আমি আপনাদের জন্য মোবাইলে ভালো ছবি তোলার বেশ কিছু টিপস নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আমি আশা করি আমার এই আলোচনা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। আপনারা যারা মোবাইলে ভালো মানের ছবি তুলতে চান তারা আমার লেখা এই টিপস গুলো ফলো করতে পারেন –

বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ আর এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল যাদের একটি স্মার্টফোন নেই। আর স্মার্টফোন দিয়ে সবাই এখন ছবি তোলার চেষ্টা করে বা তুলে থাকে। কিন্তু সবাই ভালো ভাবে ছবি তুলতে পারে না। মোবাইলে ভালো ছবি তোলার ৩০ টি নিয়ম বা টিপস সম্পর্কে জানা একান্ত প্রয়োজন। আপনি মোবাইলে ভালো ছবি তুলতে হলে যে নিয়মগুলো আপনাকে মেনে চলতে হবে তা নিচে আলোচনা করা হলো- সঠিক আলোতে ছবি তুলুন

ছবি তোলার জন্য সঠিক আলো গুরুত্বপূর্ণ। ছবি তোলার সময় আপনাকে আলোর প্রতি অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। ছবি তোলার জন্য স্বাভাবিক আলো অনেক ভালো। আবার অনেক সময় স্বাভাবিক আলো অন্য বস্তুর ওপর ছায়া ফেলতে পারে। আপনি আপনার মোবাইলের অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্য নিয়ে আপনার মোবাইলের ক্যামেরার আলোর ঠিক করে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি দিনের বেলাতেও ফ্লাশ ব্যবহার করতে পারেন কারণ কম আলোতে ছবি ভালো হয় না।

তাই আপনি ছবি তোলার সময় সঠিকভাবে আলোর দিক নির্ধারণ করুন। আপনি আলোর বিপরীত দিক থেকে আপনার মোবাইলের অবজেক্ট রাখুন এতে আপনার মোবাইলের ছবি হুয়াইট ব্যালেন্স ঠিক করে নিতে পারবেন। আর এতে করে আপনি আপনার মোবাইল দিয়ে ভালো ছবি তুলতে পারবেন।

এমন অনেকেই আছেন যাদের হাত কাঁপে। বিশেষ করে কোন কাজ বা ছবি তোলার সময় হাত কাঁপতে পারে। আর যদি হাত কাঁপে তাহলে ছবি ভালো হবে না আবার অনেক শীতের কারনে হাত কাঁপতে পারে আর হাত কাঁপলে ছবি তোলা ঠিক নয়। আপনি আগে আপনার হাত স্থির করুন তারপর ছবি তুলুন কারণ ছবি তোলার সময় হাত এবং মোবাইলের ভারসাম্য ঠিক রাখা জরুরী। আপনি এই সব দিক বিবেচনা করে তারপর ছবি তুলুন তবেই ভালো ছবি পাবেন।

আমরা সাধারণত স্মার্টফোন দিয়ে ছবি তুলি। আর স্মার্টফোনগুলো অবশ্যই বেশ কিছুটা বড় হয় আর মোবাইল বড় হওয়ার কারণে আমরা মোবাইল পকেটে বা ব্যাগে রাখি। মোবাইলের পেছনে কভার ব্যবহার করা হলেও সাধারণ ক্যামেরার উপর অংশ ফাঁকা থাকে। তাই ক্যামেরার লেন্সে অনেক সময় ধুলাবালি জমে ও বিভিন্ন প্রকার দাগ পড়ে যায়।

যার কারনে ছবি তোলার সময় আর ছবি ভালো হয় না। তাই আপনি যখন মোবাইলে ছবি তুলবেন তার আগে অবশ্যই মোবাইলের লেন্স নরম সুতি কাপড় বা নরম টিসু দিয়ে মুছে নিবেন। তাহলে দেখবেন আপনার ছবি কত সুন্দর হয়।

বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। আর এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে আপনি আপনার যেকোনো ইস্মার্ট ফোন মডেলের জন্য আলাদা করে এক্সটা লেন্স কিনতে পাবেন। আপনি আপনার পছন্দ মত এবং মোবাইলের মডেল অনুযায়ী ফিশ আইলেন্স বা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যদি মোবাইল ফটোগ্রাফি করতে চান তাহলে অবশ্যই এই লেন্স কিনতে পারেন। তাহলে আপনি একেবারে ঝকঝকে ছবি তুলতে পারবেন।

