সংজ্ঞাঃ যে উপন্যাসে রাজনৈতিক ঘটনা ও কাহিনীকে অবলম্বন করে একটি দেশ ও জাতির, স্থান ও কালের সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাষ্ট্রিক ব্যবস্থা, তার দ্বন্দ্ব সমস্যা সংকট ইত্যাদি পরিস্ফুট হয়ে ওঠে তাকে রাজনৈতিক উপন্যাস হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে।

নিছক কোনও রাজনৈতিক মতবাদ প্রচারের উদ্দেশ্যে নয়, একটি দেশ ও জাতির প্রাণময় উত্তেজনা, একটি সার্বজনীন ভাবাবেগ বিধৃত হয় সার্থক রাজনৈতিক উপন্যাসে। অবশ্য কোনও কোন ক্ষেত্রে রাজনৈতিক তত্ত্বজ্ঞান, মতাদর্শ উপন্যাসের শৈল্পিক রূপকে ছাপিয়ে প্রচারধর্মী ও উদ্দেশ্যপ্রবণ হয়ে ওঠে। আসলে রাজনীতি ও উপন্যাসের এ দুয়ের যথার্থ সমন্বয় কিভাবে ঘটবে সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যায় না।

রাজনৈতিক উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য:

রাজনৈতিক উপন্যাসের বিষয়, প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সমালোচক শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় যে মন্তব্য করেছেন তারই নিরিখে সূত্রাকারে রাজনৈতিক উপন্যাসের বৈশিষ্ট্যগুলি নিরূপণ করা যেতে পারে

  • সমসাময়িক জগতের উদ্‌ভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা যেমন কাব্যে তেমনি রাজনৈতিক সংগ্রামের উগ্র উত্তেজনা, বিরুদ্ধ মতবাদের তীব্র সংঘর্ষ, নূতন রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা স্থাপনের স্বপ্ন বিহ্বল আকৃতি ও সুকুমার আদর্শবাদ উপন্যাসে আত্মপ্রকাশের পথ খোঁজে।

  • স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন স্তর, ১৯৪২-এর আগষ্ট আন্দোলন, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের বিভ্রান্তিকর অভিজ্ঞতা, কংগ্রেস ও কমিউনিজম মতবাদের আদর্শ ও দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য, স্বাধীনতা লাভের পর বৈষম্যবর্জিত নূতন সমাজ গড়ার একাগ্র প্রচেষ্টা, দেশপ্রেমিকের আত্মোৎসর্গের প্রেরণা নিয়ে আধুনিক যুগের বহু উপন্যাস রচিত হয়েছে।

  • দেশব্যাপী উত্তেজনার মোহ সাহিত্যিককে যেমন পেয়ে বসেছে তেমনি তার শাশ্বত মূল্যবোধকে অনেকটা আচ্ছন্ন করে দিয়েছে।

  • এ বিষয়ে লেখক ও পাঠকের মধ্যে এমন একটি যোগসূত্র রচিত হয়, এমন একটি আবেগপ্রবণতা ভাবোচ্ছ্বাস প্রকাশ হয়ে পড়ে, লিখতে বসলেই এমন একটি নিবিড় আবেশ ঘনিয়ে আসে যে এই প্রলোভন সংবরণ করা অমানুষিক আত্মসংযমের ব্যাপার।

  • রাজনৈতিক স্রোতে গা ভাসিয়ে দেহে মনে এমন তৃপ্তি ও আরাম আনে যে মনে হয় যে এতে গা ভাসালেই স্রোতাবেগে চরম সিদ্ধির উপকূলে অনায়াসে উত্তীর্ণ হওয়া যাবে।

  • দেশব্যাপী ভাবাবেগের ঘূর্ণাবর্ত আদর্শবাদের দুরারোহ শিখরের দিকে যাত্রাপথে মানবপ্রকৃতির বিশিষ্ট রূপটি উদ্‌ঘাটিত হয়ে পড়ে।

  • এ উপন্যাস রচনায় ব্যক্তিত্ব স্ফূরণের অবকাশ বিশেষ থাকেনা।

  • প্রতিবেশ চিত্র ব্যক্তিগত চরিত্র চিত্রণকে গৌণ করে প্রধান হয়ে ওঠে।

প্রসঙ্গক্রমে রাজনৈতিক উপন্যাসের চরিত্র সম্পর্কে উপরিউক্ত আলোচনা থেকে কয়েকটি সংকেত সূত্র উদ্ধার করা যায়—

