আধুনিক বাংলা সাহিত্যে মুসলমান সাহিত্যিকদের সংখ্যা নগণ্য। সেই নগণ্য সংখ্যক মুসলিম সাহিত্যিকদের মধ্যে মোজাম্মেল হক অন্যতম। তিনি ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার শান্তিপুরে জন্মগ্রহণ করেন। এজন্য তিনি শান্তিপুরের কবি হিসেবেই সমধিক পরিচিত। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, কথাশিল্পী এবং জীবনীকার। তার সাহিত্য সাধনা, মননশীলতা, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অগ্রগতিতে বিশেষ অবদান রেখেছে। তার রচিত গ্রন্থসমূহের তালিকা নিম্নরূপ:

কাব্য: কুসুমাঞ্জলি (১৮৮২), মহারাণা (১৮৮৪); অপূর্ব দর্শন (১৮৮৫); জুবিলী সংগীত (১৮৯৭); প্রেমহার (১৮৯৮); হযরত মোহাম্মদ (স) (১৯০৩); জাতীয় ফোয়ারা (১৯২২); ইসলামী সংগীত ইত্যাদি।
উপন্যাস: জোহরা (১৯১৮); রঙ্গিলা বাই (অপ্রকাশিত); দরাফ খাঁ গাজী (১৯১৯)।
ইতিহাস: টিপু সুলতান (১৯৩২)।
জীবনী: তাপস কাহিনি (১৯০০); মহর্ষি মনসুর (১৮৯৬); ফেরদৌসী চরিত (১৮৯৮); মওলানা পরিচয় (১৯১৪); বড়পীর চরিত ইত্যাদি।

‘কুসুমাঞ্জলি’ কাব্য দিয়েই মোজাম্মেল হক বাংলা সাহিত্যে আগমন করেন। জাতীয় ফোয়ারা তার শ্রেষ্ঠ কাব্য। এ কাব্যে তিনি অধঃপতিত মুসলমান জাতিকে অলসতা ও কুসংস্কার ত্যাগ করে নতুন উদ্দীপনায় জ্ঞান আহরণ ও কর্মে নিযুক্ত হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। মুসলমানদের উদ্দেশ্যে মোজাম্মেল হক বলেন:

“আলস্য শয়ন করি পরিহার

জাগ, ওঠ, খোল নয়নদ্বয়।

আর কতকাল অজ্ঞান তিমিরে

ডুবিয়া জীবন করিবে ক্ষয়।”

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।