ডকুচেভ-কে মৃত্তিকা বিজ্ঞানের জনক বলা হয়।

মাটির উৎপত্তিতে যান্ত্রিক ও রাসায়নিক আবহবিকার প্রক্রিয়া সবচেয়ে বেশি দায়ী।

কৃয়মৃত্তিকা আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে বলে তুলাে উৎপাদনের জন্য অনুকূল।

জলবায়ুর প্রভাবে প্রধানত আঞ্চলিক মাটির সৃষ্টি হয়।

আদিশিলা পেরিডােটাইট ও সারপেনটাইন হলে মৃত্তিকা ক্ষারধর্মী হয়।

তৃণভূমি অঞ্চলে মূলত চারনােজেম মৃত্তিকা দেখা যায়।

হ্যালােফাইট অঞ্চলে লবণাক্ত মৃত্তিকা দেখা যায়।

চারননাজেম মাটিতে হিউমাস বেশি থাকায় রং কালাে হয়।

মরু মৃত্তিকা ক্ষারধর্মী, অনুর্বর হয় এবং এর জল ধারণক্ষমতা কম থাকে।

জলমগ্ন অঞ্চলে জারণ প্রক্রিয়ার তুলনায় বিজারণ প্রক্রিয়া অধিক সক্রিয় হওয়ায় মৃত্তিকায় জৈব অম্ল উৎপন্ন হয় এবং মৃত্তিকার রং বাদামি না হয়ে ধূসর বা সবুজ বা নীলাভ হয়। মৃত্তিকা সৃষ্টির এই প্রক্রিয়াকে গ্লেইজেশন বলে।

জলাজমি অঞ্চলে গ্লেইজেশন নামক মৃত্তিকা সৃষ্টির পদ্ধতি লক্ষ করা যায়।

পরিণত মাটিতে সব স্তর দেখা যায়

আবহবিকারের ফলে মাটি সৃষ্টির প্রাথমিক পর্যায়ে রেগােলিথ সৃষ্টি হয়।

যে মাটির সৃষ্টিতে আদি শিলার প্রভাব সর্বাধিক সেই মাটিকে এন্ডােডায়নামােমরফিক মাটি বলে।

আবহবিকারের ফলে ভূত্বকের উপরিভাগে সৃষ্ট শিলাচূর্ণকে রেগােলিথ বলে। এই রেগােলিথ বহুকাল ধরে বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় মৃত্তিকায় পরিণত হয়।

ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলে ভূত্বকের উপরিভাগে ইটের মতাে গাঢ় লাল রঙের কঠিন আবরণকে দ্যুরিকাস্ট বলে।

উদ্ভিদের ক্ষেত্রে মাটিতে কার্বন-নাইট্রোজেন অনুপাত বেশি কার্যকরী।

এন্টিসােল একটি সূচনা পর্বের মৃত্তিকা।

মাটি সৃষ্টির সময় খনিজের স্থানান্তর এলুভিয়েশন প্রক্রিয়ায় ঘটে।

হিউমিফিকেশন ও খনিজকরণকে মাটি সৃষ্টির মৌলিক প্রক্রিয়ার অন্তর্গত করা যায়।

ইলুভিয়েশন পদ্ধতিতে B স্তর গঠিত হয়।

ইলুভিয়েশন পদ্ধতিতে A হােরাইজেন থেকে খনিজ বা পুষ্টিমৌল B হােরাইজনে সঞ্চিত হয়।

এলুভিয়েশন পদ্ধতিতে ধৌতপ্রক্রিয়ায় A হােরাইজন থেকে খনিজ পদার্থের অধােগমন ঘটে।

নির্দিষ্ট পরিবেশে মাটি সৃষ্টির যেসব প্রক্রিয়া অধিকমাত্রায় ক্রিয়াশীল থাকে তাদের বিশেষ বা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া বলে।

pH বলতে এক লিটার দ্রবণে সক্রিয় বা মুক্ত হাইড্রোজেন আয়নের পরিমাণকে বােঝায়। pH-এর মান 7-এর কম হলে মৃত্তিকা আম্লিক হয়, এবং 7-এর বেশি হয় হলে মৃত্তিকা ক্ষারকীয় হয়।