  • মূলত সমকালীন ঘটনাসমূহের আলোড়নে এ উপন্যাসের জন্ম।

  • সামাজিক রাজনৈতিক জীবনের সংকট, উদভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা এর ভিত্তিস্থল।

  • পরস্পর বিরুদ্ধ মতবাদের সংঘর্ষ এবং নূতন রাষ্ট্রিক তথা সামাজিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বিহ্বলতা ও আদর্শবাদ এ জাতীয় উপন্যাসের প্রাণ।

  • সমসাময়িক উত্তেজনার তাড়নায় চিরন্তন মূল্যবোধ যেন লেখকের ভাবনায় কিছুটা আচ্ছন্ন।

  • এক সুলভ আবেগ প্রবণতা ও ভাবালুতা পাঠক ও লেখককে গ্রথিত করে রাখে।

  • ভাবের উচ্ছ্বাসের সঙ্গে ভাষার দুর্বার জোয়ারে লেখক মোহাবিষ্ট করে ফেলেন পাঠককে।

  • জনপ্রিয়তার মিশ্রিত আশ্বাসে আশ্বস্ত থাকেন লেখক।

অর্থাৎ যে যুগে সামাজিক জীবনের সংকট ও বিপর্যস্ত যত তীব্র হয়ে ওঠে, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক জটিলতা ও টানাপোড়েন যত বাড়তে থাকে, সেযুগে ততই রাজনৈতিক উপন্যাস তথা নাটক কাব্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

নিয়মাবলী: সমালোচক জানিয়েছেন, রাজনৈতিক উপন্যাস রচনাকালীন কয়েকটি বিশেষ বিষয়ের প্রতি লেখককে সজাগ দৃষ্টি রাখা বাঞ্ছনীয়। যেমন—

  • ঔপন্যাসিকের সতর্ক থাকতে হবে যেন উপন্যাসখানি উগ্রপ্রচার সর্বস্বতায় পর্যবসিত না হয়। কারণ কোনও বিশেষ রাজনৈতিক তত্ত্ব বা মতাদর্শের প্রতি অন্ধ আনুগত্য থাকলে সে রচনা প্রচার মাধ্যমে পরিণত হবে। এ প্রসঙ্গে G.D.H.Cole তার ‘Politics and Literature’-এ পরিস্কার বলেছেন— “Mere Chronicle is not history, nor mere factual political writing political literature.”

  • সামাজিক সমস্যা ও সমাজ বাস্তবতাকে লেখক যেমন অগ্রাহ্য করতে পারেন না, তেমনি উপন্যাসে শিল্পরূপ ও রীতি সম্পর্কে তাকে সজাগ থাকতে হয়।

  • কেবল বস্তুগত সত্যের ওপর ভর করে ঔপন্যাসিক চলতে পারেন না। তাঁকে একটি সামগ্রিক সত্যের সন্ধান করতে হয়।

দৃষ্টান্ত: সমালোচক শ্রীশ চন্দ্র দাস লিখেছেন—“বাংলার বৈপ্লবিক জাতীয় আন্দোলনকে উপলক্ষ্য করিয়া কয়েকখানা উপন্যাস লিখিত হইয়াছে। ইহাদের মধ্যে বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ’ রবীন্দ্রনাথের্ ‘চার অধ্যায়’, শরৎচন্দ্রের পথের দাবী সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘জাগরী’, গোপাল হালদারের ‘একদা’, বনফুলের ‘অগ্নি’, দীপক চৌধুরীর ‘পাতালে এক ঋতুর নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য।” এছাড়াও আরো কয়েকটি উপন্যাসের নাম না করলেই নয় রবীন্দ্রনাথের ‘ঘরে বাইরে’, ‘গোরা’, সমরেশ বসুর— ‘বি.টি. রোডের ধারে’, ‘উত্তরঙ্গ’, ‘শ্রীমতী কাফে’, মহাশ্বেতা দেবীর—‘হাজার চুরাশীর মা, প্রভৃতি গ্রন্থ রাজনৈতিক উপন্যাস রূপে খ্যাত।

একটি বাংলা রাজনৈতিক উপন্যাস:

বাংলা উপন্যাস সাহিত্যের সার্থক রাজনৈতিক উপন্যাস হিসাবে শরত্চন্দ্রের ‘পথের দাবীর নাম করা যেতে পারে। কারণ রাজনৈতিক বিপ্লব অবলম্বনে যে সমস্ত স্মরণীয় উপন্যাস রচিত হয়েছে তার মধ্যে আনন্দমঠের কথা বাদ দিলে ‘পথের দাবী’ কে শ্রেষ্ঠ রূপে গণ্য করা যেতে পারে। রাজনৈতিক উপন্যাসের মধ্যে ক্রুদ্ধ অগ্নিঝটিকার অন্তস্থলে সুখ দুঃখ তাড়িত মানুষের অন্তর্জীবনের নানা প্রবাহ প্রবাহিত হয়। ‘পথের দাবী’তে লেখক উপন্যাসের রাজনৈতিক দাবী এবং ঔপন্যাসিক দাবী উভয়কেই নিপুণভাবে রূপায়িত করেছেন। আলোচ্য উপন্যাসের বিপ্লবী শ্রেষ্ঠ সব্যসাচী ও তার অগ্নিবাহী বিপ্লবী দল চতুর্দিকে যে অগ্নিকাণ্ড সৃষ্টি করেছে তারই নিরাপদ অভ্যন্তরে অপূর্ব, ভারতী প্রমুখ চরিত্রের আবেগ ও বেদনা মিশ্রিত হৃদয়লীলার স্নিগ্ধ আসর রচিত হয়েছে। ‘পথের দাবী’র সভানেত্রী সুমিত্রা কঠিন প্রস্তরে নির্মিত নারীমূর্তি হলেও মাঝে মাঝে তার অন্তর বিদীর্ণ করে বিগলিত অশ্রুধারা বাধা বন্ধনহীন আবেগে উচ্ছ্বসিত হয়েছে। এইভাবে ‘পথের দাবী’ সুস্পষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সার্থকভাবে পরিস্ফুট করেও ঔপন্যাসিক ধর্মচ্যুত হয়নি।

‘পথের দাবী’ উপন্যাসে রাজনৈতিক পটভূমি আলোচনা করলে দেখা যায়, শরৎচন্দ্র কোনদিনই মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে অহিংস আন্দোলনে বিশ্বাসী ছিলেন না, তিনি বিপ্লববাদের প্রতি শ্রদ্ধাবান ছিলেন একথা জানা যায়, শচীনন্দন চট্টোপাধ্যায় লিখিত ‘বিপ্লবী শরৎচন্দ্রের জীবনপ্রশ্ন’ গ্রন্থ থেকে। শরৎচন্দ্র বিপ্লবীদের কাছে তাদের বিগত জীবনের রোমাঞ্চকর কাহিনী শুনতেন এবং তাদের বৈপ্লবিক আন্দোলন সফল বা বিফল হোক না কেন, শরৎচন্দ্র তাঁদের শ্রদ্ধার আসনে বসিয়েছিলেন, শরৎচন্দ্র ‘পথের দাবী’ নায়কের মুখে বিপ্লবের যে ধ্বনি তুলেছেন সেখানে অহিংসা, শান্তি, আপোষ, প্রভৃতির কথা যেন সম্পূর্ণ রূপে বিদূরিত হয়েছে, সব্যসাচী বিপ্লবের পক্ষে যে বক্তব্য রেখেছেন— সেখানে মানুষের চলার পথে বিপ্লবকে অন্যতম উপাদান বলে মনে করেছেন। সব্যসাচী দুটি পথের কথা উচ্চারণ করেছেন হয় মৃত্যু, নয় ভারতের স্বাধীনতা। শরৎচন্দ্রের নিজস্বমতবাদ সব্যসাচীর মাধ্যমে যেমন ব্যক্ত হয়েছে, তেমনি তার বিরুদ্ধ মতবাদ প্রকাশিত হয়েছে ভারতী চরিত্রের মাধ্যমে, সব্যসাচী হিংসাত্মক, রক্তস্রোত পথের দুঃসাহসী, অভিযাত্রী, আর ভারতীয় পথ হল শান্তি, মৈত্রী ও সম্প্রতির কল্যাণাশ্রিত পথ। ভারতী সব্যসাচী তার হৃদয়ের সমস্ত ভক্তি উজাড় করে দিলেও সব্যসাচীর হিংসাত্মক আদর্শ মেনে নিতে পারেনি। ভারতী যে শুধু নিজের মতো দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরেছে তাই নয়, সে সব্যসাচীকে নিজের মতে আনতে বদ্ধ পরিকর।

