মিশ্রণ‍‌ঃ  দুই বা ততোধিক কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থকে একই অথবা  ভিন্ন  ভৌত অবস্থায় পরস্পরের সাথে মেশালে মিশ্রণ তৈরি করে।
 

মিশ্রণ দুই প্রকারঃ- সমসত্ব মিশ্রণ ও অসমসত্ত্ব মিশ্রণ।

সমসত্ব মিশ্রণঃ  যে মিশ্রণে দ্রাবক ও দ্রবের কণাগুলোকে পৃথক করা যায় না সেই মিশ্রণকে সমসত্ব মিশ্রণ বলে। যেমনঃ- পানিতে সোডিয়াম ক্লোরাইড এর মিশ্রণ। সোডিয়াম ক্লোরাইড পানিতে দ্রবীভূত করলে, সোডিয়াম ক্লোরাইড ও পানির উপাদানকে পৃথক করা যায় না। এজন্য এটি একটি সমসত্ব মিশ্রণ। সমসত্ব মিশ্রণই হচ্ছে দ্রবন। 

অর্থাৎ দ্রবণ হচ্ছে দ্রাবক ও দ্রব কণাগুলোর সমসত্ব মিশ্রণ।

দ্রবণঃ  কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের সমসত্ব মিশ্রণকে দ্রবণ বলে। দ্রবণে দুটি উপাদান থাকবে একটি দ্রাবক এবং অন্যটি দ্রব।
অর্থাৎ দ্রবণ = দ্রাবক + দ্রব।
প্রকৃত দ্রবণঃ  দ্রবণে দ্রব কণাগুলোর ব্যাস 1nm অপেক্ষা ছোট হলে সে দ্রবণকে প্রকৃত দ্রবণ বলে।

 

দ্রাবকঃ  দ্রবণে দুটি উপাদানের মধ্যে যে উপাদানটি পরিমাণে বেশি থাকে তাকে দ্রাবক বলে। দ্রাবক দ্রবকে দ্রবীভূত করে।

যেমনঃ- পানিতে চিনির দ্রবণ।
এক্ষেত্রে দ্রবণে পানির পরিমাণ যদি বেশি থাকে এবং চিনির পরিমাণ যদি কম থাকে তবে পানি এখানে দ্রাবক। তবে দ্রবণে যদি দুটি উপাদান এর পরিমাণ সমান হয় তবে যেকোনো একটি উপাদানকে দ্রাবক এবং অন্য উপাদানটিকে দ্রব বলা যায়।
 

দ্রবঃ  দ্রবণে দুটি উপাদানের মধ্যে যে উপাদানের পরিমাণ কম থাকে সাধারণত তাকে দ্রব বলে।
দ্রব ও দ্রাবকের ভৌত অবস্থা কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় হতে পারে। 

যেমনঃ- হাইড্রোজেন গ্যাস ও অক্সিজেন গ্যাসের মিশ্রণ। দ্রব ও দ্রাবক উভয় গ্যাসীয়। হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস কে পানিতে দ্রবীভূত করলে যে দ্রবণ উৎপন্ন হয় তাতে দ্রাবক তরল এবং দ্রব গ্যাসীয়।
দ্রাবক ও দ্রবের ভৌত অবস্থার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন দ্রবণ হতে পারে। 

যেমনঃ- গ্যাসীয় -গ্যাসীয় দ্রবণ, 

তরল – গ্যাসীয় দ্রবণ, কঠিন – গ্যাসীয় দ্রবণ, কঠিন – কঠিন দ্রবণ, 

তরল – কঠিন দ্রবণ, তরল-তরল দ্রবন, গ্যাসীয় – তরল দ্রবণ ইত্যাদি। 

অসমসত্ত্ব মিশ্রণঃ যে মিশ্রণে দ্রাবক ও দ্রবের উপাদানগুলো পৃথক করা যায় সে মিশ্রণকে অসমসত্ত্ব মিশ্রণ বলে। 

যেমনঃ- বালি ও পানির মিশ্রণ। পানিতে বালির কণা গুলিকে পৃথক ভাবে চেনা যায়, এ জন্য এটি একটি অসমসত্ব মিশ্রণ। 

কলয়েড, সাসপেনশন, ইমালশন, জেল, সল ইত্যাদি অসমসত্ব মিশ্রণ।