বিভিন্ন দিক বা কোন থেকে ছবি তুললে ছবি আকর্ষণীয় হবে। আপনি যদি আপনার পছন্দ মতে শর্ট নিতে না পারেন বা আলো নিয়ে আপনার বিশেষকিছু করার থাকবে না। তখন আপনি বিভিন্ন ফোন থেকে ছবি তোলার চেষ্টা করতে পারেন। যখন আপনি একটি বিষয়ে একাধিক ছবি তুলবেন তখন অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন কোণ নির্বাচন করে ছবি তুলতে হবে।

এতে করে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত ছবিটি সঠিকভাবে পেয়ে যাবেন। আর বিভিন্ন কোণ নির্বাচন করে ছবি তুললে বিভিন্ন স্টাইলে ছবি তোলা যায় এবং ছবিও ভালো হয়। এছাড়া বিভিন্ন কোণ থেকে ছবি তোলা হলে দৃশ্য ও পরিবর্তন দেখাবে যা আপনার ভালো লাগবে।

মোবাইলে ছবি তোলার সময় সর্বোচ্চ রেজুলেশন ব্যবহার করে ছবি তোলা উচিত তাহলে ছবি ভালো তোলা যায়। আপনার স্মার্টফোনের রেজুলেশন বাড়ানো বা কমানোর অপশন আছে কিনা তা দেখে নিন। তারপর রেজুলেশন বড় করে ছবি তুলুন। আপনার মোবাইলে রেজুলেশন যত বড় হবে আপনার ছবিও ততই বড় হবে এবং ছবিতে যাবতীয় কিছু ধরা পড়বে। আর এতে আপনার ছবি অনেক ভালো হবে। তাই আপনি আপনার মোবাইলে ঝকঝকে ও পরিষ্কার ছবি তোলার জন্য অবশ্যই রেজুলেশন বাড়িয়ে তারপর ছবি তুলবেন।

এমন অনেক মানুষ আছেন যারা সোজাসুজিভাবে ছবি তুলতে পারেন না তাদের উচিত গ্রীন লাইট ব্যবহার করা। আমরা যখন ছবি তুলতে যাই তখন ছবি একটু আধটু বেঁকে যেতে দেখা যায় আর এই আঁকাবাঁকা ছবি যদি পরিহার করতে চান এবং সুন্দর ও সোজা ছবি তুলতে চান তাহলে অবশ্যই গ্রীন লাইন ব্যবহার করে তারপর ছবি তুলুন। এখন বেশিরভাগ স্মার্টফোনের ক্যামেরা তেই একটা ফ্ল্যাটসন থাকে যাকে গ্রীন লাইট বলা হয়।

আপনি এই লাইনগুলো কাটাকুটি খেলার ছকের মত দেখতে পাবেন। এই গ্রেট লাইট থার্ড ও রুল কমপোজিশনের কাজ করে থাকে। আর এই গ্রেট লাইট ব্যবহার করে আপনি ছবি সঠিকভাবে তুলতে পারবেন। আর আপনার মোবাইলে যদি এটা সেট করা না থাকে তাহলে আপনি এটি সেটিং থেকে একটিভ করে নিয়ে সঠিকভাবে ছবি তুলতে পারবেন।

গোল্ডেন আওয়ার বা ব্লুআওয়ারে ছবি তোলা

সকালে সূর্য ওঠার সময় এবং বিকেলে সূর্য ডোবার সময় সূর্যের আলো হলুদ বর্ণ ধারণ করে আর এই হলুদ আলোকে বলা হয় গোল্ডেন আওয়ার। এই সময় সূর্যের আলো সোনালী আকার ধারণ করে আর সূর্য উঠার সময় যে সোনালী আলো বিকিরীত হয় এই সময় ছবি তোলার জন্য সঠিক সময়। এছাড়া সূর্য যখন উদয় হয় তার ঠিক আগের মুহূর্ত এবং সূর্য যখন অস্ত যায় বা পাটে নামে তখন বলা হয় ব্লু আওয়ার।

আর এই সময় ছবি তুললে ছবি সবচেয়ে ভালো হয় কারণ ছবি তোলার জন্য অতিরিক্ত আলো বা অন্ধকার কোনটি উপযুক্ত নয়। আপনি যদি সঠিক ভাবে বুঝতে না পারেন তাহলে আপনার মোবাইলের প্লে স্টোর অপশনে যান এবং এখনই গোল্ডেন আওয়ার নামে সফটওয়্যার ডাউনলোড করুন।

