সামাজিক বিজ্ঞানসমূহ সমাজবদ্ধ মানুষের জীবনধারার এক একটি দিক নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু প্রতিটি সামাজিক বিজ্ঞান তার বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট একটি দৃষ্টিভঙ্গি বা দৃষ্টিকোণ অনুসরণ করে। প্রত্যেক বিষয়ের যথাযথ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের স্বার্থে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা দরকার। নির্দিষ্ট ও সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়া কোন বিষয়েই সম্যক জ্ঞান অর্জন করা যায় না।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান হল একটি সামাজিক বিজ্ঞান। আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে দেখা যায়। বিষয়বস্তুর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিভিন্ন পদ্ধতি ও দৃষ্টিভঙ্গির সৃষ্টি হয়েছে। সুসংবদ্ধ আলোচনার স্বার্থে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে দেখা যায়। অর্থাৎ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে এমন কোন এক দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলা যাবে না। যা সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত বা গৃহীত হয়েছে।

বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বিষয়বস্তু আলোচনা ও বিচার-বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি (Approach) অনুসরণ করার পক্ষপাতী। গ্রীক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অ্যারিস্টটলের পর সুদীর্ঘ দু’হাজার বছর অতিক্রান্ত। আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা রাষ্ট্রবিজ্ঞান আলোচনার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা আলোচনার পদ্ধতিগুলিকে অসম্পূর্ণ বলে মনে করেন। সাম্প্রতিককালের রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা ভৌত-বিজ্ঞানের বিচার-বিশ্লেষণের দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হন। ভৌত বিজ্ঞান বা প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের নতুন নতুন গবেষণা, অনুসন্ধান ও অগ্রগতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনাকে প্রভাবিত করেছে এবং এক নতুন জোয়ার এনেছে। এক্ষেত্রে ঊনবিংশ শতাব্দীতে ডারউইনের বিবর্তনবাদ, মার্কসের ঐতিহাসিক ও দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ এবং অর্থনৈতিক বিচার-বিশ্লেষণ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সামাজিক অগ্রগতি ও ভৌত বিজ্ঞানের প্রভাব-প্রতিক্রিয়ার ফলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় দৃষ্টিভঙ্গির (Approach) পরিবর্তন ঘটেছে।

দৃষ্টিভঙ্গি কাকে বলে? আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় দৃষ্টিভঙ্গি বলতে সাধারণভাবে কোন বিষয়ের উপর সুনির্দিষ্টভাবে আলোকপাত বা বিশ্লেষণ ধারাকে বোঝায়। একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে অবলোকনের এবং ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের ধারাকেই বলা হয় দৃষ্টিভঙ্গি। রাজনীতির আলোচনায় দৃষ্টিভঙ্গির পটভূমি বিশেষভাবে প্রসারিত হতে পারে এবং সমগ্র পৃথিবীর বিস্তৃত পটভূমিকে আলোচনার আঙ্গিনায় আনতে পারে। আবার দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়বস্তু ক্ষুদ্র পরিসরে হতে পারে এবং স্থানীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় বা আন্তর্জাতিক রাজনীতির কোন একটি বিশেষ বিষয় আলোচনার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কেতাবি আলোচনায় নির্দিষ্ট কোন প্রতিপাদ্য বিষয় সম্পর্কে তথ্যানুসন্ধান ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা হয়। এবং এক্ষেত্রে পরিসংখ্যান সংগ্রহ ও বাছাই করা হয়। এ সব বিষয়ও রাজনীতির বিশ্লেষণ ধারার অন্তর্ভুক্ত হয়। জোহারী (J. C. Johari) তাঁর Comparative Politics শীর্ষক গ্রন্থে বলেছেন: “An approach…may be definds as a way of looking at and then explaining a particular phenomenon.” ভারনন ডাইক তার Political Science: A Philosophical Analysis শীর্ষক গ্রন্থে মন্তব্য করেছেন: (An approach) consists of criteria of selection-criteria employed in selecting the problems or questions to consider and in selecting the data to bring to bear; it consists of standards governing the inclusion and exclusion of questions and data” রাজনীতিক ক্ষেত্রে সমস্যাসমূহ, পরিসংখ্যান এবং সমস্যার সমাধান অনুসন্ধানের প্রশ্নাবলী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মানদণ্ড বর্তমান। চিন্তাবিদরা এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন মানদণ্ডের সাহায্য নিয়ে থাকেন। স্বভাবতই রাজনীতিক বিষয়াদি বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি বর্তমান। বিশ্লেষণগত মতপার্থক্যের জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে পার্থক্যের সৃষ্টি হয়। বল (Alan R. Ball) তাঁর Modern Politics and Government শীর্ষক গ্রন্থে যথার্থই মন্তব্য করেছেন : “There is a marked look of agreement on what constitutes the best approaches to the study of Politics.”

