যে কয়টি বৈশিষ্ট্যের জন্যে মুকুন্দরাম ষোড়শ শতাব্দীর কবিকুল তথা সমগ্র মঙ্গল কাব্যের ধারায় অবিসংবাদিত শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন তার অন্যতম হল কবির বহুব্যাপ্ত অভিজ্ঞতা এবং সেই অভিজ্ঞতাকে কাব্যে রূপায়িত করার দুর্লভ কবি প্রতিভা। মুকুন্দরাম সমকালীন জীবন ও জগৎকে দুচোখ মেলে দেখেছেন, তার অভ্যন্তরস্থ জীবনবোধ ও কর্ম প্রেরণাকে গভীর অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে উপলব্ধি করেছেন এবং সে যুগের পক্ষে বিস্ময়কর অনন্য সুলভ সৃজনী প্রতিভার সাহায্যে আপন কবিমনের জারক রসে জারিয়ে কাব্যের মধ্যে রূপায়িত করেছেন। এই অত্যাশ্চর্য কৃতিত্বের পরিমাপ করার তথ্যরাজিও কবি নিজেই নিজের কাব্যে সন্নিবেশিত করে গেছেন, যুগমানসের গতানুগতিক ধারায় তথ্যনিষ্ঠা ও ইতিহাস চেতনার পরিচয় দেওয়া মুকুন্দরামের পক্ষে সম্ভব হয়নি। কিন্তু ব্যক্তি জীবনের যে দুর্দৈব কবিজীবনে দেবীর আশীর্বাদ ও করুণার ধারাকে আকর্ষণ করে এনেছিল, তার বিবরণ দিতে গিয়ে হয়তো বা নিজের অজান্তেই কবি সমকালীন রাষ্ট্রীয় জীবনের যে বিস্তৃত পরিচয় দিয়েছেন, তার মধ্যেই তাঁর কাব্যের অভিনবত্বের সূত্র লুকিয়ে আছে। কাব্যের গতানুগতিক কাহিনি ধারার বিরুদ্ধতা করা মুকুন্দরামের পক্ষে সম্ভব ছিল না। কিন্তু গতানুগতিকতার স্রোতে গা ভাসিয়ে না দিয়ে তিনি সীমাবদ্ধতার মধ্যেই স্বাধীনতার আস্বাদ লাভ করতে চেয়েছিলেন প্রচলিত কাহিনীতে ব্যক্তিজীবন ও সমাজ জীবনের অভিজ্ঞতার ছায়া সম্পাত করে। বলা বাহুল্য গ্রন্থোৎপত্তির কারণ অংশে সমকালীন রাষ্ট্রবিপ্লবজনিত বিশৃঙ্খলা ও তার কাব্যিক রূপায়নই এ বিষয়ে আমাদের একমাত্র দিগদর্শিতা।
কবি কঙ্কণের সাহিত্য খ্যাতির সঙ্গে তাঁর সূক্ষ্ম সমাজবোধ ঘনিষ্ঠভাব যুক্ত। মধ্যযুগের সামন্ততান্ত্রিক সমাজের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় গ্রন্থ যে কবিকঙ্কনের জুড়ি নেই। এদিক থেকে তিনি আধুনিক ঐতিহাসিক ও সমাজতত্ত্ব জিজ্ঞাসু পাঠককে আশাতীতভাবে পরিতৃপ্ত করেছেন। সমাজ পরিচয় বলতে আমরা যেন কেবল বিবাহ বন্ধন ও অলংকার পরিধানের বিষয়ে আগ্রহ না বুঝি। রাষ্ট্রের প্রকৃতি, প্রশাসন ব্যবস্থা, উৎপাদন ও বন্টন, কৃষি ও কৃষক, ব্যবসা-বাণিজ্য ও কুটির শিল্প, করনির্ধারণ ব্যবস্থা, জাতিবর্ণ বিভাগ প্রভৃতিও সমাজ পরিচয় বিশেষভাবে বর্ণিত হয়। কবিকঙ্কণ বিভিন্ন বিষয়ের বর্ণনার উপলক্ষ্যে এই সব বিষয় আভাসিত অথবা পরিস্ফুট করেছেন। তিনি হয়তো কৃত সংকল্প হয়ে রাষ্ট্র সমাজের পরিচয় দিতে চান নি, সমাজ অনুগামী কবিস্বভাব বশেই সমাজের চিত্রাঙ্কণ করেছেন। এজন্য তাঁর বর্ণনা যেমন প্রাসঙ্গিক তেমনি অনায়াস হয়েছে।