ক্যামেরায় সঠিকভাবে ফোকাস নেওয়া

আপনি যদি আপনার মোবাইলের মাধ্যমে সঠিক ভালো ছবি পেতে চান তাহলে এই স্মার্টফোনের ক্যামেরাতে অটোফোকাস ফাংশন টা বুঝে নিন। কারণ ফোকাস ফাংশনটা যথেষ্ট ইউজার ফ্রেন্ডলি যা আপনি আপনার মোবাইলের ক্যামেরার মাধ্যমে বুঝে নিতে পারবেন। আর আপনি যদি সঠিকভাবে ছবি পেতে চান তাহলে স্কিনের ওপর ট্যাপ করে ম্যানুয়াল ফোকাস নিন।

তাহলে দেখবেন আপনার ছবি হবে অনেক সুন্দর। আপনি যদি আপনার মোবাইলে এই অংশটি টেপ করেন তাহলে আপনার মোবাইলের আইফোনের একটি রাউন্ড বা স্কয়ার আইকন আসবে এবং আপনার

ছবির উপর সবচেয়ে বেশি স্পষ্ট আকারে তা দেখা যাবে।

জুম পরিহার করে ছবি তোলা

আমরা দূরে ছবি তোলার সময় জুম ব্যবহার করে ছবি তুলি। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে জুম ব্যবহার করে ছবি তুললে সেই ছবি ফেটে যায়। একটি ধারণা হতে পারে কিন্তু এটি কখনোই সঠিক ধারণা নয় আপনি সবসময় চেষ্টা করবেন কাছাকাছি থেকে ছবি তোলার। তারপরও অনেক সময় দূরের ছবি তোলার প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে আপনি যতটা কাছে যাওয়া যায় ঠিক ততটাই কাছে গিয়ে তারপর জুম করে ছবি তুলবেন। জুম করে ছবি তুললে ছবিতে প্রচুর পরিমাণে আই ও এ ও দেখা যায় তাই আপনি ভালো ছবি পেতে জুমকে এড়িয়ে ছবি তুলতে পারেন।

ছবির বিষয়বস্তু নির্বাচন করা

ছবি তোলার সময় ছবির বিষয়বস্তু নির্বাচন করা জরুরী কারণ একটা ছবিতে অনেকগুলো বিষয় রাখা ঠিক নয়। যারা পেশাদার ফটোগ্রাফার তাদের মতে কোন ছবি তুলতে গেলে ছবির এক তৃতীয়াংশ ফাঁকা রাখতে হয়। আর আপনি যদি আপনার ছবি আকর্ষণীয় করতে চান তাহলে আপনি ছবি তোলার সময়  বিষয় বস্তু এমনভাবে নির্বাচন করুন যাতে করে ছবি তোলার সময় আপনার ছবির জায়গা ফাঁকা থাকে।

আপনি যদি আপনার ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো করতে চান তাহলে আপনাকে এই টিপস মেনে তারপর ছবি তুলতে হবে। আপনি ছবি তোলার পরেও ছবি এডিটিং করে নিতে পারেন তবে এক্ষেত্রে আপনাকে কোন এডিটিং সফটওয়্যার বা এডিটিং অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। এরপর আপনি ছবি ফিল্টার করে ছবির ব্রাইটনেস সহ ছবির সকল প্রকার এডিটিং কাজ করতে পারবেন।

শুটিং মোড পরীক্ষা করা

কোন ক্ষুদ্র বস্তুর ছবি যদি পরিষ্কার ভাবে তুলতে চান তাহলে আপনি ম্যাক্রো মোডে ছবি তুলতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি যদি প্রোটেট বার ল্যান্ডস্কেপ মোডে ছবি তুলতে চান তাহলে ক্যামেরার এই অ্যাপ্লিকেশন মোডটি পাবেন। আপনি ছবি তোলার সময় ম্যাক্রো মোড পরীক্ষা করে নিবেন।

যদিও কোন কোন মোবাইলে ক্যামেরা অ্যাপ্লিকেশনের সহায়কভাবে মাইক্রো মোড বন্ধ হয়ে যায়। আবার কোন কোন মোবাইলে ম্যাক্রো মোড বন্ধ করে দিতে হয়। আপনি আপনার মোবাইলে ম্যাক্রো মোড ছাড়া ও পাবেন ফ্লরোসেন্ট এবং ডেলাইট।

