প্রশ্নঃ রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান কী? সংক্ষেপে আলোচনা কর।

উত্তরঃ মধ্যযুগের (পনের শতক থেকে আঠার শতক) বাংলা কাব্যের যে ধারায় মুসলমান কবি কর্তৃক প্রেম সৌন্দর্য, মানব হৃদয়বৃত্তি, চিত্তবিলাস ও মানস সম্ভোগের লীলা প্রকাশিত হয়েছে, সেই অনন্য ধারাই রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান। মুসলমান কবিদের রোমান্স কাব্যে ধর্মের কথা নেই বললেই চলে। উপাখ্যানগুলোতে ইসলামের গৌরব ও মাহাত্ম্য প্রচার করলেও কোথাও দেবত্ব আরোপিত হয়নি— মানব চরিত্রের কথাই বলা হয়েছে।

প্রণয়োপাখ্যানে পৌরাণিক ঐতিহাসিক লৌকিক রাজ-রাজড়ার কাহিনী থাকলেও সেখানে প্রধান আবেদন মানবপ্রেম। এগুলোতে ধর্ম নেই, জীবন আছে। সুখ-দুঃখ, বিরহ-মিলনপূর্ণ মানব জীবনের কথা লৌকিক ও অলৌকিক উপাদানের সাথে মিশ্রিত হয়ে আনন্দ রসের নতুন ভুবন রচনা করেছে। কাব্যগুলোর বিষয়বস্তু মৌলিক নয়। বাংলার মুসলমান কবিরা ভারত ও পারস্যের সুফী কবিদের কাব্যের অনুবাদ করে এ ধারাটি গড়ে তুলেছে। তবে অনুবাদগুলোতে বিদেশী গল্পের অস্থিতে বাংলার রক্ত মাংস সংযোজিত হয়েছে, তাছাড়া সুফীতত্ত্ব, রূপক ও আধ্যাত্মিকতার স্থলে লৌকিক মানবপ্রেমের সংযোজন ঘটেছে।