রাজনীতিক মতাদর্শ

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের তত্ত্বগত আলোচনায় রাজনীতিক মতাদর্শ সম্পর্কিত আলোচনার গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিরোধ বিতর্কের ঊর্ধ্বে। রাজনীতিক চিন্তাজগতে রাজনীতিক মতাদর্শ প্রাণস্বরূপ। রাজনীতিক মতাদর্শ রাষ্ট্রনৈতিক চিত্তার ফল ও কারণ হিসাবে প্রতিপন্ন হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তাত্ত্বিক বিচার-বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে রাজনীতিক মতাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্ধারক হিসাবে প্রতীয়মান হয়। সাম্প্রতিককালে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে রাজনীতিক ব্যবস্থার গতি-প্রকৃতি বিশেষভাবে জটিল। রাজনীতিক মতাদর্শকে উপেক্ষা করে আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের যথাযথ বিচার-বিশ্লেষণ কার্যত অসম্ভব। রাষ্ট্রনৈতিক কতকগুলি বিষয় পর্যালোচনার জন্য রাজনীতিক মতাদর্শের সাহায্য অপরিহার্য বিবেচিত হয়। এই সমস্ত বিষয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বিভিন্ন রাজনীতিক ব্যবস্থা এবং তাদের প্রকৃতি ও বৈধতা; রাজনীতিক ব্যবস্থার স্থায়িত্ব ও পরিবর্তন; রাজনীতিক ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব এবং তার বণ্টন; বিভিন্ন রাজনীতিক ক্রিয়াকলাপ; বিভিন্ন রাজনীতিক দাবি দাওয়া এবং তাদের সংহতি সাধন প্রভৃতি। সাম্প্রতিককালে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে রাজনীতির বিচার-বিশ্লেষণের ব্যাপারেও রাজনীতিক মতাদর্শের ব্যাপক প্রয়োগ পরিলক্ষিত হয়। এবং এ কথা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় স্তরের রাজনীতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। বর্তমানে জাতীয় রাজনীতির মত আন্তর্জাতিক রাজনীতির সমস্যাদিকে মতাদর্শগত বিরোধসম্ভূত সমস্যা হিসাবে প্রতিপন্ন করা হয়। উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে একথা স্পষ্টত প্রতীয়মান হয় যে রাজনীতিক মতাদর্শ সম্পর্কিত ধারণার পর্যালোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মতাদর্শের উদ্ভব প্রথমে হয়েছে শিল্পায়নসমৃদ্ধ পশ্চিমী দুনিয়ায়। পরবর্তী কালে বিশ্বব্যাপী মতাদর্শ বিস্তার লাভ করে। অনতিবিলম্বে মতাদর্শ রাজনীতিক আলোচনার ভাষায় পরিণত হয়। সামাজিক, রাজনীতিক ও আর্থনীতিক ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক আন্দোলন-উত্থানের সুবাদে মতাদর্শের সৃষ্টি হয়েছে। রাজনীতিক উন্নয়ন ও সামাজিক রূপান্তর সাধন সম্পর্কিত অবিরাম প্রক্রিয়ার সঙ্গে মতাদর্শ গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। বিগত দু’শতাব্দীর অধিককাল ধরে মানবসভ্যতার ইতিহাসের অপরিহার্য উপাদান হিসাবে মতাদর্শের অস্তিত্ব অনস্বীকার্য।

মানবজাতির ইতিহাসে মতাদর্শের ভূমিকা নিয়ে মতপার্থক্য বর্তমান। একদল চিন্তাবিদের মতানুসারে মতাদর্শের ভূমিকা ন্যায়, সত্য ও প্রগতির পরিপোষক। আর একদলের অভিমত অনুযায়ী মতাদর্শ উপেক্ষিত ও বিকৃত বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গির জন্ম দিয়েছে এবং তারফলে শোষণ-পীড়ন ও অহিষ্ণুতার সৃষ্টি হয়েছে। মানবসভ্যতার ইতিহাসে মতাদর্শের ভূমিকাকে নিয়ে এই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে ঊনবিংশ শতাব্দীতেই। এ প্রসঙ্গে মনীষী মার্কসের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কার্ল মার্কস বিজ্ঞান ও মতাদর্শের মধ্যে পার্থক্যমূলক আলোচনা করেছেন। বলা হয় যে, বিজ্ঞান হল একটি বস্তুবাদী ও মূল্যবোধ নিরপেক্ষ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে মানবজাতির জ্ঞানের পরিধি প্রসারিত হয়। তার ফলে অযৌক্তিক মতাদর্শের শৃঙ্খল থেকে মানব সভ্যতা মুক্তি পায়।

