প্রশ্নঃ মাধ্যমিক সাক্ষ্য বলতে কি বুঝ? কখন এমন সাক্ষ্য দেয়া যেতে পারে?

মাধ্যমিক বা গৌণ সাক্ষ্যঃ সাক্ষ্য আইনের ৬৩ ধারার বিধান মতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি গৌণ সাক্ষ্যের অন্তৰ্গত-

 

(১) সাক্ষ্য আইনের ৭৬ ধারার বিধান মোতাবেক প্রদত্ত কোন দলিলের জাবেদা নকল;

(২) মূল দলিল থেকে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রস্তুত এ রক
ম নকল, যাতে নকলের নির্ভুলতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় এবং এ রকম নকলের সহিত মিলায়ে নেয়া অন্য নকল;

(৩) মূল দলিল থেকে প্রস্তুত করা অবিকল নকল বা মূল দলিল থেকে মিলিয়ে নেয়া নকল বা প্রতিলিপি;

(৪) কোন দলিলের মুড়ি (Counterpart) যে পক্ষ সেটি সম্পাদন করেনি বলে দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবহারের ক্ষেত্রে;

(৫) যে ব্যক্তি মূল দলিলটি দেখেছেন, তার প্রদত্ত উক্ত দলিলের বিষয়বস্তু সম্পর্কিত মৌখিক বিবরণ। 

গৌণ সাক্ষ্যের গ্রহণীয়তাঃ সাক্ষ্য আইনের ৬৫ ধারার বিধান মতে নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে দলিলের অস্তিত্ব অবস্থা বা বিষয়বস্তু সম্পর্কে গৌণ সাক্ষ্য দেয়া যেতে পারে-

(ক) মূল দলিলটি যার বিরুদ্ধে প্রমাণ করতে হবে সে দলিলটি যদি সেই ব্যক্তির কর্তৃত্বাধীনে থাকে অথবা আদালতের আওতার বাইরে কোন ব্যক্তির দখলে বা কর্তৃত্বাধীনে থাকে অথবা এমন লোকের দখলে বা কর্তৃত্বাধীনে থাকে যে ব্যক্তি এই আইনের ৬৬ ধারায় নোটিশ পাওয়া সত্ত্বেও মূল দলিলটি দাখিল করছে না।

(খ) মূল দলিলটি যার বিরুদ্ধে প্রমাণ করতে হবে সে ব্যক্তি অথবা তার কোন প্রতিনিধি যদি মূল দলিলের অস্তিত্ব, অবস্থা ও বিষয়বস্তু লিখিতভাবে স্বীকার করেছে বলে প্রমাণিত হয়। 

(গ) মূল দলিলটি যে ক্ষেত্রে বিনষ্ট হয়েছে বা হারিয়ে গেছে অথবা যে দলিলের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সাক্ষ্য দিতে ইচ্ছুক ব্যক্তি তার নিজের ত্রুটি অথবা অবহেলা ব্যতীত অন্য কোন কারণে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে তা দাখিল করতে অপারগ।

 

(ঘ) মূল দলিলটি যদি এরূপ ধরনের হয় যে তা সহজে স্থানান্তর করা যায় না।

(ঙ) মূল দলিলটি যে ক্ষেত্রে এই আইনের ৭৪ ধারার বিধান মতে সরকারী দলিল।

 

(চ) মূল দলিলটি যদি এধরনের হয় যে তার সহিমোহরযুক্ত নকল সাক্ষ্যরূপে ব্যবহারের বিধান আছে। 

 

(ছ) মূল হয় যে, এতে বহু দলিলের বিবরণ আছে এবং সেগুলো আদালতের পক্ষে পরীক্ষা করে দেখা সুবিধাজনক নয় এবং যা প্রমাণ করতে হবে তা ঐ সকল দলিলের সাধারণ ফলস্বরূপ। 

উপরিউক্ত (ক), (গ) ও (ঘ) এর ক্ষেত্রে মূল দলিলের বিষয়বস্তু সম্পর্কে যে কোন প্রকারের গৌণ সাক্ষ্য দেয়া যাবে। (খ) এর ক্ষেত্রে লিখিত স্বীকৃতি গ্রহণযোগ্য সাক্ষ্য হবে। (ঙ) ও (চ) এর ক্ষেত্রে কেবল সংশ্লিষ্ট মূল দলিলের সহিমোহরকৃত নকল গৌণ সাক্ষ্যরূপে গ্রহণযোগ্য হবে। (ছ) এর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোন পারদর্শী ব্যক্তি কর্তৃক দলিলগুলি পরীক্ষিত হয়ে থাকলে ঐগুলির সাধারণ ফল সম্পর্কে তার সাক্ষ্য গ্রহণীয় হবে।