উত্তর: বাউলরা জাতি ও সম্প্রদায়ের ভেদাভেদ বিরোধী, সনাতন শাস্ত্র-আচার ও প্রচন্তি সমাজ-ধর্মের বিরুদ্ধে তাঁদের বিদ্রোহ। সম্প্রদায় ধর্মের সংকীর্ণ প্রাচীর ভেঙে তাঁরা পেয়েছেন এক উদার মিলন-ময়দানের সন্ধান। বাউল সাধক কবি লালন শাহের সাথেও সাম্প্রদায়িক ধর্মের কোনো যোগ নেই। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির ভিতর দিয়ে জেনেছিলেন জাত – ধর্মের অসারতা। তাই তিনি তাঁর জাত-ধর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হয়ে বলেছেন যে জাতের স্বরূপ সম্বন্ধে তিনি অবগত নন। যদি সুন্নত দিলে মুসলমান হিসেবে পরিচিত হওয়া যায়; তবে নারী লোকদের ক্ষেত্রে কি বিধান। বামনকে যদি পৈতা দিয়ে চেনা যায় তবে বামনীকে কিভাবে চেনা যাবে। কারো গলায় মালা, কারো তস্বি। তাতে জাত ভিন্ন হয়ে যায় না। জন্মগ্রহণ কিংবা মৃত্যুর সময়ে কারো গায়ে জাতের চিহ্ন থাকে না। জগৎ জুড়ে সারা জাতের গৌরব করে কবি সেই জাতি-ধর্মের খোলস দূরে সরিয়ে দেওয়ার সাধনা করেছেন।

বাউল পদাবলীতে সম্প্রদায় ধর্মের অযৌক্তিকতা ও অসারতার কথা ঘোষিত হয়েছে।