ছবি তোলার সময় সঠিক পোস দিতে হবে

এমন অনেক লোক আছেন যারা ছবি তোলার সময় সঠিক পোস দিতে পারেন না। আবার অনেকেই আছেন যারা ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালে মনে হয় শরীরে কোন শক্তি নেই আঁকাবাঁকা হয়ে দাঁড়ান। আবার এমন অনেক লোক আছেন যাদের দেখলে মনে হয় বিশ্বের সকল দুঃখ যেন তার ভিতরে লুকিয়ে আছে। ভালো ছবি পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং সঠিকভাবে পোস দেওয়া শিখতে হবে।

ফিল্টার ব্যবহার করে ছবি না তোলা

এমন অনেকেই আছেন যারা ছবি তোলার সময় ডি ফর ক্যামেরা ব্যবহার করেন। তার পরিবর্তে এডিটিং বিভিন্ন থার্ড পার্টি কোন ক্যামেরা ব্যবহার করে থাকে। আর এই ক্যামেরার ব্যবহার করার প্রধান কারণ হলো এইসব মোবাইলের ক্যামেরার ফিল্টার ব্যবহার করে যদি ছবি তোলা যায়। আমরা ফিল্টার দিয়ে ছবি তুলি কিন্তু একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে আর তা হল ফিল্টার করে ছবি তোলা হলে যদি পরে কোন কাজে আসল ছবির প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা আর সেই ছবি পাই না।

ছবি তোলার সময় ফিল্টার ব্যবহার করা যাবে না। আপনি সাধারণভাবে ছবি তোলার পর সেই ছবি ইচ্ছে মত ফিল্টারিং করতে পারবেন। আপনি আপনার মনের মতো করে ছবি সাজিয়ে নিতে পারবেন তাই ছবি তোলার সময় অবশ্যই ফিল্টার করা থেকে দূরে থাকুন। আর তুলতে থাকুন ঝকঝকে পরিষ্কার ছবি।

নেগেটিভ ও পজেটিভ স্পেস রাখা

ফটোগ্রাফির সময় রুলস অফ স্পেস সেগমেন্টের অংশ হলো নেগেটিভ ও পজেটিভ স্পেস। এই রুলস সম্পর্কে মানুষ জানার আগেই একটা প্রয়োগ করে এবং তা নিজের অজান্তেই তা প্রয়োগ করে থাকে। কিন্তু মনে রাখতে হবে এক ধরনের আর্ট হল ফটোগ্রাফি। আর আর্ট এর একটা বড় অংশ হলো পজেটিভ নেগেটিভ স্পেস।

কোন ছবির সাবজেক্টের যে দিকে তাকিয়ে থাকে বা নির্দেশ করে সেই দিকে বেশ কিছু ফাঁকা জায়গা রাখা হয়। আর একে নেগেটিভ স্পেস বলা হয় নেগেটিভ স্পেস বলতে আমরা বুঝি সাবজেক্ট বাদে ফাঁকা জায়গা যেমন খেলার, মাঠ, নদী, আকাশ এগুলো হলো ছবি তোলার জন্য আদর্শ নেগেটিভ স্পেস।  আপনি এভাবে ছবি তুলতে পারেন।

যেভাবে মোবাইল ধরা উচিত

ছবি ভালো পেতে হলে মোবাইলে ভালোভাবে আগে ছবি তোলা জানতে হবে। কিন্তু অনেকেই এই বিষয়গুলো মাথায় না রেখে নিজের ইচ্ছামত ছবি তোলে। নতুন মোবাইল হলে তো কোন কথাই নেই। কিন্তু নতুন মোবাইল আগে ভালোভাবে ধরতে জানতে হবে এবং ছবি তোলা শিখতে হবে তাহলে মোবাইলে ছবি ভালো হবে। তবে মোবাইলে ভালো ছবি পেতে হলে মোবাইলে আড়াঁআড়ি ভাবে ছবি তুলতে হবে।

রেসপন্স সময় সম্পর্কে ধারণা

আমরা যখন স্মার্ট ফোনে ছবি তুলি তখন মোবাইলের শাটার বাটনে চাপ দেয়। আর এই শাটার বাটন চাপা আর ছবি উঠানোর মধ্যে কিছুটা পার্থক্য থাকে। আপনি খেয়াল করে দেখবেন শাটার চাপার কিছুক্ষন পর ছবি উঠে। আর এই সময় টুকু অপেক্ষা করে ছবি তুলুন তাহলে আপনার ছবি অনেক ভালো হবে।