কবিকঙ্কন সামন্ততান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রশাসন ব্যবস্থা ও প্রজাসম্পর্কের প্রায় পূর্ণাঙ্গ পরিচয় সন্নিবেশ করেছেন কলিঙ্গ রাষ্ট্র ও গুজরাট ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের বিবরণে। এতে নিঃসন্দেহে ষোড়শ শতাব্দীর বা জমিদারদের প্রশাসন কার্যাবলী ও প্রজাদের অবস্থা চিত্রিত হয়েছে। কালকেতু রাজা হয়েছিলেন। রাজাদের মত হাতি-ঘোড়া সৈন্য-সামন্ত, পাইক-বরকন্দাজ, ছোট-খাট রাজসভা তাঁকে রাখতে হোত এবং প্রয়োজনে যুদ্ধও করতে হত। তাঁর অধীন অথবা সম অধিকার বিশিষ্ট ভুঁইয়া রাজা অর্থাৎ জমিদারদের সঙ্গে তাঁকে রাষ্ট্র সম্পর্কও রক্ষা করে চলতে হত। রাজসভায় রাজকার্যে যাঁরা রাজাকে উপদেশ দিতেন তাঁরা হলেন পাত্র, মহাপাত্র, পুরোহিত। প্রয়োজনে এঁরা যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করতেন। সামন্ততন্ত্রে পুরোহিতের স্থান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রের প্রতি প্রজাদের আনুগত্য ও রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্তরঙ্গতা দেবপূজা বিধান ও শাস্ত্র প্রথার মধ্যস্থতায় নির্বাহিত হোত। প্রজাসম্পর্কে জমিদার প্রায় সার্বভৌম রাজার মতই থাকতেন কিন্তু বড় রাজার কাছে তাঁকে কর পাঠাতে হত অর্থাৎ সর্বদাই বশ্যতা স্বীকারের দ্বারা নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হত।
কালকেতুর রাজপ্রাসাদ ছিল সাতমহলা, পরিখা বা গড় বেষ্টিত। এর অভ্যন্তরে রক্ষী ও হস্তীযুক্ত পুরদ্বার।—অফিস কাছারীর জায়গা, অতিথি ও প্রবাসীদের জন্য স্বতন্ত্র গৃহ, সভাগৃহ, অন্নশালা, দেবমন্দির, নাট্যমণ্ডপ, দৃষ্টি, পুষ্করিণী, কৃপ, অন্তঃপুর-প্রাসাদ, ধনাগার প্রভৃতি রাজপ্রাসাদের মধ্যে ছিল। দেবমন্দির, অন্তঃপুর, গৃহ প্রভৃতি প্রস্তরনির্মিত, মাথার উপরকার চাল প্রায়শই খড়ে ছাওয়া হোত। যতদূর সম্ভব কবিকঙ্কণের এসব বর্ণনায় আরড়া গড়ের ও পার্শ্ববর্তী চন্দ্রকোনা শহরের জনবসতি ও লোক জীবনের ছায়া পড়েছে। ভূঁইয়া রাষ্ট্রে কৃষক প্রজাদের স্থান গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ উৎপন্ন ফসলের উপরই জমিদারির সম্পদ ও প্রজাকল্যাণ বিশেষভাবে নির্ভর করতো। এজন্য কালকেতু প্রজাদের যা যা সুবিধা দিয়েছিলেন তা বুলান মণ্ডলের সঙ্গে কালকেতুর কথোপকথন থেকে জানা যায়। কিন্তু এও জানা যায় নানা রকম ‘কর’ প্রজাদের উপর আরোপ করে ভোগ বিলাসের আয়োজনের মাত্রা বাড়ানো হত—
আমার নগরে বৈস যতভূমি চাষ চষ্য
তিনসম বহিদিই কর।
হালে হালে একতঙ্কা কাহারে না করা শঙ্কা
পাটায় নিশানি মোর ধর।
