অথবা, মূল্যায়নমূলক বিদ্যার সংজ্ঞা দাও।
ভূমিকাঃ আমরা সাধারণত দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন বিষয়ের মূল্যায়ন করে থাকি। যেমন- সবুজ ঘাস, সত্যবাদিতা। তখন ঘাসের সাথে সবুজের সম্পক সত্যবাদিতা ও সদগুণের সম্পর্ক খুঁজে পাই। নীতিবিদ্যা আমাদের আচরণের নৈতিক মূল্যায়ন করে। তাই নীতিবিদ্যাকে মূল্যায়নের বিদ্যাও বলা হয়। নিচে তা আলােচনা করা হলাে।
মূল্যায়নমূলকবিদ্যাঃ আদর্শনিষ্ঠ বিজ্ঞান প্রধানত ঘটনা সম্পকীয় অবধারণের পরিবর্তে মূল্যসম্পকীয় অবধারণ। বিষয়টি কি হওয়া ‘উচিত’ নিয়ে জড়িত বলে বস্তুটির প্রকৃত অবস্থা বা স্বরূপ বিশ্লেষণের পরিবর্তে বস্তুটির আদর্শ বা মানের প্রেক্ষিতে উচিত-অনুচিতের প্রশ্ন নিয়ে আলােচনা করে। তাই যুক্তিবিদ্যা ও সৌন্দর্যবিদ্যার মতাে নীতি বিদ্যাও আদর্শনিষ্ঠ বিদ্যা।
মূল্যায়নমূলক বিদ্যা সত্যতার অর্জন নিয়ে নীতিবিদ্যার এসব দিকের মিল থাকার কারণেই দার্শনিকরা নীতিবিদ্যাকে আদর্শনিষ্ঠ বিজ্ঞান বলে আখ্যায়িত করেন। পরম আদর্শের মানব আচরণ ন্যায়, অন্যায়, উচিত, অনুচিত, ভালাে, মন্দ, বিচার করাই নীতিবিদ্যার কাজ। তাই মানব আচরণের স্বরূপ, উৎপত্তি, বিকাশ ইত্যাদি সম্পৰ্কীয় আলােচনার পরিবর্তে আর্দশের প্রেক্ষিতে মানব আচরণের মূল্যায়ন করা নীতিবিদ্যার কাজ। তাই আমরা বলতে পারি আমাদের আচরণ কি রকম হওয়া উচিত তা বিশেষ আদর্শের প্রেক্ষিতে মূল্যায়ন করে বলে নীতিবিদ্যাকে মূল্যায়নমূলক বিদ্যা বলা হয়।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, নৈতিক অবধারণ এমন এক ধরনের মানসিক প্রক্রিয়া, যা একটি কাজ ভালাে না মন্দ তা নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে নিরূপণ করে ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করে। অর্থাৎ নীতিবিদ্যার কাজ হলাে মানুষের নৈতিক মূল্যনির্ধারণ করা। এটা মূল্যায়নমূলক অবধারণ বিষয়ক অবধারণের সত্যতা আদর্শ বা মানদণ্ডের প্রেক্ষিতে যাচাই করা হয়।
Leave a comment