এক্ষেত্রে আপনি পূর্বের তোলা ছবি নিয়ে পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পারেন। আর যদি দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন আপনার মোবাইলের সঠিক রেসপন্স সময়টুকু। এতে করে আপনি যখন ছবি তুলবেন তখন অবশ্যই কিছু সময় অপেক্ষা করবেন তাহলে দেখবেন আপনার ছবি একজন পেশাদার ফটোগ্রাফার এর মতই হবে।

বিভিন্ন পার্স এক্টিভ রাখা

পার্স  একটিভ হলো ছবির গভীরতা কে ফুটিয়ে তোলা। আরো সহজ ভাবে বলতে গেলে বলা যায় কোন ছবির পার্স  একটিভ হলো ছবির মধ্যে থাকা ব্যাকগ্রাউন্ড ও সাবজেক্ট এর মধ্যে দূরত্ব। আর আপনি যখন অদ্ভুত এঙ্গেলে বা অন্যরকম করে ছবি তোলেন তখন আপনার ছবিগুলো সাবজেক্টের ভিত্তিতে ব্যাকগ্রাউন্ড এর সাথে দূরত্ব ও গভীরতায় একটি দৃষ্টি ভ্রম বা ইলোশান তৈরি করে। তখন আপনি আপনার সাবজেক্টকে দাঁড় করিয়ে যদি টপ এঙ্গেলে ছবি তুলেন তাহলে আপনি সেই ছবিতে পেতে পারেন এই পার্সপেক্টিভ।

ভিউ পয়েন্ট

সাধারণত ভিউ পয়েন্ট বলতে বোঝানো হয় ছবি তোলার সময় ক্যামেরাটিকে যে স্থানে রেখে সাবজেক্টের এর ছবি তোলা হয়। আপনি অসংখ্য ভিউ পয়েন্ট পাবেন। এক একটা সাবজেক্ট এর ছবি তোলার জন্য প্রত্যেক সাবজেক্টে একেক জন একেক ভিউ পয়েন্ট থেকে ছবি তোলার চেষ্টা করে থাকে। এক্ষেত্রে কোন কোন ভিউ পয়েন্ট থেকে একটি সাবজেক্ট দেখতে একটু বেশি ভালো লাগে আবার কনটা ভিউ পয়েন্ট ভালো লাগে না।

আবার এটা আপনি সময়ের সাথে সাথে বুঝতে পারবেন। এক্ষেত্রে একজন ফটোগ্রাফারের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো কোন সাবজেক্ট পয়েন্ট থেকে ছবি উঠালে ভিউ পয়েন্ট ভালো হবে তা তিনি ভালো জানেন। আপনিও যদি দীর্ঘ দিন ছবি তোলেন তাহলে আপনিও সঠিক ভিউ পয়েন্ট নির্বাচন করতে পারবেন কারণ ভিউ পয়েন্ট যত ভালো হবে আপনার ছবিও ততই ভালো হবে।

এপ্লিকেশনের সাহায্য নেওয়া

আপনি অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্য নিয়ে আপনার আশানুরূপ উপর ছবি তুলতে পারেন। আবার যদি আপনার সময় খুব দ্রুত শেষ হয়ে যেতে থাকে তাহলে ও আপনি এই অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্য নিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে ক্যামেরার ক্রেডি উইন্ডোজের জন্য লেজি লেন্স, স্কেচ ক্যামেরা,  সুপার ক্যামেরা ব্যবহার করতে পারেন।

আবার আইফোনের জন্য ভ্যাসকে ক্যাম্প, ফটোসিনথ, ক্যামেরা প্লাস, সাইক্লোরিক্যাল ব্যবহার করতে পারেন। আবার এন্ড্রয়েড ফোনের জন্য বেস্ট এইচডিআর,  ক্যামেরা ৩৬০ এলিমেন্ট, স্ন্যাপ ক্যামেরা এইচডি আর ব্যবহার করতে পারেন। এই ক্যামেরা গুলো আপনার ছবিকে সুন্দর ও ঠিকঠাক করে দিতে পারে। গবেষকদের পরামর্শ হলো ছবি তোলেন আর ভিডিও করেন আপনি আপনি ফোনটি সবসময় আড়াআড়ি ভাবে ধরবেন।

