রাসায়নিক বিক্রিয়াঃ
যে প্রক্রিয়ায় এক বা একাধিক পদার্থের মধ্যে রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে এক বা একাধিক নতুন পদার্থ উৎপন্ন হয় তাকে রাসায়নিক ক্রিয়া বা বিক্রিয়া বলে।
যেমনঃ হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পরস্পরের সাথে বিক্রিয়া করে পানি উৎপন্ন করে। এক্ষেত্রে উৎপাদ পানির ধর্ম ; বিক্রিয়ক হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের ধর্ম হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সুতরাং এটি একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া।
2H₂ + O₂ ——-> 2H₂O
রাসায়নিক বিক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যসমূহঃ
১. বিক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট পদার্থের ধর্ম বিক্রিয়ক সমূহের ধর্ম হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে। যেমনঃ
C + O₂ ——–> CO₂
এখানে, কার্বন ও অক্সিজেনের বিক্রিয়ার ফলে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধর্ম বিশিষ্ট পদার্থ কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়েছে।
২. বিক্রিয়ায় তাপ শক্তির শোষণ বা উদগীরণ ঘটে। যেমনঃ
i) N₂ + 3H₂ ——–> 2NH₃ ; ΔH = – 92kj
ii) N₂ + O₂ ——–> 2NO ; ΔH = +180kj
এখানে, ΔH এর মান ঋণাত্মক হলে তাপের উদগীরণ এবং ΔH এর মান ধনাত্মক হলে তাপের শোষণ বোঝায়। (I) নং সমীকরণে তাপের উদগীরণ এবং (ii) নং সমীকরণে তাপের শোষণ ঘটেছে।
৩. রাসায়নিক বিক্রিয়া সর্বদা বিক্রিয়ক সমূহের একটি নির্দিষ্ট ভর অনুপাতে সংঘটিত হয়। যেমনঃ
i) 2H₂ + O₂ ——-> 2H₂O
ii) H₂ + 1/2 O₂ ——–> H₂O
এখানে, দুই মোল হাইড্রোজেন অনু ও 1 মোল অক্সিজেন অনু বিক্রিয়া করে দুই মোল পানি উৎপন্ন করে। আবার, 1 মোল হাইড্রোজেন ও অর্ধেক মোল অক্সিজেন বিক্রিয়া করে এক মোল পানি উৎপন্ন করে। এক্ষেত্রে, দুই গ্রাম ভরের হাইড্রোজেনের সাথে 16 গ্রাম ভরের অক্সিজেন বিক্রিয়া করে। অর্থাৎ সব সময় 1 গ্রাম ভরের হাইড্রোজেনের সাথে 8 গ্রাম ভরের অক্সিজেনের বিক্রিয়া সংঘটিত হয়।
৪. বিক্রিয়ক ও উৎপাদসমূহে বিভিন্ন মৌলের পরমাণুর সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকে। যেমনঃ
C + O₂ ———-> CO₂
এখানে, বিক্রিয়কে কার্বনের ১টি পরমাণুর ও অক্সিজেনের ২টি পরমাণুর (১ + ২ = ৩) অর্থাৎ মোট তিনটি পরমাণুর বিদ্যামান। আবার, উৎপাদ কার্বন ডাই অক্সাইডে ১টি কার্বন ও ২টি অক্সিজেন পরমাণু (১ + ২ = ৩) সহ মোট তিনটি পরমাণুর বিদ্যামান। অর্থাৎ বিক্রিয়ক ও উৎপাদে বিভিন্ন মৌলের পরমাণুর সংখ্যা সমান থাকে।
৫. বিক্রিয়ক সমূহের মোট ভর এবং উৎপাদ সমূহের মোট ভর সমান হবে। যেমনঃ
C + O₂ ———-> CO₂
এখানে, বিক্রিয়কে কার্বন ও অক্সিজেনের মোট ভর = ১২ + ১৬ x ২ = ৪৪.
আবার, উৎপাদের মোট ভর = ১২ + ১৬ x ২ = ৪৪. অর্থাৎ, বিক্রিয়ক ও উৎপাদের মোট ভর সমান।
Leave a comment