অথবা, লালন শাহ বাউল পদাবলীতে মান্ন দেহকে খাঁচার সাথে তুলনা করেছেন কেন ? আলোচনা কর
উত্তর: দেহতত্ত্ব নিয়ে লালন শাহের অনেক পদ রয়েছে। আলোচ্য পদে কবি ‘খাঁচা’ শব্দে মানবদেহকে অভিহিত করেছেন। আমাদের এই মানবদেহটাকে তিনি পাখির খাঁচারূপে কল্পনা করেছেন। খাঁচার পাখিটাকে তিনি ‘অচিন পাখী’ অর্থাৎ পরমাত্মা বা মনের মানুষ বলতে চান। দেহের মধ্যে তিনি মনের মানুষরূপী ঈশ্বরকে খুঁজেছেন অচিন পাখির রূপকে। কবি এখানে বলেছেন যে, খাঁচা রূপ মানবদেহে অচিন পাখিরূপ পরমাত্মা কিভাবে আসা যাওয়া করে। তিনি তাকে মন-বেড়ী দিয়ে বেঁধে রাখার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু মানবদেহে মনকে বেঁধে রাখা যায় না। আত্মা দেহ ছেড়ে এক সময় চলে যাবেই। কেননা এই মানবদেহ কাঁচাবাঁশ অর্থাৎ মাটির তৈরি। একদিন খাঁচা সদৃশ এই মানবদেহের মৃত্যু ঘটবে। আর সেই খাঁচা থেকে আত্মা যাত্রা করবে অনন্তাকাশে। এখানে কবি সেই মানবদেহের নশ্বরতা সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন।
পরিশেষে একথাই প্রণিধানযোগ্য যে, মানব দেহ খাঁচা সদৃশ। এটি ক্ষণস্থায়ী। তাই খাঁচার ন্যায় এ মানব দেহ নশ্বর। অর্থাৎ মৃত্যুর স্বাদ আমাদের সকলেই একদিন গ্রহণ করতে হবে। এ চিরন্তন সত্যই বাউল পদাবলীর মূল সুর।
Leave a comment