তবেই আপনার ছবি ভালো মানের হবে। ফোন কিনে আপনি ছবি তুলতে বা ভিডিও করতে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন না। আগে ফোন সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানুন তারপর ছবি তুলুন ও ভিডিও করুন স্মার্ট ফোন। যদি আপনি যদি ফোন সঠিকভাবে ধরতে পারেন তাহলে আপনি ভালো মানের ছবি তুলতে পারবেন।

ক্যামেরার মোড পরীক্ষা করা

আমরা সবাই মোবাইলে ছবি তুলতে পছন্দ করি কিন্তু সবসময় আমরা মোবাইলে বড় ছবি তুলি না ছোট ছবিও তুলে থাকি। এক্ষেত্রে আমাদের ছোট ছবির প্রয়োজন হলে যা করতে হবে তা হল – যখন আপনার কোন ছোট বা ক্ষুদ্র বস্তুর ছবি তোলার প্রয়োজন হবে তখন আপনি ক্যামেরার মোড অপশন পরীক্ষা করে তারপর ছবি তুলবেন। আপনি যদি মোড পরীক্ষা করে ছবি না তোলেন তাহলে কাঙ্খিত ছবি আপনি কখনোই তুলতে পারবেন না।

লো লাইট

লো লাইট বলতে অল্প আলো বোঝায় একথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু এখন প্রযুক্তির যুগে মোবাইলের সঠিক ব্যবহার জানার কারণে লো লাইট ও ভালো ছবি তোলা সম্ভব হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে তারপর ছবি তুলতে হবে। যেমন আপনাকে সঠিক এক্সপোজার করতে হবে যদি আপনি লো লাইট ব্যবহার করে ছবি তুলতে চান এক্ষেত্রে আপনাদের যাদের মোবাইলে এক্সপোজার নিয়ন্ত্রণ করার ফিচার নেই তারা অবশ্যই প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করুন।

ওপেন ক্যামেরা নামক অ্যাপ্লিকেশনটি আপনার প্রয়োজনীয় সকল ধরনের অ্যাপ এ পেয়ে যাবেন। মোবাইলে ছবি তোলার সময় অবশ্যই আপনাকে মাথায় রাখতে হবে মোবাইলের সব অপশন যেন আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকে। আপনি যদি অটোমোড চালু করেন তাহলে আপনার মোবাইলে ছবির মান খারাপ হয়ে যেতে পারে।

মোবাইলের শাটার সর্বোচ্চ করা

মোবাইলে যদি আপনি ভালো ছবি পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে আপনার মোবাইলের সাটার সর্বোচ্চ করে দিন। এতে করে লেন্স দিয়ে আলো সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে যেতে পারবে। আর যদি আপনাদের কারো মোবাইলে অপশন থাকে তাহলে অবশ্যই সেটা চালু করে দিবেন। আর এতে করে আপনার ছবির ডিটেল নষ্ট হবে না। আপনার ছবিটি লাগবে শার্প। এছাড়াও আপনি ট্রাইপড ব্যবহার করতে পারেন যদি আপনার মোবাইলে সিস্টেম না থাকে।

ছবিতে লিডিং লাইনের ব্যবহার

আমরা মোবাইলে সবাই ছবি তুলতে পারি কিন্তু ছবিকে আকর্ষণীয় ভাবে তুলতে পারিনা। তাই মোবাইলে আকর্ষণীয় ভাবে ছবি তুলতে হলে আমাদের যা করতে হবে তা হল – যা আমাদের ছবিগুলোকে আকর্ষণীয় করে তোলে তাকে আমরা লিডিং লাইন বলি। এতে দুই ধরনের স্ট্রেট বা সার্কুলার পেয়ে থাকে আপনি ছবি ওঠার জন্য সিঁড়ি, ঘন বন, রাস্তা,  রেললাইন নির্বাচন করতে পারেন। এগুলো আপনার ছবির গভীরতাকে বৃদ্ধি করবে এবং ছবিকে সুন্দর করে তুলবে।

