প্রশ্নঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান, রাষ্ট্রতত্ত্ব ও রাষ্ট্রচিন্তার মধ্যে তুলনা কর।

অথবা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রচিন্তার মধ্যে উল্লেখ কর।

ভূমিকাঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান, রাষ্ট্রতত্ত্ব ও রাষ্ট্রচিন্তা শব্দগুলাে বিশেষভাবে পরিচিত হয়। শব্দগুলাে সাধারণত আলাদা আলাদা দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা করা হয়। আসলে কী তাই? নিম্নে এগুলাের মধ্যকার সম্পর্ক ও তফাৎ সম্পর্কে আলােচনা করব।

ব্যাখ্যাঃ সাধারণত রাষ্ট্রচিন্তা এবং রাষ্ট্রতত্ত্ব, রাষ্ট্রচিন্তা বা রাষ্ট্রদর্শনের মধ্যে বিশেষ কোনাে পার্থক্য করা হয় না। রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাসে শব্দগুলাে প্রায় অভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সাম্প্রতিককালে অনেক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এগুলােকে আলাদা আলাদা দৃষ্টিতে দেখছেন। অধ্যাপক Andrew, Hacker, আদর্শমূলক তত্ত্ব এবং বিজ্ঞান ও দর্শনমূলক তত্ত্বের পার্থক্য নির্দেশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আদর্শমূলক তত্ত্ব, স্বার্থপ্রণােধিত বিজ্ঞান বা দর্শনমূলক তত্ত্ব স্বার্থপ্রণােদিত হয়। তার মতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও রাষ্ট্রদর্শনের মধ্যে উত্তম রাষ্ট্র বা উত্তম সমাজে যে নীতিমালা অনুসন্ধান করা হয় তা নিরাসক্ত বা স্বার্থশূন্য মানসিকতা নিয়ে করা হয়। রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান আহরণই এর মূল লক্ষ্য। পক্ষান্তরে আদর্শমূলক রাষ্ট্রদর্শনের মধ্যে প্রচলিত বা ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থাবলীর যৌক্তিকতা বিধান করার প্রয়াস চালানাে হয় এবং এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতার বিকৃত বর্ণনা বা ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়।

পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, রাষ্ট্র তত্ত্ব ও রাষ্ট্রচিন্তার মধ্যে কতিপয় পার্থক্য বিদ্যমান। চুলচেরা বিশ্লেষণে বলা যায় যে, শব্দগুলাের মধ্যে পার্থক্য থাকলেও তাদের মধ্যে কিছু কিছু বিষয়ে সাদৃশ্য বিদ্যমান।