প্রশ্নঃ ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও ম্যানেজিং এজেন্ট এর পার্থক্য কি?

ভূমিকাঃ কোন কোম্পানির মূল চালক হলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা ম্যানেজিং ডাইরেক্টর। ইংরেজিতে একে Managing Director বলে। আবার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিয়ন্ত্রণে থেকে ব্যবস্থাপনা প্রতিনিধিও কোম্পানির অগ্রগতি বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তবে যে কোন ব্যক্তি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা প্রতিনিধি হতে পারলেও যে কোন ব্যক্তি ব্যবস্থাপনা পরিচালক হতে পারেন না।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (Managing Director) কাকে বলেঃ কোম্পানি আইনের ২(১-এল) ধারা অনুযায়ী-

কোম্পানির পরিচালকদের মধ্যে যার উপর কোম্পানি ব্যবস্থাপনার মূল দায়িত্ব বা ক্ষমতা অর্পণ করা হয় তাকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা ম্যানেজিং ডাইরেক্টর বলে।

এই ক্ষমতা বিভিন্নভাবে অর্পণ করা যায়, যেমনঃ সংঘ বিধির বিধান দ্বারা, কোন চুক্তি দ্বারা, সাধারণ বা পরিচালকদের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে ইত্যাদি।

ম্যানেজিং এজেন্ট (Managing Agent) বা ব্যবস্থাপনা প্রতিনিধি কাকে বলেঃ কোম্পানি আইনের ২(১-কিউ) ধারা অনুযায়ী-

নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে এক বা একাধিক ব্যক্তি অথবা এক বা একাধিক প্রতিষ্ঠানের সাথে কোন কোম্পানির যাবতীয় ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব প্রদান করে কোন চুক্তি হলে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ম্যানেজিং এজেন্ট বলে।

ম্যানেজিং এজেন্ট কোম্পানির পরিচালনা পরিষদের নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধানে থেকে কার্য সম্পাদন করে।

ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও ম্যানেজিং এজেন্ট এর পার্থক্যঃ নিম্নে ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) ও ম্যানেজিং এজেন্ট (ব্যবস্থাপনা প্রতিনিধি এর পার্থক্য উল্লেখ করা হলোঃ

পার্থক্যের বিষয়

ম্যানেজিং ডিরেক্টর বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক

ম্যানেজিং এজেন্ট বা ব্যবস্থাপনা প্রতিনিধি

(১) সংজ্ঞাগত পার্থক্য

কোম্পানির পরিচালকদের মধ্যে যার উপর কোম্পানি ব্যবস্থাপনার মূল দায়িত্ব বা ক্ষমতা অর্পণ করা হয় তাকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা ম্যানেজিং ডাইরেক্টর বলে।

নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে এক বা একাধিক ব্যক্তি অথবা এক বা একাধিক প্রতিষ্ঠানের সাথে কোন কোম্পানির যাবতীয় ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব প্রদান করে কোন চুক্তি হলে উক্ত ব্যক্তি বা 

প্রতিষ্ঠানকেম্যানেজিং এজেন্ট বলে। 

(২) প্রতিশব্দগত পার্থক্য

ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে ইংরেজিতে Managing Director বলে। 

ম্যানেজিং এজেন্টকে ইংরেজিতে Managing Agent বলে।

(৩) মেয়াদগত পার্থক্য

ম্যানেজিং ডিরেক্টর এর সর্বোচ্চ মেয়াদ ৫ বছর। 

ম্যানেজিং এজেন্ট এর সর্বোচ্চ মেয়াদ ১০ বছর।

(৪) নিয়োগগত পার্থক্য

কোন ব্যক্তিকেই শুধু ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ করা যায়।

ব্যক্তির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানকেও ম্যানেজিং এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করা যায়।

(৫) অধীনগত পার্থক্য

ম্যানেজিং এজেন্ট, ম্যানেজিং ডিরেক্টর এর অধীন থাকেন। 

ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ম্যানেজিং এজেন্ট এর অধীন থাকেন না।

(৬) পরিচালক নিয়োগগত পার্থক্য 

ম্যানেজিং ডিরেক্টর পরিচালক নিয়োগ করতে পারেন না। 

ম্যানেজিং এজেন্ট এক-তৃতীয়াংশ পরিচালক নিয়োগ করতে পারেন।

(৭) শেয়ারগত পার্থক্য 

ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে কোম্পানির নির্দিষ্ট পরিমাণ শেয়ারের মালিক হতে হয়।

ম্যানেজিং এজেন্টকে কোম্পানির শেয়ারের মালিক হতে হয় না। 

(৮) স্বাধীনতাগত পার্থক্য 

কাজের ক্ষেত্রে ম্যানেজিং ডিরেক্টর কোন স্বাধীনতা ভোগ করেন না। 

কাজের ক্ষেত্রে ম্যানেজিং এজেন্ট বিশেষ স্বাধীনতা ভোগ করেন। 

(৯) অর্থ-সংস্থানগত পার্থক্য

ম্যানেজিং ডিরেক্টর কোম্পানি পরিচালনার জন্য কোন অর্থের সংস্থান করতে পারেন না।

ম্যানেজিং এজেন্ট কোম্পানি পরিচালনা জন্য কোন অর্থের সংস্থান করতে পারেন।

উপসংহারঃ একটি কোম্পানিতে ম্যানেজিং ডিরেক্টর বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ম্যানেজিং এজেন্ট বা ব্যবস্থাপনা প্রতিনিধি উভয়ে গুরুত্ব পূর্ণ। যার যার অবস্থানে থেকে তারা কোম্পানির উন্নয়নে কাজ করেন। তবে ম্যানেজিং এজেন্টকে ম্যানেজিং ডিরেক্টরের অধীনে থেকে কাজ করতে হয়।