মাটির pH মান 7 হলে তাকে প্রশমিত বা নিরপেক্ষ মাটি বলে। অর্থাৎ, এই মাটি আম্লিক বা ক্ষারকীয় কোনােটাই হয় না।

ক্যালশিয়াম কার্বনেটের পরিমাণ বেশি থাকায় পেডােক্যাল মৃত্তিকার pH-এর মান 7-এর বেশি হয়ে থাকে।

ক্ষয়ের ফলে A স্তরের পরিবর্তে B অথবা C স্তর মাটির পরিলেখে প্রকাশিত হলে তাকে কর্তিত পরিলেখ বলে।

কর্তিত পরিলেখতে ভূপৃষ্ঠে A স্তরের পরিবর্তে B অথবা C হােরাইজন বা স্তরে অবস্থান করে।

United States Department of Agriculture.

অ্যালফিসল মাটিতে অ্যালুমিনিয়াম ও লােহার প্রাধান্য বেশি থাকে।

জৈব পদার্থ হল মাটিতে জীবাণু শক্তির মূল উৎস।

হিউমাসের মধ্যে কার্বনের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে।

আয়রন অক্সাইড আয়রন হাইড্রোক্সাইডে পরিণত হলে মাটির রং হলদে হয়।

ভৌত শুষ্ক মাটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এই মাটি জল ধারণে অক্ষম হয়।

অতিরিক্ত লবণের উপস্থিতির জন্য গাছ যে মাটি থেকে জল সহজে গ্রহণ করতে পারে না তাকে শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মাটি বলে।

যেসব পরিপােষক ছাড়া গাছ বাঁচতে পারে না তাদের অপিরিহার্য মৌল বা পরিপােষক বলে।

উদ্ভিদ নাইট্রোজেনকে অ্যামােনিয়ায় পরিবর্তিত করার পর মাটি থেকে গ্রহণ করে।

মাটি ছাড়াই উদ্ভিদ জন্মানাের প্রক্রিয়া বা ব্যবস্থাটিকে হাইড্রোফনিক অবস্থা বা প্রক্রিয়া বলে।

রেগােলিথের সাথে জৈব পদার্থ যুক্ত হলে পরবর্তীকালে তা মাটিতে পরিণত হয়।

লাভাগঠিত শিলা থেকে রেগুর মাটি সৃষ্টি হয়।

অধিক বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলে ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা গঠিত হয় বলে ধৌত প্রক্রিয়ায় এই মৃত্তিকার উপরিস্তর থেকে খনিজ ও জৈব পদার্থ অপসারিত হয়ে নীচে চলে যায়। ফলে মৃত্তিকা পরিলেখে জৈব পদার্থের অভাব দেখা যায়।

অনালিক মৃত্তিকার পরিলেখে A, B, C, D স্তরগুলি সুস্পষ্ট নয়।

মাটির ভূতাত্ত্বিক ক্ষয় বলতে প্রাকৃতিক উপাদানসমূহের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাটির আস্তরণের স্বাভাবিক ক্ষয়কে বােঝায়।

পেডােক্যাল মাটিতে ক্যালশিয়ামের প্রাধান্য থাকে।

পেডােক্যাল মাটি শুষ্ক জলবায়ুতে সৃষ্টি হয়।

মাটি সৃষ্টির সক্রিয় উপাদান দুটি হল জলবায়ু ও জীবজগৎ।

মাটি সৃষ্টির নিষ্ক্রিয় উপাদানগুলি হল ভূপ্রকৃতি, আদি শিলা এবং সময়।

যান্ত্রিক আবহবিকার উয় মরু ও শীতল জলবায়ু অঞ্চলে বেশি দেখা যায়।

রাসায়নিক আবহবিকার নিরক্ষীয় বৃষ্টিবহুল জলবায়ু অঞ্চলে বেশি দেখা যায়।

সাধারণত পডসল মৃত্তিকাতে আদর্শ পরিলেখ দেখা যায়।

ম্যাগনেশিয়াম-এর অভাবে উদ্ভিদের ক্লোরােসিস রােগ হয়।

ক্রান্তীয় ও নিরক্ষীয় অঞ্চলে অক্সিসল বর্গের মাটি সৃষ্টি হয়।

অধিক ঢালে আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবনের ফলে সৃষ্ট পদার্থসমূহ ভূমির ঢাল বরাবর নীচের দিকে নেমে আসে বলে মৃত্তিকার গভীরতা বেশি হয় না।

