মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের মধ্যে যারা আংশিকভাবে বধির তাদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে শ্রুতিসহায়ক যন্ত্র ব্যবহার করলে এবং তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিলে তারা স্বাভাবিক ছেলে মেয়েদের মতাে কথাবার্তা বলতে এবং শুনতে পারে। কিন্তু যারা সম্পূর্ণরূপে মূক ও বধির তাদের জন্য নিম্নলিখিত শিক্ষাদান পদ্ধতি প্রয়ােগ করা হয়一
(1) ওষ্ট -পঠন: বক্তার কথা বলার সময় তার ঠোট নড়াচড়া দেখে কথা বা ভাব বুঝতে পারাকে ওষ্ঠ-পঠন বা বাক্-পঠন বলা হয়। মুক ও বধির ছেলেমেয়েরা বক্তার মুখের সামগ্রিক পরিবর্তন, নড়াচড়া ইত্যাদি লক্ষ করে বক্তার কথা বােঝার চেষ্টা করে থাকে। পরে একইভাবে ঠোটের সন দেখে তারা ভাষা শিখে থাকে। এই পদ্ধতির আর-এক নাম মৌখিক পদ্ধতি। এর প্রবর্তক হলেন জয়ান পাবলাে বনে।
(2) আঙুলের দ্দ্বারা বানান শেখানো : যেসব ছেলেমেয়ে সম্পূর্ণরূপে বধির তারা মনের ভাব প্রকাশের জন্য আঙুল সলিনের সাহায্য নেয়। তাদের এ বিষয়ে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আঙুল সালনের মাধ্যমে এই ছেলেমেয়েদের অক্ষর, শব্দ, বাক্য ও বানান লেখা সহজে শেখানাে যায়। এই সন পদ্ধতির প্রবর্তক হলেন পেরিয়ার। ভারতে এই পদ্ধতি করপল্লবী (Karapalla) নামে পরিচিত।
(3) কম্পন ও স্পর্শ পদ্ধতি : এই পদ্ধতিতে মুক ও বধির ছেলেমেয়েরা অভিজ্ঞ শিক্ষকের কথা বলার সময় তাদের মুখে হাত বুলিয়ে, গলা স্পর্শ করে শব্দ উচ্চারণ করতে শেখে। কম্পন ও স্পর্শ পদ্ধতিটি আবিষ্কার করেন কেটি অ্যালকন ও সােফিয়া অ্যালকন।
(4) শ্রবণসহায়ক পদ্ধতি : এই পদ্ধতিটি মূলত আংশিকভাবে বধির ছেলে মেয়েদের পড়ানাের জন্য ব্যবহৃত হয়। উচ্চশক্তিসম্পন্ন শ্রবণসহায়ক যন্ত্রের সাহায্যে আংশিক বধিরদের বধিরতা অনেকটা দূর করা যায়।
(5) দর্শনভিত্তিক পদ্ধতি : মুক ও বধির ছেলেমেয়েদের দর্শনভিত্তিক পদ্ধতিতে মনের ভাব প্রকাশের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এতে কয়েকটি প্রতীক ব্যবহার করা হয়। শিক্ষক মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের এইসব প্রতীকের ব্যবহার শিখিয়ে দেন। তারা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শিক্ষকের মতাে মুখলি করে শব্দ উচ্চারণ করার চেষ্টা করে এবং ধীরে ধীরে তা আয়ত্ত করে।
উপরিউ পদ্ধতিগুলির দ্বারা মূক ও বধিরদের শিক্ষাদান করতে গেলে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধৈর্যশীল শিক্ষক শিক্ষিকার প্রয়ােজন হয়।
Leave a comment