“লাখ লাখ যুগ হিয়ে হিয়ে লাখলু

তব হিয়া জুড়ন না গেল ।।”

উত্তর: নির্বাচিত অংশটুকু ‘মধ্যযুগের বাংলা গীতিকবিতা’ সংকলনের বিদ্যাপতির ‘বিরহ’ বিষয়ক পদ থেকে গৃহীত। কৃষ্ণকে দেখে দেখেও যে রাধার অন্তরাত্মার ক্ষুধা নিবারণ হয় না- এবিষয়টিকেই বৈষ্ণব কবি তুলে ধরেছেন।

রাধা কৃষ্ণের প্রেমের পথে বারবার বাধা এসেছে- এসেছে অসীম যন্ত্রণা-বেদনা। রাধা পূর্বেই বুঝতে পেরেছিল কৃষ্ণকে ভালোবাসার অর্থই বিরহ-বেদনাকে চিরসাথী করা। শ্যামের সাথে প্রেম অর্থ বিরহ, বেদনা। বিরহের মধ্যেই বৈষ্ণবের প্রেমের সার্থকতা। বৈষ্ণব প্রেম জীবাত্মা ও পরমাত্মার প্রেম, এ প্রেম চির বিরহে সম্পন্ন হয়। পরম সান্নিধ্যেও সে বিরহ যায় না। কারণ বিচ্ছেদের ভয়, এ প্রেম মূলত উপলব্ধি জাত। তাই মধুরাত্রি মিলনে কাটিয়েছে, কিন্তু কোথা তৃপ্তি-তৃপ্তি কোথা! রাধা-কৃষ্ণ লক্ষ লক্ষ বছর ধরে হিয়ার সাথে হিয়া মিলিয়ে হৃদয়ের যে দাহ তা নেভাতে পারেনি। কেননা এ প্রেম লৌকিক নয়। এ প্রেম অন্তরের সাথে মিলনের চিরন্তন প্রত্যাশা। বিদ্যাপতি রাধা ও কৃষ্ণের লীলা খেলায় নব নব রসোল্লাসের পরিণাম বলেছেন।