সমালোচক সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত মহাশয় বলেছেন—“পথের দাবী” রাজনৈতিক বিপ্লবের উপন্যাস, কিন্তু ইহার দ্যোতনা অতিশয় ব্যাপক।” এর প্রমাণ মেলে সব্যসাচী ও তার বৈপ্লবিক সমিতির সক্রিয় কর্মধারায়। সব্যসাচী ও তার সহকর্মীরা ভারত ও সমগ্র দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার গুপ্ত বৈপ্লবিক ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। আলোচ্য উপন্যাসের কাহিনীর কেন্দ্রস্থল ব্রহ্মদেশ, ব্রিটিশ শাসনের অধীন হওয়ায় ব্রহ্মদেশবাসীর উপর ইংরেজের পীড়ন ও শোষণ ক্রমবর্ধমান ছিল। ফলে এই অঞ্চলের মানুষ ও ইংরেজের বিরোধিতা করতে শুরু করেছিল, সব্যসাচী ইংরেজ, ফরাসী ও জার্মান জাতিগোষ্ঠীর বিরোধী ছিলেন। কেননা তারাই একে একে চিন, কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশগুলিকে শাসনে শোষণে নিপীড়নে বিপর্যস্ত করেছিল। সব্যসাচীর উদ্দেশ্য ছিল এই সমস্ত বিভিন্ন দেশের গুপ্ত সমিতিকে একত্রিত করা, তাদের বৈপ্লবিক কাজকর্মে নিয়োজিত এবং সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের আমূল পরিবর্তন করাই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল।

‘পথের দাবী’ তে রাজনৈতিক স্বাধীনতার সঙ্গে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার কথাও বলা হয়েছে। সব্যসাচীও তার দলের পুঁজিবাদী শোষক শ্রেণীর কবল থেকে মুক্তিলাভের সংগ্রামের মধ্যে রুশ বিপ্লব ও সমাজ তান্ত্রিক আদর্শের প্রভাব বিদ্যমান। অবশ্য এই রাজনৈতিক উপন্যাসে গ্রামের কৃষকদের কোনও স্থান নেই। সব্যসাচী এর উত্তরে বলেছেন যে, পথের দাবী হল স্বাধীনতা অর্জনের অস্ত্র এবং অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কৃষি নির্ভর সমাজের দ্রুত শিল্পায়ন এবং শিল্পোৎপাদন প্রয়োজন। এ উপন্যাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির সঙ্গে সামাজিক মুক্তির কথা বলা হয়েছে। ‘পথের দাবী’র বৈপ্লবিক কর্মপন্থা, সম্ভাবনাময় কার্যধারা ইত্যাদি আলোচ্য উপন্যাসটিকে রাজনৈতিক উপন্যাসের বৃত্তমধ্যে উপস্থিত করায়। সব্যসাচীর অভিজ্ঞতার বর্ণনা অভিযুক্ত অপূর্বর বিচার দৃশ্য, সব্যসাচী ও ব্রজেন্দ্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং ঝটিকা তাড়িত দুর্যোগ নিশীথে সব্যসাচীর বিদায় দৃশ্যে এক নাটকীয় উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। অপূর্ব ও ভারতীর হৃদয়লীলা এক আশ্বাসভরা জগতের সন্ধান দেয়। এখানে বিভিন্ন নারী চরিত্রে নারী প্রেমের বিচিত্রতা প্রভৃতি উদ্‌ঘাটিত হয়েছে। অপূর্বর স্বার্থপরতা, ভারতীর স্নেহসিক্ত হৃদয়, নবতারার ছলনা, শশীর কবিত্ব ইত্যাদি আলোচ্য গ্রন্থে উপন্যাসের যে উপাদান এনেছে তা রাজনীতির ঘন দুর্যোগের মধ্যে যেন মানব হৃদয়ের মরুদ্দান। শরৎচন্দ্র শিল্প শোভনতার সঙ্গে রাজনীতি ও উপন্যাসকে একত্র সংঘবদ্ধ করে বিষয়বস্তু ও শিল্পরূপকে গঙ্গা যমুনা সঙ্গমে পরিণত করে ‘পথের দাবী’কে রাজনৈতিক উপন্যাসে মর্যাদা দান করেছেন।

‘পথের দাবী’ যে যথার্থই রাজনৈতিক উপন্যাস সে সম্পর্কে সমালোচক শ্যামসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য উদ্ধৃত করে বলতে হয়—“শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ কে রাজনৈতিক উপন্যাস বলা যায়। মাতৃভূমির স্বাধীনতা ফিরাইয়া আনিবার জন্য সংগ্রামী ভারতীয়ের যে অংশ ভারতের বাহিরে বিদেশী রাজশক্তি, ইংরাজ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালাইয়া ছিল, তাহাদের মহান প্রয়াসের এক খণ্ড কাহিনী পথের দাবীকে বিধৃত হইয়াছে।” কাজেই আলোচ্য উপন্যাসখানি যে সার্থক রাজনৈতিক উপন্যাস সে সম্পর্কে কোনও দ্বিমত নেই।