ডিহিদার সম্পর্কে কৃষক কবির অভিজ্ঞতা ছিল প্রখর। জমি নেওয়ার সময় প্রজাকে সেলামী গুনতে হোত। তাছাড়া পাকা দখল নেওয়ার সময় জমির কোনায় কোনায় যখন বাঁশ গেড়ে লাল পতাকা দিয়ে চিহ্নিত করা হত তখন পুনরায় জমিদারকে কিছু দিতে হত। এছাড়া ছিল পার্বনী বা উৎসব কর, পঞক বা পাঁচজনের বিচার বোর্ডের জন্য দেয় কর, গুড়, নুন উৎপাদন করলে তারজন্য, ফসল কাটার জন্য ধানকাটা কর, দাম বা বিক্রয় কর দিতে হোত। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটতে থাকলে আর সেই সঙ্গে করের জন্য উৎপীড়ন করা হলে কৃষক প্রজারা ভিন্ন জমিদারীতে চলে যেত। কলিঙ্গের প্রজারা এইভাবে গুজরাটে চলে এসেছিল—
“এদেশে বসতি নহে ঘর নদীকূলে।
তেসনী ইমাম পাব গুজরাট যাই।”
এছাড়া রাষ্ট্রবিপ্লব তো লেগেই থাকত। এইভাবে মধ্যযুগের সামন্ত ভুঁইয়া পরিস্থিতিতে কৃষক প্রজারা এবং সেই সঙ্গে বিভিন্ন বৃত্তির মানুষেরা ইতঃস্তত সঞ্চরণশীল ছিল। সচ্চরিত্র ও ধার্মিক ব্যক্তি জমিদার হলে, দীঘি, পুষ্করিণী, পথঘাট, বিদ্যালয় ও মন্দির, মসজিদ নির্মাণ করে দিতেন।
ভুঁইয়ারা চাইতেন তাঁদের গ্রামে ও আশে-পাশে বিভিন্ন বৃত্তির সাধারণ মানুষ এসে বাস করুক, শিল্প গড়ে উঠুক, ব্যবসায় বাণিজ্যের প্রসার হোক, নাটগীতি কীর্তনাদির ব্যবস্থা থাকুক। মানুষের সমৃদ্ধিতেই রাজ্যের সমৃদ্ধি। প্রত্যেকেই স্ব-স্ব বৃত্তিতে নিযুক্ত থেকে নিজেদের এবং সেই সঙ্গে রাষ্ট্রের অর্থসম্পদ বাড়িয়ে তুলেছে এ বর্ণনা কবিকঙ্কণ গ্রথিত করেছেন। তবে মধ্যযুগীয় পরিস্থিতির অবসানের সঙ্গে ধীরে ধীরে মানুষগুলিও অন্তর্হিত হয়েছে। কবিকঙ্কনের এই বিভিন্ন জাতির বসবাস অংশ মনোযোগ দিয়ে দেখলে তখনকার গ্রাম সমাজের পূর্ণাঙ্গতার পরিচয় পাওয়া যাবে। তিনি কেবল উচ্চবর্ণের মানুষের কথাই বলেননি, নিম্নবৃত্তের প্রত্যেক বৃত্তিধারারই পরিচয় দিয়েছেন, আর যদি এখন মনে করা যায় যে তাঁর প্রিয় জমিদার নায়কের তথা আরড়া ব্রাক্ষ্মণভূমির বিবরণ দিতে গিয়ে কিছু আদর্শ চিত্রই অঙ্কন করেছেন তবু এ আদর্শ বাস্তব থেকে বেশি দূরবর্তী নয়।
কবিকঙ্কন মুসলমানদের নগরপত্তনের বিবরণ প্রথমেই দিয়েছেন। তাঁদের ধার্মিকতার পরিচয় দিতে গিয়ে শ্রদ্ধা ও বাস্তবানুগত্য দুই-ই রক্ষা করেছেন। এর মূলে রাজনৈতিক কারণ অল্পসল্প থাকলেও তা বাস্তব বিরোধী হয়নি। কবিকঙ্কণ ব্রাহ্মণ হয়েও নিম্নবর্ণ ও মুসলমানদের পরিচয় যেরকম অভিজ্ঞতা ও সহানুভূতির সঙ্গে গ্রথিত করেছেন তা অভিনন্দন যোগ্য। তখনকার সমাজ হলেও কার্যক্ষেত্রে শাস্তি, সামঞ্জস্য, শৃঙ্খলা অব্যাহত ছিল। বিভিন্ন জাতির মধ্যে যেমন তেমনি হিন্দু মুসলমানের মধ্যে ব্যক্তিগত ঝগড়া ঘটলেও সাম্প্রদায়িক মারদাঙ্গা প্রভৃতির কোন পরিচয় মধ্যযুগে পাওয়া যায় না। তাছাড়া পাঠান মোঘল কর্তৃত্বে হিন্দুরা দলবদ্ধ হয়ে মুসলিম বিরোধিতা করার সাহস পেত না। বস্তুত ওরকম ব্যাপক কোন গোলমালের পরিচয় মধ্যযুগে পাওয়া যায় না, আর কবিকঙ্কণ যা পরিচয় দিয়েছেন তাতে হিন্দু-মুসলমান সামাজিক পার্থক্য রক্ষা করেও পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি নিয়ে যে বসবাস করতো তা বোঝা যায়।
