭ সালে লিওনেল মেসির বয়স যখন মাত্র ২০ বছর তখন তিনি স্ট্রাইকার হয়ে ওঠেন এবং তিনি বার্সেলোনা দলের অপরিহার্য অং হয়ে ওঠেন এবং সেই সময় তিনি মানুষের প্রথম পছন্দের হয়ে ওঠেন। তিনি ২৬ টি লিগ খেলেছেন এবং এতে গোল করেছেন ১৪ টি। ২০০৯ – ১০ সালে মেসি এই সমস্ত প্রতিযোগিতা করেন সেখানে তিনি গোল করেছেন ৪৭ টি। আর মেসির গোল ছিল বার্সেলোনার হয়ে রোনালদোর গোলের সমান।

 

মৌসুম যতো এগিয়েছে মেসি তত রেকর্ড ভেঙেছেন এবং নতুন রেকর্ড গড়েছেন। ২০১২ সালে লিওনেল মেসি সর্বাধিক গোল করার জন্য ভেঙেছিলেন বিশ্ব রেকর্ড। ২০১২ সালে মেসির গোলের সংখ্যা ছিল ৯১ টি। সেই সময় জার্মানির গ্রেড মুলারের ছিল ৮৫ টি এবং পেলের ছিল ৭৫ টি গোল। মেসি এদের রেকর্ড ভেঙে দেন এবং গোল করেন ৯১ টি। ২০১২ সালের শেষের দিকে মেসিকে রাশিয়ার এক অজানা ক্লাব খেলার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিল। মেসিকে ২০ মিলিয়ন ইউরো বেতন দিতে চেয়েছিলেন যা মেসিকে করে তুলে বিশ্বের দামি খেলোয়ার।

কিন্তু মেসি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন কারণ তার ধারণা ছিল এখানে খেললে পরবর্তীতে মেসির রাশিয়া ভ্রমণের সমস্যা হতে পারে। ২০১৮ সালে মেসি বার্সেলোনার খেলার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার কথা বললে তিনি জানান যে বার্সেলোনার সাথে তার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। লিওলেন মেসি ৩৫৯ টি খেলায় গোল করেন ২৯২ টি এবং ৭৬টি আন্তর্জাতিক খেলায় গোল করেন ৩১ টি।

বিশ্বের  সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন 

স্পেনীয় সংবাদপত্র মার্কা ২০০৭ সালে অনলাইন সংস্করণে ভোটের আয়োজন করেন বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচনের আর সেখানে মেসি ভোট পান ৭৭ শতাংশ এবং তিনি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। সেই বছরে বার্সেলোনা ভিত্তিক সংবাদপত্র ডেইলি স্পোর্ত এবং এল মুন্দো দেপোর্তিভো দাবি জানান মেসিকে ব্যালন ডি অর দেওয়ার জন্য।

মেসিকে বর্তমান সময়ে সেরা ফুটবলার হিসাবে ব্যক্ত করেন ফ্রান্সিসকো তোত্তির মত ফুটবল ব্যক্তিত্ব। ২০০৭ সালে ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার এ মেসি দ্বিতীয় হন এবং ব্যালন ডি অর পুরস্কারে মেসি তৃতীয় হন।

মেসির ১০ নম্বর জার্সি অর্জন

মেসি ১০ নম্বর জার্সি পেয়েছেন রোনালদিনহোর প্রস্থানের পরে। ২০০৮ সালে বর্ষসেরা ফুটবলের পুরস্কারে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন ৬৭৮ পয়েন্ট নিয়ে। ২০০৯ সালে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে কোপা দলের একটি খেলায় মেসি প্রথম হ্যাটট্রিক করেন। এই খেলায় বার্সেলোনা টিমের ৩-১ গোলের ব্যবধানে জয় লাভ করে।

২০০৯ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি মেসি রেসিং শান্তেন্দার খেলায় বিপক্ষে দ্বিতীয় অর্ধে বদলি হিসাবে মাঠে নেমে দুইটি গোল করেন। আর ওই খেলায় ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেও বার্সেলোনা মেসির কর্তৃত্বে ১-২ ব্যবধানে জয়লাভ করেন।

শেষ কথা

লিওলেন মেসি আর্জেন্টিনার একজন বিখ্যাত ফুটবলার। তিনি তার বাম পায়ের জাদুতে গোল করেছেন ২০২২ বিশ্বকাপ সহ অনেক বিশ্বকাপ এবং অন্যান্য খেলাতে। তিনি জয় করেছেন কোপা আমেরিকা। এই বিখ্যাত খেলোয়াড় মাত্র ১১ বছর বয়সে হরমোন জনিত সমস্যায় আক্রান্ত হন এবং তার খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে কিন্তু বার্সেলোনা তার দায়িত্ব গ্রহণ করলে তিনি আবার খেলার জগতে ফিরে আসেন।

এই অলরাউন্ডার খেলোয়াড় ২০২২ সালের বিশ্বকাপে গোল করেছেন সাতটি এবং নিজ দেশের তিনি সর্বোচ্চ গোলদাতা। লিওনেল মেসি ১০ মিনিট বা তার অধিক সময় তার পায়ে বল রাখতে পারেন যার কারণে তার প্রতিপক্ষের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। মেসি মাত্র পাঁচ বছর বয়সে ফুটবল খেলার জগতে আসেন এবং তার জীবনের প্রথম কোচ  ছিলেন তার বাবা  হোর্হে। আমরা এই বীর খেলোয়াড়ের সাফল্য কামনা করি।