আবার অনেকে মনে করেন যে বিজ্ঞান ও মতাদর্শ পরস্পরবিরোধী নয়। বরং উভয়ের মধ্যে এক ধরনের সম্পর্ক বর্তমান। কর্তৃত্বমূলক সামাজিক শক্তিসমূহের বিবিধ স্বার্থের সঙ্গে বিজ্ঞান সম্পর্কযুক্ত। বিশেষত শিল্প ও প্রযুক্তির সঙ্গে বিজ্ঞানের সম্পর্কের গভীরতা অনস্বীকার্য। সামাজিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায়ও শিল্প ও প্রযুক্তির সদর্থক অবদান অনস্বীকার্য। এদিক থেকে বিচার করলে শিল্প-সমাজের এটাই হল কর্তৃত্বমূলক মতাদর্শ।

মানবজাতির অস্তিত্বমূলক অবস্থার দিক থেকে বিচার করলে মতাদর্শ হল একটি অপরিহার্য এবং অনপনেয় বৈশিষ্ট্য বা উপাদান। ঐতিহাসিক শক্তিসমূহের ভিতর থেকে মতাদর্শের উৎপত্তি হয়। সংশ্লিষ্ট ঐতিহাসিক শক্তিসমূহই মতাদর্শের চেহারা-চরিত্র নির্ধারণ করে। মতাদর্শ সামাজিক ও রাজনীতিক প্রয়োজন পূরণ করে। আবার সংশ্লিষ্ট সামাজিক ও রাজনীতিক প্রয়োজনসমূহই মতাদর্শের বহিরাবরণ নিয়ন্ত্রণ করে।

রাজনীতিতে ধ্যান-ধারণা (ideas)-র ভূমিকা এবং এই ভূমিকার গুরুত্বের বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। আবার রাজনীতিক মতাদর্শ (political ideology)-এর ধারণা ও তার প্রকৃতি এবং রাজনীতিক মতাদর্শের শ্রেণীবিভাজনের ক্ষেত্রে বাম-ডান বিন্যাসের মূল্য সম্পর্কিত আলোচনা আবশ্যক। প্রধান রাজনীতিক মূল্যবোধসমূহের মৌলিক ধারণা ও বিশ্বাস সম্পর্কিত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণও বাঞ্ছনীয়। মানুষজন প্রাত্যহিক জীবনের কাজকর্মে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করার সময় রাজনীতিক ধারণামূলক পদ বা শব্দ ব্যবহার করে। তবে সব সময় যে, জেনেবুঝে করে এমন নয়। নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি বা অন্যান্যদের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য ব্যক্তিবর্গ বিবিধ রাজনীতিক ধারণাভিত্তিক শব্দ প্রয়োগ করে। এরকম বহুলভাবে ব্যবহৃত কিছু শব্দ উদাহরণ হিসাবে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যেমন, ন্যায়, সাম্য, স্বাধীনতা, অধিকার, সাম্যবাদী, ফ্যাসীবাদী, উদারনীতিবাদ, সমাজতন্ত্রী প্রভৃতি। রাজনীতিক ধারণামূলক এই সমস্ত শব্দের ব্যাপক ব্যবহারের কারণে সমাজের সকলকেই অল্পবিস্তর রাজনীতিক চিন্তাবিদ হিসাবে বিবেচনা করা যায়।

