অথবা, রাষ্ট্রব্যবস্থায় সুশীল সমাজের ভূমিকা সংক্ষেপে উল্লেখ কর।
ভূমিকাঃ বর্তমান সমাজব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ আলােচিত বিষয় হলাে কর্তৃত্ব। কর্তৃত্ব হলাে এমন এক ধরনের শক্তি যার কারণে মানুষ আদেশ করতে পারে ও নিষেধ করতে পারে। শুধু তাই নয় আদেশ ও নিষেধ পালনে বাধ্য করার জন্য ক্ষমতাও প্রয়ােগ করতে পারে। অর্থাৎ মানুষের ক্ষমতা প্রয়ােগের হাতিয়ার হলাে কর্তৃত্ব। সাধারণত রাষ্ট্রই কর্তৃত্বের চর্চা করে থাকে। তাই একে রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বও বলা হয়।
রাষ্ট্রব্যবস্থায় সুশীল সমাজের ভূমিকাঃ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুশীল সমাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যেমনঃ (১) রাষ্ট্রকে অধিকতর কার্যকরি করা। (২) গণতন্ত্রকে ত্বরান্বিত করা। (৩) মানুষের মধ্যে সমাজ-সচেতনতা বৃদ্ধি করা। (৪) রাষ্ট্রকে জনকল্যাণকামী রাষ্ট্রে পরিণত করা। (৫) লক্ষ্য অর্জনের প্রয়ােজনে রাজনৈতিক দলকে সহযােগিতা করে। (৬) রাষ্ট্রের প্রধান তিন বিভাগের (আইন, বিচার, শাসন) বাইরে চতুর্থ বিভাগ হিসেবে কাজ করা। (৭) গঠনমূলক সমালােচনা করা।
(৮) উন্নয়ন কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা। (৯) সচেতন নাগরিক হিসেবে ভূমিকা পালন করা।
সমালােচনাঃ উপযুক্ত আলােচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সুশীল সামজ রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সচেতন ও শিক্ষিত নাগরিকের সমষ্টিই মূলত সুশীল সমাজ গড়ে তােলে। তাই রাষ্ট্রযন্ত্রকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করে তােলার জন্য সুশীল সমাজের কোনাে বিকল্প নেই। তবে পাশাপাশি সুশীল সমাজের কিছু কিছু সমালােচিত হওয়ার মতাে দিকও আছে। কারণ সুশীল সমাজ মাঝে মাঝে নেতিবাচক ভূমিকাও পালন করে।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায়, সচেতন সমাজ গঠনে ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের গঠনমূলক সমালােচনায় সুশীল সমাজে কোনাে বিকল্প নেই। তবে সুশীল সমাজকে অবশ্যই নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। অন্যথায় সামাজিক শৃঙ্খলা বিনষ্ট হবে ও সাধারণ মানুষ সুশীল সমাজের ভূমিকা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়বে যা একটি প্রগতিশীল সমাজের জন্য কখনােই কাম্য নয়। সবশেষে মূলকথা এটিই যে, যেহেতু সুশীল সমাজ রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ সেহেতু তাদের সমাজ সচেতনতা ও নিরপেক্ষতা অন্যান্যদের তুলনায় বেশি হওয়া প্রয়ােজন।
Leave a comment