প্রশ্নঃ রুশাের প্রকৃতির রাজ্যের মানব প্রকৃতি ব্যাখ্যা কর।

অথবা, রুশাের প্রকৃতির রাজ্যের মানব প্রকৃতি আলােচনা কর।

ভূমিকাঃ বিখ্যাত দার্শনিক জ্যাঁ জ্যাঁক রুশো ১৯১২ সালে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার বিখ্যাত ‘The Social Contract’ গ্রন্থে মানব প্রকৃতি সম্পর্কে আলােচনা করেছেন। মানব প্রকৃতি বর্ণনার মধ্যেই রুশাের মতবাদের সূত্রপাত ঘটে। মানব চরিত্র সম্পর্কে রুশাের ধারণা ছিল অত্যন্ত উঁচু। রুশাের মতে, প্রকৃতির রাজ্যে মানুষের জীবন ছিল সৎ,সুন্দর, স্বাধীন ও প্রীতিপূর্ণ।

রুশাের প্রকৃতির রাজ্যে মানব প্রকৃতিঃ রুশাের প্রকৃতির রাজ্যে মানব প্রকৃতি সম্পর্কে বলা হয়েছে পারস্পরিক বন্ধুত্ব, সহনশীলতা ও সহযােগিতা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। প্রকৃতির রাজ্যে মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করত এবং পরমপ্রীতি ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে তারা জীবন কাটাত। সভ্যতার কোনাে ক্লেদ তাকে স্পর্শ করেনি। সুতরাং প্রকতির রাজ্যে মানুষ ছিল সুখী, স্বাধীন, আত্মকেন্দ্রিক ও স্বয়ংসম্পূর্ণ। মানুষের আচরণের নিয়ন্তা ছিল নিজের স্বার্থরক্ষা ও অন্যের প্রতি মমত্ববােধ। যুক্তির দ্বারা আদিম মানুষ পরিচালিত হওয়ার যুক্তিকে তিনি পরিপূর্ণরূপে অগ্রাহ্য করেন। গ্রোসিয়াস, হস, লক প্রমুখ মনীষীগণ আদিম মানুষের মধ্যে যে যুক্তির প্রাধান্য কথা উল্লেখ করেন, রুশাে তার ওপর গুরুত্ব আরােপ করেননি। রুশাে এবং তার অনুসারীগণ প্রকৃতিবাদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরাট রাজনৈতিক সম্ভাবনার সন্ধান খুঁজে পান।

সহজ-সরল মানব প্রকৃতিঃ প্রকৃতির রাজ্যে মানুষের মধ্যে হিংসা, বিদ্বেষ ও প্রতিশোধ স্পৃহা ছিল না। তারা এতই সহজ সরল ছিল যে, কেউ কারও বিরুদ্ধে আক্রমণ চালাত না।

পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সাম্য মৈত্রী ও ভ্রাতত্বের বন্ধনে আবদ্ধ প্রকৃতির রাজ্যে মানব প্রকৃতি ছিল সাম্য, মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ। তারা একে অপরের বিপদে নিজের জীবন বাজি রেখে সহযােগিতা করত। প্রকৃতির মানুষ নিজেকে অন্যান্য ব্যক্তির সাথে একাত্ম করে নিত।