“রমেশচন্দ্র দত্ত ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের সমালোচক” আলোচনা কর।

উত্তর: রমেশচন্দ্র দত্ত (১৮৪৮-১৯০৯) ছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিক এবং ঔপন্যাসিক। তিনি আর. সি. দত্ত নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন। ভারতীয়দের মধ্যে তিনিই প্রথম বিভাগীয় কমিশনার। দেশের স্বার্থে নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগানোর জন্য নয় বছরের মধ্যেই সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন। তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ১৮৯৯ সালে অনুষ্ঠিত ভারতীয় কংগ্রেস এর বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। তার লেখনীতে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোচনা করা হয়। তার মধ্যে প্রাধান্য পেয়েছিল অর্থনৈতিক প্রভাব।

তবে আর. সি. দত্তের প্রতিভা বিকশিত হয় উপন্যাসের মাধ্যমে। তার বঙ্গবিজেতা (১৮৭৪) ও মাধবী কল্পন (১৮৭৭) উপন্যাস দুটিতে ইতিহাসের পটভূমিকা থাকলেও তা রোমান্টিক কাহিনির উপন্যাস। কিন্তু মহারাষ্ট্র জীবনপ্রভাত (১৮৭৮) ও রাজপুত জীবনসন্ধ্যা (১৮৮৯) বিশুদ্ধ ঐতিহাসিক উপন্যাস। এ দুটি উপন্যাসে ইতিহাসের মূল বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। তাছাড়া রমেশচন্দ্রের সংসার (১৮৮৬) ও সমাজ (১৮৯৪), সামাজিক পারিবারিক উপন্যাসও উল্লেখযোগ্য। এ উপন্যাস দুটিতে নিম্নমধ্যবিত্ত ও গ্রাম্য পারিবারিক জীবন ও পল্লির চিত্র রূপায়িত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যে তার অবদান বাংলায় ঋগ্বেদ (১৮৮৫) এর অনুবাদ। ১৮৯৮ ও ১৮৯৯ সালে তিনি ইংরেজিতে যথাক্রমে রামায়ণ ও মহাভারত এর কাব্যানুবাদ করেন। তাই বলা যায়, তার উপন্যাস ও অনুবাদ উভয় সাহিত্যেই আধুনিক বাংলায় চমৎকার ভাব প্রকাশ পেয়েছে।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।