রাসায়নিক সমীকরণঃ 

একটি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় যা ঘটে, তা সংশ্লিষ্ট বস্তুসমূহের সংকেত ও অন্যান্য সংকেতের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশের পদ্ধতিকে ঐ বিক্রিয়ার রাসায়নিক সমীকরণ বা সংক্ষেপে সমীকরণ বলা হয়।                 

যেমনঃ জিংক(Zn) ও কপার সালফেট(CuSO₄)   বিক্রিয়া করে জিংক সালফেট(ZnSO₄) ও কপার (Cu) উৎপন্ন করে। এ বিক্রিয়ার সমীকরণ হচ্ছে-

Zn + CuSO₄ ——–> ZnSO₄ + Cu

রাসায়নিক সমীকরণ লেখার নিয়মঃ

১. একটি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় যা ঘটে তাই সমীকরণে দেখানো হয়।

২. সমীকরণ লেখার সময় বামদিকে বিক্রিয়কসমূহ এবং ডানদিকে উৎপাদসমুহ লিখতে হবে। সেই সাথে বিক্রিয়ক ও উৎপাদের নাম লিখতে হয়।

৩. বিক্রিয়ক ও উৎপাদ লেখার সময় তাদের আণবিক সংকেত ব্যবহার করা হয়। অবশ্য যদি কোন পরমাণু বা আয়ন সরাসরি বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে বা উৎপাদ উৎপন্ন করে তবে তাদের প্রতীক ব্যবহার করতে হয়।

 

 Zn + H₂SO₄   ——-> ZnSO₄ + H₂

৪. রাসায়নিক বিক্রিয়ায় যদি একাধিক বিক্রিয়ক অংশগ্রহণ করে, তবে তাদের মধ্যে যোগ চিহ্ন ব্যবহার করতে হয়। একইভাবে যদি একাধিক উৎপাদ উৎপন্ন হয় তবে তাদের মধ্যেও যোগ চিহ্ন ব্যবহার করতে হয়।

     

     2H₂ + O₂  ——-> 2H₂O

     2FeCl₃  ——-> 2FeCl₂ + Cl₂

৫. সমীকরণের উভয় দিকে প্রত্যেক মৌলের পরমাণুর সংখ্যা সমান হতে হবে। অর্থাৎ সমীকরণে সমতা সাধন করতে হবে।

      

     N₂ + 3H₂ ——-> 2NH₃



৬. রাসায়নিক সমীকরণ লেখার সময় বিক্রিয়ক ও উৎপাদের মাঝখানে তীর চিহ্ন ব্যবহার করতে হয়। একে রাসায়নিক কঙ্কাল সমীকরণ বলে। তবে অনেক সময় সমীকরণে সমতা বিধান করা হলে সমান চিহ্ন ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু রাসায়নিক সমীকরণের সমতা বিধান না করলে সমান চিহ্ন ব্যবহার করা যায় না। তবে সমতা বিধান করলেও বা না করলেও উভয় ক্ষেত্রেই তীর চিহ্ন ব্যবহার করা যায়। 

            H₂ + Cl₂  =  2HCl

2FeCl₃ + SnCl₂ ——-> 2FeCl₂ +                                               SnCl₄