যে মৃত্তিকায় সবকটি স্তর দেখা যায় তাকে পরিণত মৃত্তিকা বলে।

যথেষ্ঠ সময়ের অভাবে যে মৃত্তিকায় সবকটি স্তর গড়ে উঠতে পারে না, তাকে অপরিণত মাটি বলে।

তাপমাত্রার পরিবর্তনজনিত কারণে শিলাখণ্ডের ওপরের স্তর পিয়াজের খােসার মতে খুলে গিয়ে শল্কমােচন ঘটে।

একজাতীয় খনিজ দ্বারা গঠিত শিলার ওপর শল্কমােচন বেশি হয়।

বিভিন্ন ধরনের খনিজের সমন্বয়ে গঠিত শিলায় ক্ষুদ্রকণা বিশরণ বেশি হয়।

শিলার ওপরের ও নীচের স্তরের মধ্যে তাপমাত্রার পার্থক্যের কারণে শিলাস্তর আড়াআড়ি ও লম্বালম্বিভাবে ফেটে গিয়ে প্রস্তরচাই খণ্ডীকরণ ঘটে।

ভূত্বকের ওপর সঞ্চিত আবহবিকারপ্রাপ্ত শিলাচূর্ণ স্তরকে রেগােলিথ বলে।

লােহাসমৃদ্ধ মৃত্তিকায় জারণ প্রক্রিয়ায় লাল, হলুদ ও বাদামি ছােপযুক্ত মৃত্তিকার সৃষ্টি হয়।

ব্যাসল্ট শিলা জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় বিয়ােজিত হয়ে কৃষ্ণমৃত্তিকা সৃষ্টি করে।

ক্রান্তীয় উয়-আর্দ্র ও উপক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলে মৃত্তিকা সৃষ্টির ল্যাটেরাইজেশন প্রক্রিয়াটি অধিক কার্যকরী।

মূল শিলা থেকে ধৌত প্রক্রিয়ায় সিলিকা বেরিয়ে যায় ও সেসকুই অক্সাইডবূপে লােহা ও অ্যালুমিনিয়ামের জারিত কণাগুলি মাটির উপরিস্তরে থেকে যায়, ফলে ত্বক কঠিন হয়।

সরলবর্গীয় অরণ্যাঞ্লে সুক্ষ্ম শিকড় দ্বারা গঠিত ওপরের ‘0′ স্তরটিকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানের ভাষায় ডাফ বলে।

পর্ণমােচী অরণ্যে আলগা ও মুচমুচে ধরনের ওপরের ‘o’ স্তরটিকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানের ভাষায় মাল বলে।

মৃত্তিকার মধ্যে অনুভূমিকভাবে বিস্তৃত একাধিক পাতলা বিভাজিত অংশকে মৃত্তিকার স্তর বা হােরাইজন বলে।

মৃত্তিকার উল্লম্ব প্রস্থচ্ছেদকে মৃত্তিকা পরিলেখ বলা হয়।

একই প্রকার আদি শিলা ও একই জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে উপত্যকার শীর্ষদেশ থেকে অববাহিকার নীচু অংশ পর্যন্ত বিভিন্ন মাটি সৃষ্টি হলে মৃত্তিকার ক্যাটেনা বলে।

জনক শিলা থেকে গঠিত মাটি ওই শিলার ওপর অবস্থান করলে তাকে স্থিতিশীল মাটি বলে।

মাটি যখন আদি শিলার ওপর অবস্থান না করে অন্যত্র স্থানান্তরিত ও সঞ্চিত হয় তখন তাকে পরিবাহিত মাটি বলে।

মৃত্তিকা অনুক্রমের A ও B স্তরকে একত্রে সােলাম বলে।

প্রাকৃতিক বা অপ্রাকৃতিক কারণে মৃত্তিকার কণাসমূহের স্থানান্তরকে মৃত্তিকা ক্ষয় বলে।