দৃষ্টিভঙ্গি ও পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য: সামাজিক বিজ্ঞানসমূহের আলোচনায় ‘পদ্ধতি’ ও ‘দৃষ্টিভঙ্গি’ এই শব্দ দুটি সাধারণত অসতর্কতার সঙ্গে হাল্কাভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে সঠিক অর্থে শব্দ দুটির মধ্যে অর্থ ও প্রয়োগগত পার্থক্য বর্তমান। পদ্ধতি হল একটি অধিকতর সাধারণ কথা। এর অর্থ হল কোন কিছু করার নির্দিষ্ট উপায় বিশেষ। সুসংবদ্ধ আলোচনা বা অনুশীলনের ক্ষেত্রে পদ্ধতি হল অনুসন্ধানের পন্থা। এর মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য জ্ঞান আহরণ করা যাবে এবং নির্ভরযোগ্য সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহণ করা যাবে। পদ্ধতির উদাহরণ হিসাবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, আরোহী পদ্ধতি, অবরোহী পদ্ধতি, তুলনামূলক পদ্ধতি প্রভৃতির কথা বলা যায়। রাজনীতিক চিন্তাবিদরা যখন তাঁদের ধ্যান-ধারণাকে উপস্থাপন করতে চান তখনই দৃষ্টিভঙ্গিকে নির্দিষ্ট পদ্ধতির সাহায্য নিতে হয়। এইভাবে রাজনীতিক বিষয়ের দৃষ্টিভঙ্গি ও পদ্ধতির মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ-সম্পর্ক বর্তমান। রাজনীতিক পদ্ধতি রাজনীতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিপূরক। রাজনীতিক পদ্ধতি হল পরিসংখ্যানকে প্রয়োগ করার জন্য তত্ত্ব সংগঠনের উপায়। রাজনীতিক পদ্ধতি হল রাজনীতিক ধারণাগত পরিকল্প। রাজনীতিক পদ্ধতি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। এই পদ্ধতি তুলনামূলক, পরিকল্পনামূলক, ইতিহাসমূলক, উদ্দীপনামূলক এবং পরীক্ষামূলক। ভারনন ডাইক রাজনীতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য প্রসঙ্গে বলেছেন: “In brief, approaches consists criteria for selecting problems and relevant data, whereas methods are procedures for getting and utilising data.” রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় বিভিন্ন পদ্ধতির প্রয়োগ পরিলক্ষিত হয়। এই সমস্ত পদ্ধতি সাধারণত অন্যান্য সামাজিক ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞান থেকে গৃহীত। এই কারণে ধনবিজ্ঞান, সমাজতত্ত্ব, মনস্তত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, জীবনবিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ের সঙ্গে আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের গভীর সংযোগ-সম্পর্ক বর্তমান। ওয়াসবি (S. L. Wasby)-র অভিমত অনুসারে আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান হল রাজনীতিক পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে ইতিহাস, অর্থনীতি ও সমাজতত্ত্বের প্রয়োগ। রাজনীতিক বিষয়াদির আলোচনায় পরিসংখ্যান সংগ্রহ ও বিচার-বিশ্লেষণ সম্পর্কিত সমস্যাদির মোকাবিলার জন্য পদ্ধতির প্রয়োগ পরিলক্ষিত হয়। জোহারীর অভিমত অনুসারে: “with a view to bring out a subtle line of distinction between an approach and a method, we may say that the latter is commonly used either to denote epistemological assumption on which the search for knowledge is based, or the operations and activities that occur in the acquisition and treatment of data.”

সাধারণত দেখা যায় যে, একটি দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে নির্দিষ্ট একটি পদ্ধতির সংযোগ-সম্পর্ক থাকে। কিন্তু কোন পদ্ধতি সাধারণত নির্দিষ্ট কোন দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সবসময় সংযুক্ত নয়। এই কারণে একটি দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে প্রাসঙ্গিক পদ্ধতির ব্যাপারে চাহিদা বা সুপারিশের ব্যাপার থাকে। এ প্রসঙ্গে গাউবা (O. P. Gauba) তাঁর An Introduction to Political Theory শীর্ষক গ্রন্থে এ বিষয়ে বলেছেন:”…. behavioural approach is wedded to a scientific method (because behaviour of several actors is a political situation is capable of scientific study) while the normative approach is wedded to philosophical method (because norms and values can only be determined. philosophically, not through scientific method).