দৈনন্দিন জীবনে এই সমস্ত রাজনীতিক ধারণাসমূহ শব্দের ব্যবহারের ব্যাপকতা, জনপ্রিয়তা ও পৌনপুনিকতা আছে। এই বিষয়ে দ্বিমতের অবকাশ নেই। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক অর্থে পদগুলি প্রয়োগ করা হয় না। বহু ক্ষেত্রেই এলোমেলো বা অর্থহীনভাবে ব্যবহার করা হয়। যেমন কমিউনিস্ট শব্দটি আজকাল আচার ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কমিউনিস্ট কাকে বলে? শব্দটি ব্যবহারকারীদের মধ্যে, সঠিক অর্থে অনেকের কাছেই তা অজানা। অনুরূপভাবে আবার সাম্যবাদী ও ফ্যাসীবাদীদের মধ্যে মূল্যবোধ, ধারণা ও বিশ্বাসগত ব্যবধান কোথায়? তেমনি আবার অধিকার স্বাধীনতা ও সাম্য নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উন্মাদনার অন্ত নেই। কিন্তু ‘অধিকার’ কথার অর্থ কি? অধিকারের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকা কী? ‘সকলে সমানাধিকারসম্পন্ন’—এ কথার অর্থ কী? অধিকার ও স্বাধীনতার মধ্যে সম্পর্ক কী? এ সমস্ত বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণার অভাব পদসমূহ ব্যবহারকারী অনেকের মধ্যেই পরিলক্ষিত হয়।


রাজনীতিক ধারণার গুরুত্ব

রাজনীতিক ধ্যান-ধারণা সম্পর্কে দ্বিবিধ বক্তব্য বর্তমান। একটি বক্তব্য নেতিবাচক এবং আর একটি বক্তব্য ইতিবাচক। নেতিবাচক বক্তব্যসমূহের মাধ্যমে রাজনীতিক ধারণার সীমাবদ্ধতা ও অসারতার দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। বিপরীতক্রমে ইতিবাচক বক্তব্যের মাধ্যমে রাজনীতিক ধারণার গুরুত্ব ও তাৎপর্যের পরিচয় প্রদান করা হয়েছে। যাইহোক, সকল রাজনীতিক চিন্তাবিদ রাজনীতিক ধারণা ও রাজনীতির মতাদর্শের উপর অভিন্ন গুরুত্ব আরোপের পক্ষপাতী নন।

বিরুদ্ধবাদীরা রাজনীতিক ধারণার সীমাবদ্ধতা ও অসারতা প্রতিপন্ন করার ব্যাপারেই বিশেষভাবে আন্তরিক। এ প্রসঙ্গে প্রথমে মার্কসাবাদীদের অবস্থান নিয়ে আলোচনা করা আবশ্যক। মার্কসবাদীরা সামাজিক শ্রেণীর পরিপ্রেক্ষিতে রাজনীতিকে ব্যাখ্যা করেন। তাঁদের অভিমত অনুযায়ী নির্দিষ্ট শ্রেণীসমূহের বিবিধ স্বার্থেরই অভিব্যক্তি ঘটে রাজনীতিক মতাদর্শসমূহের মাধ্যমে। মার্কসীয় দর্শন অনুযায়ী রাজনীতির ধারণাসমূহের নিজস্ব কোন অর্থ বা তাৎপর্য নেই। বস্তুগত ভিত্তিতেই ধারণাগুলি গড়ে উঠে। রাজনীতিক ধারণা তুলে ধরেন কিছু মানুষ। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের আর্থনীতিক ও শ্রেণীস্বার্থসমূহের আলোকেই রাজনীতিক ধারণার অর্থ অনুধাবন করা যায়। এ প্রসঙ্গে মার্কসীয় দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদী দর্শন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। অধুনা বিলুপ্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং অন্যান্য কমিউনিস্ট রাষ্ট্রে যাবতীয় বৌদ্ধিক অনুসন্ধান প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়েছে ও হয় দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদী দর্শন অনুযায়ী।

আর একদল বিরুদ্ধবাদী অন্য দিক থেকে রাজনীতিক ধারণাকে আক্রমণ করেছেন। এঁদের মতানুসারে রাজনীতিক ধারণা ও মতাদর্শসমূহ হল বিপণিবাতায়ন সজ্জা সদৃশ। রাজনীতিক জীবনের গভীর ও নবরূপ সত্যসমূহকে আড়াল করার উদ্দেশ্যে রাজনীতিক ধারণা ও মতাদর্শের ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। আচরণবাদীরাই এই বক্তব্যের সমর্থক হিসাবে পরিচিত। এই শ্রেণীর চিন্তাবিদদের মধ্যে অনেকে অনেক সময় এমন কথাও বলেন যে, রাজনীতি অনেকাংশ ক্ষমতার জন্য নির্লজ্জ সংগ্রাম হিসাবে প্রতিপন্ন হয়। তা যদি হয়, তা হলে রাজনীতিক ধারণাসমূহ হল জনসমর্থন ও জনসমর্থনের মাধ্যমে ভোট আদায়ের কৌশল বিশেষ। অর্থাৎ রাজনীতিক ধারণাসমূহ হল স্লোগান বা প্রচারসর্বস্ব বিষয় ছাড়া কিছু নয়।

