প্রশ্নঃ রিসিভার কোন ব্যক্তি? কখন রিসিভার নিযুক্ত করা হয়? রিসিভারের রক্ষণাবেক্ষণ হতে কি কি কারণে সম্পত্তি মুক্ত করা যায় এবং কখন ও কিভাবে রিসিভারের নিযুক্তি বাতিল করা যায়?
Who is a Receiver? When is a Receiver? appointed? Under what ground property may be released from the custody of the Receiver? How and when a Receiver is discharged?
রিসিভারঃ রিসিভার বা তত্ত্বাবধায়ক হচ্ছে আদালত কর্তৃক নিযুক্ত একজন কর্মকর্তা যিনি মোকদ্দমা চলাকালীন সময়ে বিরোধীয় সম্পত্তির তত্ত্বাবধান করেন। রিসিভার নিয়োগ আদালতের ইচ্ছাধীন ক্ষমতা বা সুবিবেচনার উপর নির্ভরশীল। তবে নিয়োগের সময় যথাসম্ভব বিচার বিভাগীয় মূলনীতি ও প্রচলিত আইনের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা হয়।
রিসিভার নিয়োগঃ দেওয়ানী কার্যবিধির ৫১ ধারা অনুসারে আদালত সংগত মনে করলে ডিক্রীর আগে বা পরে যে কোন সময়ে রিসিভার নিয়োগ করতে পারেন।
এছাড়া ৪০ নম্বর আদেশের ১ নম্বর বিধিতে বলা হয়েছে যে, সঙ্গত বা সুবিধাজনক মনে করলে আদালত একটি আদেশ দিয়ে নিম্নবর্ণিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনঃ-
(ক) ডিক্রীর পূর্বে বা পরে কোন সম্পত্তির জন্য তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ,
(খ) সম্পত্তির দখল বা জিম্মাদারী হতে কোন ব্যক্তিকে অপসারণ,
(গ) উক্ত সম্পত্তি রিসিভারের দখল, জিম্মাদারী বা ব্যবস্থাপনায় অর্পণ, এবং
(ঘ) রিসিভারকে সম্পত্তি প্রসঙ্গে, মামলা দায়ের করা ও মামলার জবাব দেয়া, সম্পত্তিটি হস্তগত করা, ব্যবস্থাপনা করা, এর সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করা, খাজনা ও মুনাফা আদায় করা এবং উক্ত খাজনা ও মুনাফা বাবদ প্রাপ্ত অর্থ যথাবিহিত ব্যয় ও বিলি বণ্টন করার ব্যাপারে সম্পত্তির মালিকের অনুরূপ ক্ষমতা অথবা আদালত যেরূপ উপযুক্ত মনে করেন সেরূপ ক্ষমতা অৰ্পন।
এভাবে আদালত ‘ডিক্রী প্রাপক’ এবং ‘দেনাদার’ এর স্বার্থে একজন রিসিভার নিয়োগ করতে পারেন।
রিসিভারের রক্ষণাবেক্ষণ হতে কি কি কারণে সম্পত্তি মুক্ত করা যায়ঃ রিসিভারের রক্ষণাবেক্ষন হতে যে সকল কারণে সম্পত্তি মুক্ত করা যায় তা দেওয়ানী কার্যবিধির ৪০ নম্বর আদেশের ১(২) নম্বর বিধি এবং ৪ নম্বর বিধিতে সুস্পস্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
১(২) নম্বর বিধিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তিকে সম্পত্তির দখল এবং জিম্মাদারী হতে অপসারণের ব্যাপারে মামলার কোন একটি পক্ষের অধিকার না থাকলে আদালত ও অত্র বিধিবলে অনুরূপ ব্যক্তিকে অপসারণের ক্ষমতা লাভ করবেন না।
৪ নম্বর বিধিতে বলা হয়েছে যে, রিসিভার যদি—
(ক) সম্পত্তি বাবদ প্রাপ্ত আয়ের যথাযথ হিসাব দানের জন্য আদালত কর্তৃক নির্ধারিত জামানত (যদি থাকে) দাখিল;
(খ) আদালত কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে এবং নির্দিষ্ট সময়ে হিসাব দাখিল;
(গ) আদালতের নির্দেশ মোতাবেক তার নিকট হতে পাওনা টাকা পরিশোধ; এবং
(ঘ) স্বেচ্ছাকৃত ত্রুটি অথবা গুরুতর অবহেলার দরুন সম্পত্তির কোন ক্ষতি সাধিত হলে তজ্জন্য রিসিভারকেই দায়ী হতে হবে।
উল্লিখিত কারণে আদালত রিসিভারের সম্পত্তি ক্রোক করার নির্দেশ দিতে পারবেন। উক্ত সম্পত্তি বিক্রি করতে পারবেন এবং বিক্রিলব্ধ অর্থ দ্বারা উক্ত পাওনা পরিশোধ বা ক্ষতিপূরণের পর অবশিষ্ট টাকা (যদি থাকে) রিসিভারকে প্রদান করবেন। এভাবে রিসিভারের রক্ষণাবেক্ষণ হতে সম্পত্তি মুক্ত করা যায়৷
কখন এবং কিভাবে রিসিভারের নিযুক্তি বাতিল করা যায়ঃ নিম্নলিখিত পরিস্থিতিতে রিসিভারের নিযুক্তি বাতিল করা যায়ঃ-
১. যেক্ষেত্রে রিসিভার নিয়োগের মেয়াদ থাকে মামলার রায় পর্যন্ত সেক্ষেত্রে আদালত কর্তৃক রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই রিসিভারের নিযুক্তি বাতিল হয়ে যায়৷
২. রিসিভারের দায়িত্বের অবসান হওয়া মাত্রই তার নিযুক্তিকালের পরিসমাপ্তি ঘটবে।
৩. মামলার পক্ষসমুহের মধ্যে আপোস রফা বা অন্যভাবে মামলাটির চূড়ান্ত নিস্পত্তির পর রিসিভারের কাজের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং তার নিযুক্তি বাতিল হয়ে যাবে।
Leave a comment