মীর মশাররফ হোসেনের পরিচয় দাও

উত্তর: আধুনিক যুগে মুসলমান সাহিত্যিকদের মধ্যে সমন্বয়ধর্মী ও স্বাতন্ত্র্যধর্মী দুটি ধারার পরিচয় মেলে। এ দুই ধারার মধ্যে সমন্বয়ধর্মী ধারার প্রবর্তন করেছিলেন মীর মশাররফ হোসেন। উনিশ শতকের শেষ পর্যায়ে যে ক্ষেত্রে মুসলমান সাহিত্যিকগণ ধর্মীয় বিষয়বস্তু অবলম্বনে সাহিত্য সাধনায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন, মীর সাহেব তখন ধর্মের বিষয়বস্তুর দিকে দৃষ্টি নিবন্ধ না করে সাহিত্যশিল্পের দিকে দৃষ্টি দেন। মীর মশাররফ হোসেন (১৮৪৭-১৯১২) বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন। তিনিই সর্বপ্রথম একজন সার্থক মুসলমান সাহিত্যিকরূপে মুসলমান সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তিনি উপন্যাস, নাটক, প্রহসন, আত্মজীবনী ও চরিত সাহিত্যের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখতে সমর্থ হয়েছেন। তার বিষাদ সিন্ধু বাংলা সাহিত্যে একটি কালজয়ী সৃষ্টি। তাঁর জমিদার দর্পণ বাংলা সাহিত্যে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন।
মীর মশাররফ হোসেন উপন্যাস, নাটক, প্রহসন, প্রবন্ধ ও জীবনী রচনার ক্ষেত্রে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে উপন্যাস-‘রত্নাবতী’ (১৮৬৯), বিষাদ সিন্ধু (মহররম পর্ব ১৮৮৫), উদ্ধার পর্ব (১৮৮৭), এজিদ বধ পর্ব (১৮৯১), উদাসীন পথিকের মনের কথা (১৮৯০), গাজী মিয়ার বস্তানী (১৮৯৯), এসলামের জয় (১৯০৮)।

নাটক: বসন্তকুমারী (১৮৭৩), জমিদার দর্পণ (১৮৭৩)।
প্রহসন: এর উপায় কি (১৮৭৬), ভাই ভাই এইতো চাই (১৮৯৯), ফাঁস কাগজ (১৮৮৯), একি (১৮৯৯)। প্রবন্ধ: গোজীবন (১৮৮৯)।
জীবনী: আমার জীবনী (১৯০৮), হযরত ইউসুফ (১৯০৮), বিবি কুলসুম বা আমার জীবনীর জীবনী (১৯১০)।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।