ক্যান্ডিড ছবি নেওয়া

আমরা সবাই ছবি তুলতে পছন্দ করি আর ছবি তোলার সময় একেক জন একেক রকম ভাবে পোস দিয়ে থাকে। কোন একটি বিশেষ মুহূর্তকে ফ্রেমে বন্দী করে রাখার নামই হলো ছবি। অনেকেই পোস দিয়ে ছবি তোলে কিন্তু পোস দিয়ে ছবি তোলার চাইতে ক্যান্ডি ছবিতে আসল মজা পাওয়া যায়। এর কারণ ক্যান্ডি ছবি তোলার সময় আপনি একদম রিয়েল অবস্থাতে ছবি তুলবেন তাহলে ছবিগুলো অনন্য মনে হবে।

মোবাইল টাইপডের  ব্যবহার

আপনি ব্যালেন্স ও স্ট্যান্ডিং শট নিতে ক্যামেরা টাইপড এর মত  মোবাইল ট্রাইপড নিতে পারেন। আপনি যদি অন্যরকম পদ্ধতিতে ছবি তুলতে পছন্দ করেন তাহলে আপনি বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে ছবি তুলতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার মোবাইলে লো লাইট থাকলেও আপনি ভালো ছবি পাবেন।

ডিভাইসের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে অবগত হওয়া

আমরা যারা মোবাইলে ছবি তুলি তাদের মনে হয় মোবাইলে ছবি তোলার জন্য অনেক ভালো এবং দামি মোবাইল গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু আমাদের এই ধারণা সঠিক নয়। কারণ ভালো ছবি তোলার জন্য দামি মোবাইল তেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। তবে আমাদের একটি বিষয় মনে রাখতে হবে আর তা হলো প্রত্যেকটা ডিভাইসের একটি নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা থাকে যেমন ধরুন, অনেক মোবাইলের ক্যামেরা আছে যে ক্যামেরা তে আপনি অল্প আলো দিয়েও ভালো ছবি উঠাতে পারবেন।

আবার এমন অনেক মোবাইল আছে যেখানে ক্যামেরা দেখতে ভালো কিন্তু আপনার ছবি ভালো আসবে না। তাই যে কোন ডিভাইস কমদামী বা বেশি দামি হোক এ নিয়ে হতাশায় ভুগবেন না বরং প্রতিটি ডিভাইসের একটি নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা আছে আপনাকে এটা মাথায় রাখতে হবে। তাই ভালো ছবি তোলার জন্য আপনাকে অবশ্যই ছবি তোলার ব্যাপারে এবং আপনার ডিভাইসের ব্যাপারে মনোযোগী হতে হবে।

যথাসম্ভব ফ্ল্যাশ এবং জুম ব্যবহার না করা

ছবি তোলার সময় আমাদের অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে ছবি দেখতে যেন প্রাকৃতিক হয়। আর অনেকেই দূর থেকে ছবি তোলেন এবং এগুলোকে জুমের মাধ্যমে কাছে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন আর এই জন্য ছবি তোলার সময় আপনার এই ছবিগুলো তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যটা হারায় এবং এর মধ্যে ধরা পড়ে কৃত্রিম কিছু বিষয়। আবার অনেকেই অন্ধকারেও ফ্লাশের মাধ্যমে ছবি তুলেন আর ফ্ল্যাশ ব্যবহার করে ছবি তুলে ছবিগুলো তার পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় আলো পায় না।

যার কারণে ছবিতে যে নির্দিষ্ট আলো প্রয়োজন সেগুলো সে নিতে পারে না যার কারণে ছবি তোলার পরে ছবিগুলো আর দেখতে ভালো লাগে না। এজন্য যদি সম্ভব হয় তাহলে অন্ধকারে ছবি তোলার আগে আপনাকে অবশ্যই ছবি তোলার স্থানে আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। তবে আপনি আপনার ছবিগুলো প্রাকৃতিকভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন।

ছবি তোলার সময় পরিবেশকে কাজে লাগানো

ছবি তোলার সময় আপনাকে একটি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে এবং আপনাকে মেন্টালি প্রিপারেশন নিয়ে রাখতে হবে যে আপনি সবসময় অনুকূল পরিবেশ পাবেন না আপনি প্রতিকূল পরিবেশের সম্মুখীন হতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই একটু কৌশলী হতে হবে তাহলেই আপনি অনুকূল পরিবেশ না পেলে ও প্রতিকূল পরিবেশে সুন্দর ছবি উঠাতে পারবেন। ধরুন আপনি ছবি তুলতে চাচ্ছেন একটি ভালো আবহাওয়াতে আর সে সময় বৃষ্টি চলে এলো