মৃত্তিকার রং দেখে মৃত্তিকার গুণমান বিচারের জন্য মুনসেল কালার চার্ট ব্যবহৃত হয়।

প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক কারণে মৃত্তিকার গুণগত মান হ্রাস পেলে তাকে মৃত্তিকার অবনমন বলে।

যে পদ্ধতির মাধ্যমে মৃত্তিকাকে ক্ষয় ও অবনমনের হাত থেকে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে রক্ষা করা হয় তাকে মৃত্তিকা সংরক্ষণ বলে।

যে শিলা থেকে রেগােলিথ ও পরে মৃত্তিকার সৃষ্টি হয় তাকে আদি শিলা বলে।

কোনাে নির্দিষ্ট মৃত্তিকায় বালি, পলি ও কাদাকণার আপেক্ষিক অণুপাত-ই হল মৃত্তিকার গ্রথন।

মৃত্তিকার কণাগুলি পরস্পর সংযােজিত হয়ে যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ গঠন করে তাকে পেড বলে।

মৃত্তিকার পেডগুলি সংযুক্ত হয়ে যে জ্যামিতিক আকার সৃষ্টি হয় তাকে মৃত্তিকার গঠন বলে।

মৃত্তিকার কণাগুলির মধ্যে যে অতিসূক্ষ্ম ফাঁকা স্থান থাকে তাকে মৃত্তিকার সচ্ছিদ্রতা বলে।

যে তিনটি পুষ্টিমৌল উদ্ভিদের অধিক পরিমাণে প্রয়ােজন হয় সেগুলি NPK অর্থাৎ নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম।

যে প্রক্রিয়ায় মৃত্তিকার পরিলেখে বিভিন্ন ধাতু মৌলের লবণ ক্লোরাইড বা সালফেট রূপে সঞ্চিত হয়, সেই প্রক্রিয়াকে লবণীকরণ বা স্যালিনাইজেশন বলে।

মুক্তাবস্থায় অভিকর্ষজ জল নিষ্কাশনের পর মৃত্তিকায় অবশিষ্ট জলকে ধরে রাখার ক্ষমতাকে মাঠস্থিত ক্ষমতা বা Field Capacity বলে।

পড়সল মৃত্তিকার উদ্ভব প্রক্রিয়াকে পডসলাইজেশন বা পড়সলিকরণ বলা হয়।

মৃত্তিকার উৎপত্তি, বৈশিষ্ট্য, শ্রেণিকরণ ইত্যাদি বিজ্ঞানের যে শাখায় আলােচনা করা হয় তাকে পেডােলজি বলে।

মৃত্তিকা এবং এর মধ্যে বসবাসকারী জীবকুল বিশেষত উদ্ভিদগােষ্ঠীর আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে আলােচনা করার বিজ্ঞান হল এডাফোলজি।

যে প্রক্রিয়ায় মৃত্তিকার স্তরে চুনজাতীয় পদার্থ সঞ্চিত হয়, সেই প্রক্রিয়াকে ক্যালশিফিকেশন বলে।

যে খনিজ ও জলকে উদ্ভিদ গ্রহণ করে সালােকসংশ্লেষের মাধ্যমে খাদ্য প্রস্তুত করে, তাকে মৃত্তিকাস্থিত পুষ্টিমৌল বলে।

যেসব পুষ্টিমৌল বা উপাদান, উদ্ভিদ তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য অতি অল্প পরিমাণে গ্রহণ করে তাদের অনুমাত্র উপাদান বা গৌণ পুষ্টিমৌল বলে।

ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমিতে কৃষ্ণমৃত্তিকা দেখতে পাওয়া যায়।

ভারতের হিমালয় পর্বতের সরলবর্গীয় অরণ্যালে পডসল মৃত্তিকা দেখতে পাওয়া যায়।

যে মৃত্তিকা থেকে উদ্ভিদ তার উৎপত্তি ও বৃদ্ধির জন্য প্রয়ােজনীয় খাদ্যমৌল সহজে গ্রহণ করতে পারে, তাকে উর্বর মৃত্তিকা বলে।