ভাবনার লক্ষ্য: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কে বাঁচায়, কে বাঁচে গল্পে নিখিল গল্পের মুখ্য চরিত্র মৃত্যুঞ্জয় সম্পর্কে এরকম ভেবেছে।

প্রসঙ্গ : অফিসে মৃত্যুঞ্জয় এবং নিখিল প্রায় সমপদস্থ। দুজনেরই মাইনে সমান হলেও একটা বাড়তি দায়িত্বের জন্য মৃত্যুঞ্জয় পঞ্চাশ টাকা বেশি পায়। নিখিল মৃত্যুঞ্জয়কে খুব পছন্দ করে, “হয়তো মৃদু একটু অবজ্ঞার সঙ্গে ভালােও বাসে।” এর কারণ মৃত্যুঞ্জয় শুধু নিরীহ, শান্ত, দরদি এবং ভালােমানুষ বলে নয়, এমনকি মৃত্যুঞ্জয় অত্যন্ত সৎ ও সরল বলেও নয়, আদর্শের প্রতি তার যে প্রবল আকর্ষণ—মৃত্যুঞ্জয় চরিত্রের এই বিশেষ গুণটিই তার প্রতি নিখিলকে আকৃষ্ট করে। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন প্ত মন্তব্যটি করা হয়েছে।

যথার্থতা বিচার : মৃত্যুঞ্জয় সম্পর্কে নিখিলের এই ভাবনা যে অত্যন্ত যথার্থ ছিল তা গল্পের কাহিনি থেকেই স্পষ্ট হয়। দুর্ভিক্ষে মানুষের মৃত্যু মৃত্যুঞ্জয়কে এতটাই প্রভাবিত করেছিল যে সে প্রথম পর্যায়ে তার মাইনের সব টাকা দুর্ভিক্ষপীড়িতদের জন্য গঠিত ত্রাণ তহবিলে দান করে দিতে চায়। পরবর্তীকালে তাদের সঙ্গে আরও একাত্ম হবে বলে সে নিজের নিশ্চিন্ত জীবনযাপন ছেড়ে ফুটপাথেই দিন কাটানাে শুরু করে। এভাবে তার জীবন দিয়ে মৃত্যুঞ্জয় সহমর্মিতা এবং আদর্শের এক অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করে দিয়ে যায়।