রাজনীতিক ধারণা সম্পর্কিত উপরিউক্ত বিরূপ বক্তব্যসমূহই সব নয়। পৃথক প্রকৃতির পর্যালোচনাও আছে। রাজনীতিক ধ্যান-ধারণার অপরিসীম গুরুত্ব, ভূমিকা এবং এই ভূমিকার তাৎপর্য প্রসঙ্গেও আলোচনা আছে। এ বিষয়ে জন মেনার্ড কেইনস (John Maynard Keynes) এর The General Theory of Employment, Interest and Money শীর্ষক গ্রন্থে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা আছে। এই অর্থনীতিবিদের অভিমত অনুযায়ী অর্থনীতিবিদ এবং রাজনীতিক দার্শনিকদের ধ্যান-ধারণার দ্বারাই এই বিশ্বসংসার শাসিত হয়। এই শ্রেণীর চিন্তাবিদদের মতানুসারে, ধারণাসমূহ বিদ্যমান বাস্তব পরিস্থিতির ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার দ্বারা সীমাবদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত নয়; বরং মানুষজনের ক্রিয়াকর্মকে বিশ্বাস, ধ্যান-ধারণা ও মতবাদসমূহ প্রভাবিত করে। চূড়ান্ত বিচারে এই দুনিয়াটি শাসিত সারস্বত কলমচিদের দ্বারা। বিদ্বজ্জনের পণ্ডিতির প্রভাবকে রাজনীতিক ক্রিয়াকর্ম অতিক্রম করতে পারে না। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যে, অধুনা অবলুপ্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের সাম্যবাদী ব্যবস্থার রূপরেখা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়েছিল মনীষী মার্কস বা লেনিনের ধ্যান-ধারণার দ্বারা। আধুনিক কালের পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মৌলিক বিষয়াদি নির্ধারিত হয়েছে অ্যাডাম স্মিথ ও ডেভিড রিকোর্ডোর ধ্রুপদি আর্থনীতিক ভাবনা-চিন্তার দ্বারা।

রাজনীতিক ধারণা বা রাজনীতিক মতবাদ সম্পর্কিত উপরিউক্ত দুটি অবস্থান বা বক্তব্য পরস্পরবিরোধী। কোনটিই সর্বাংশে স্বীকার্য নয়। উভয় বক্তব্যই একপেশে এবং একদেশদর্শিতা দোষে দুষ্ট। রাজনীতিক ধারণাসমূহ কেবলমাত্র কায়েমি স্বার্থসমূহের বা ব্যক্তিগত উচ্চাশার নিষ্ক্রিয় প্রকাশ, এমন কথা সর্বাংশে সত্য নয়। রাজনীতিক ধারণা মানুষের ব্যক্তিগত জীবনধারা নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অর্থবহ ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ রাজনীতিক ধারণা রাজনীতিক ক্রিয়াকর্মকে উজ্জীবিত ও পরিচালিত করতে পারে। রাজনীতিক ধ্যান-ধারণা ও মতাদর্শ এবং ঐতিহাসিক ও বস্তুগত শক্তিসমূহের মধ্যে নিরস্তর পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে জীবনধারা পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। তাহলেই রাজনীতিক জীবনের সঠিক ও সম্যক পরিচয় পাওয়া যাবে, অন্যথায় নয়। প্রকৃত প্রস্তাবে রাজনীতিক মতবাদ এবং রাজনীতিক ক্রিয়াকর্ম অবিচ্ছেদ্যভাবে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। রাজনীতিক ধারণামাত্রেই একটি বিশেষ ঐতিহাসিক ও সামাজিক পরিস্থিতি-পরিমণ্ডলের মধ্যে গড়ে উঠে ও বিকশিত হয়। তদনুসারে সংশ্লিষ্ট রাজনীতিক ধারণার প্রকৃতি নির্ধারিত হয়। এ কথা অস্বীকার করা যাবে না যে, রাজনীতিক ধারণা আকাশ থেকে পড়ে না বা শূন্য স্থানে সৃষ্টি হয়।