তাহলে আপনার ছবি তোলার পরিকল্পনা আপনি বাতিল করে ফেললেন তাই আপনাকে মনে রাখতে হবে যে বৃষ্টি এলেও আমি এই বৃষ্টিকে কাজে লাগিয়ে অন্যভাবে ছবি তুলব যাতে করে এই ছবিটি আরো বেশি সুন্দর লাগে এবং সুন্দর হয়। আবার মনে করুন আপনি কোন ফাঁকা জায়গায় ছবি উঠাবেন এমন সময় অনেক লোক সেখানে জমা হলো তাহলে আপনাকে অবশ্যই লোকজনকে দিয়ে কিভাবে ভিড়ের মধ্যে ভালোভাবে ছবি তোলা যায় এবং সেই ছবিকে প্রাণবন্ত করে তোলা যায়।

এই বিষয়গুলো আপনাকে অবশ্যই ভাবতে হবে এবং তা কাজে লাগাতে হবে। মনে রাখবেন, প্রতিকূল পরিবেশে সব কিছু করা সম্ভব নয় আর যে প্রতিকূল পরিবেশকে কাজে লাগাতে পারে সেই আসল জ্ঞানী মানুষ । তাই ছবি তোলার সময় অবশ্যই আপনি পরিবেশকে কাজে লাগাবেন।

ছবির মাধ্যমে গল্প ফুটিয়ে তোলা

এমন অনেক মানুষ আছেন যারা ছবি তোলার সময় চিন্তা-ভাবনা না করেই ছবি তুলে ফেলেন যার কারণে ছবি দেখতে ভালো লাগে না তাই ছবি তোলার সময় আপনাকে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। কারণ সুন্দর ছবি তুলতে হলে ছবির গল্পকে ফুটিয়ে তোলা জরুরি। আপনাকে এমন ভাবে ছবি তুলতে হবে যেন আপনার ছবির পিছনের ব্যাকগ্রাউন্ড আপনার তোলা ছবির মাধ্যমে তার গল্প বলে দিচ্ছে। আর আপনি যত এইভাবে ছবি তুলতে পারবেন আপনার ছবি তত বেশি সফল হবে।

আপনি শহর হোক বা গ্রাম যেখানেই ছবি উঠাতে যান না কেন দেখবেন তার আশেপাশেই হাজারো গল্প ছড়িয়ে আছে যেগুলো আপনি আপনার ক্যামেরাবন্দি করতে পারেন। আপনি আপনার ছবিকে ফুটিয়ে তোলার জন্য বিভিন্ন অসহায় মানুষের চিত্র ধারণ করতে পারেন কারণ মানুষ আবেগপ্রবণ। আর আপনি যদি আপনার তোলা ছবির মাধ্যমে গল্প প্রকাশ করতে পারেন তাহলে আপনার ছবি তোলা সফল হবে।

সঠিকভাবে রং নির্বাচন

ছবি তোলার সময় আপনাকে চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে। আপনি যদি এগুলো সঠিকভাবে খেয়াল না করেন তাহলে আপনার ছবি আকর্ষণীয় করে তোলা সম্ভব হবে না। যেমন মনে করেন, আপনি সরষে ক্ষেতের হলুদ ফুলের মধ্যে ছবি উঠাবেন, সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সবুজ, কালো বা বেগুনি এই ধরনের রং ফুটিয়ে তুলতে সহায়তা করবে। আবার মনে করুন আপনি সবুজ প্রকৃতির মধ্যে ছবি উঠাবেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে লাল কালার বা রং বেশি ভালো লাগবে। ছবি ওঠানোর আগে আপনাকে একটি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে আপনাকে অবশ্যই বিপরীত চক্রের রং গুলো পছন্দ করে নিতে হবে আপনার ছবিকে সঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য।

শেষ কথা

আপনারা যদি ভালো ছবি পেতে চান তাহলে অবশ্যই ভালোভাবে ছবি তোলা শিখতে হবে এবং কিছু টিপস মেনে আপনাকে ছবি তুলতে হবে আপনি যদি নিয়ম ও কৌশল গুলো সঠিকভাবে ফলো করতে পারেন। তাহলে আপনি স্পষ্ট উন্নত মানের ছবি পাবেন। আপনি অবশ্যই ছবি তোলার সময় এই নিয়ম বা টিপস গুলো মাথায় রেখে তারপর ছবি তুলবেন।