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিশ্লেষণে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে সাবেকী দৃষ্টিভঙ্গি পরিত্যাগ করে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করার এক প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে এই প্রবণতা স্পষ্টত প্রতিপন্ন হয়। মূলত মার্কিন চিন্তাবিদদের মধ্যে এই প্রবণতা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনাকে অধিকতর বিজ্ঞানভিত্তিক করার ব্যাপারে তাঁরা উদ্যোগী হন। ভৌত বিজ্ঞানসমূহে পরীক্ষা-নিরীক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানেও পরীক্ষামূলক পদ্ধতি প্রয়োগের কথা বলা হল। বীজগণিত ও সংখ্যাতত্ত্বের সূত্রগুলির সাহায্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ শুরু হল। জীবন বিজ্ঞানের অনুধাবন পদ্ধতি, তথ্যাদি সংগ্রহের কলা-কৌশল, গণিতশাস্ত্রের প্রতীকমূলক যুক্তি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় প্রয়োগ করা শুরু হল। প্রকৃত প্রস্তাবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিশ্লেষণের দৃষ্টিভঙ্গির তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন ঘটল। ভৌতবিজ্ঞান, জীবন বিজ্ঞান ও গণিতশাস্ত্রের সূত্রসমূহকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি হিসাবে গ্রহণ করা শুরু হল।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিশ্লেষণে দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে মতপার্থক্য: ‘Approach’ বলতে এক ব্যাপক দৃষ্টিভঙ্গিকে বোঝানো হয়। কিন্তু ‘method’ বলতে এক বিশেষ ‘technique’ বা পদ্ধতিকে বোঝান হয়ে থাকে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে বহুসংখ্যক দৃষ্টিভঙ্গির সন্ধান পাওয়া যায়। রাষ্ট্রবিজ্ঞান হল সমাজবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা অথচ অদ্যাবধি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে সর্বজনস্বীকৃত নির্দিষ্ট কোন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। রাষ্ট্রবিজ্ঞান আলোচনার দৃষ্টিভঙ্গিসমূহকে বিভিন্ন দিক থেকে ভাগ করা হয়েছে। কোন কোন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রাষ্ট্রবিজ্ঞান আলোচনার দৃষ্টিভঙ্গিগুলিকে চারভাগে বিভক্ত করার পক্ষপাতী। এই ভাগগুলি হল দার্শনিক (Philoso-phical), প্রাতিষ্ঠানিক (Institutional), আচরণবাদী (Behavioural) এবং মার্কসবাদী (Marxist)। অনুশীলনের বিষয়ের পার্থক্যের পরিপ্রেক্ষিতে এই শ্রেণীবিভাগ করা হয়েছে। রাজনীতিক বিষয়াদি অনুশীলনের ক্ষেত্রে প্রযুক্ত পদ্ধতির ভিত্তিতে তিন ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলা হয়েছে: আইনগত (legal), ঐতিহাসিক (historical) এবং বৈজ্ঞানিক (scientific)। কোন কোন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অন্যান্য সামাজিক বিজ্ঞানে অনুসৃত পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন এবং রাজনীতির বিভিন্ন দিক বিচার-বিশ্লেষণ করেছেন। এ দিক থেকে বিচার করলে রাজনীতির অনুশীলনে অনুসৃত দৃষ্টিভঙ্গিসমূহ হল: সমাজতাত্ত্বিক (sociological), নৃতাত্ত্বিক (anthropological), মনস্তাত্ত্বিক (psychological) এবং ভৌগোলিক (geographical)। অ্যালন বল (Alan R. Ball) ঐতিহাসিক (Traditional) এবং আধুনিক (Modern)–এই দু’ভাগে রাজনীতিক আলোচনার দৃষ্টিভঙ্গিসমূহকে শ্রেণীভুক্ত করেছেন। আবার তথ্য ও মূল্যমান সংক্রান্ত সমস্যার (fact-value problem) ভিত্তিতে রাজনীতিক আলোচনার দৃষ্টিভঙ্গিকে ‘ আদর্শ স্থাপনকারী বা আদর্শনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গি’ (Normative Approach) ও ‘অভিজ্ঞতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি’ (Empirical Approach)—এই দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিশ্লেষণে আদর্শস্থাপনকারী ও অভিজ্ঞতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি: আদর্শস্থাপনকারী দৃষ্টিভঙ্গি মূল্যমান সংগঠিত আলোচনার দ্বারা ভারাক্রান্ত। কিন্তু অভিজ্ঞতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি মূল্যমান নিরপেক্ষ। আদর্শস্থাপনকারী বিশ্লেষণের ধারা হল আদর্শ ও মূল্যমানকেন্দ্রিক আলোচনা। অপরদিকে অভিজ্ঞতাবাদী বিশ্লেষণের ধারা হল মূল্যমান নিরপেক্ষ আলোচনা। তথ্য ও মূল্যমানের সঙ্গে সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে রাজনীতির বিশ্লেষণ ধারা বা দৃষ্টিভঙ্গির এই শ্রেণীবিভাজন করা হয়। ঐতিহ্যগত দৃষ্টিভঙ্গিগুলি মূল্যমান ও আদর্শের অনুগামী। অভিজ্ঞতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিসমূহ মূল্যমান-নিরপেক্ষতার অনুগামী। জোহারী বলেছেন: “…that fact-value dichotomy becomes the determining factor. The traditional approaches have a historical descriptive and prescriptive character with a dominating place for values and goals.” আদর্শস্থাপনকারী ও অভিজ্ঞতাবাদী রাজনীতিক বিশ্লেষণ ধারার মধ্যে পার্থক্য প্রসঙ্গে জোহারী Comparative Politics শীর্ষক গ্রন্থে মন্তব্য করেছেন: “… while normativism the hallmark of the traditional approaches stands for a value-laden system, empiricism-the hallmark of modern approaches-does the same for a system loaded with facts.”