ধনপতির বিবরণে যেমন জাহাজ নিয়ে বাইরে বাণিজ্যে যাওয়ার সংবাদ পাই অনুরূপভাবে কাল-কেতু উপাখ্যানেও ব্যবসা বাণিজ্যের বর্ণনা আছে—
কেহ দর করি তোলা হীরা নীলা মোতি পলা
কেহো মরকত মণি কিনে।
সাহ করিয় নয় কেহো বা সফর যায়
শঙ্খ চন্দ্রন ভরি আনে।।
বণিকদের কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে দুর্নীতি পরায়ণ ছিলেন এমন কথা কবিকঙ্কণ জানিয়েছেন মুরারি শীলের বর্ণনায়, তবে ধর্মভয় সকলেরই ছিল (একমাত্র ভাঁড়ুদত্তের মত ব্যক্তি ছাড়া)। কবিকঙ্কন স্বর্ণ বণিক বা পোতদারদের সঙ্গে অলংকার নির্মাতাদের ব্যবসায়গত ও জাতিগত পার্থক্য বর্ণনা করেছেন এবং দ্বিতীয় শ্রেণির ব্যক্তিদের ‘হাতে হাত বদলিতে জানে’ বলে অভিহিত করেছেন। মুরারি শীল এই শ্রেণিরই লোক অর্থাৎ দুর্নীতিগ্রস্ত অলংকার ব্যবসায়ী ছিলেন।
কবিকঙ্কণ নিম্নবর্ণকে শিক্ষার অধিকার পেতে দেখেননি। মধ্যযুগীয় বিধি নির্দিষ্ট সমাজে তার প্রয়োজনও স্বীকৃত হয়নি, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে এরা অশিক্ষিত অসামাজিক ছিলেন। এঁদের শিক্ষার সূত্র ছিল যাত্রা, কথকতা, পাঁচালি, গান, কীর্তন। আর এভাবে তাঁরা যে শিক্ষা পেতেন তাতে আজকের সাক্ষরতা ম্লান হয়ে যায়। কায়স্থদের তিনি উচ্চ শিক্ষিত এবং ভব্য, শিষ্ট বলে বর্ণিত করেছেন—’ভব্য জন নগরের শোভা’। তবে ভাঁড়ু দত্ত একটা সংকীর্ণ ব্যতিক্রম মাত্র— “জাতের নাহিক স্থিতি, কায়স্থ বোলহ গুজরাটে।” কবিকঙ্কণ মুসলমান শিশুদের সমধর্মী বিদ্যালয়ের কথা বলেছেন। হিন্দুদেরও প্রাথমিক শিক্ষার পাঠশালা ছিল এবং তাতে মাতৃভাষা শিক্ষারও ব্যবস্থা ছিল।
এই প্রসঙ্গে ড. দীনেশ চন্দ্র সেন মন্তব্য করেছেন— “কবিকঙ্কণ প্রথম শ্রেণির কবি ছিলেন, কিন্তু তিনি যে সমাজের চিত্র এঁকেছেন তা দ্বিতীয় শ্রেণির।” মনে হয় এরকম মন্তব্য করার সময় তিনি মুরারিশীল ও ভাঁড়ু দত্তের চরিত্র, নারীর প্রতি সন্দেহ ও অবজ্ঞা, প্রজাদের উপর রাষ্ট্রের শোষণমূলক ব্যবস্থা প্রভৃতির বিষয় মনে রেখেছিলেন। এসব নিঃসন্দেহে মন্দ অবস্থা, কিন্তু মধ্যযুগ বলতে এরকম মিশ্র অবস্থাই বোঝায়। মুরারিশীল, ভাড়ু দত্ত ব্যক্তিচরিত্র অন্যত্র কবি প্রথার শাসনে লাঞ্ছিত মনুষ্যত্বের ছবিও এঁকেছেন।
“অতি নীচকুলে জন্ম জাতে চুয়াড়।
কেহ নাহি স্পর্শে জল, সভে বলে রাঢ়।।”
এবং নারীত্বের অবমাননা—
‘অবলা অধম জাতি যদি থাকে এক রাতি
পরের ভবনে কদাচিৎ।
ছল ধরে বন্ধুজন লোকে করে গুঞ্জন
অবিচারে কৈলে বিপরীত।
প্রভৃতি সত্যই বেদনাদায়ক। আর “সম্বল নাহিক ঘরে বিভা দিলা হেন বরে।”— এ দারিদ্র দুঃখ তো চিরকালের। তাই বলতে হয় মধ্যযুগে যেমন অন্যায় অত্যাচার ছিল, তেমনি প্রণয় বাৎসল্য সরলতা ধর্মভাব প্রজাপালন প্রভৃতি ছিল। ভালোমন্দ মিশ্রিত সমাজ পরিস্থিতিই কবির লেখনীতে ধরা পড়েছে।
Leave a comment