গ্রামের তিন ব্যক্তি: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছােটোগল্পের প্রধান চরিত্র উচ্ছব মাতলা নদীর পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার সুন্দরবন অঞ্চলের এক দরিদ্র গ্রামে বাস করত। এ গল্পে এই গ্রামের সাধন দাশ, মহানাম শতপথি ও সতীশ মিস্তিরির পরিচয় পাওয়া যায়।
সাধন দাশ : সাধন দাশ উচ্ছবের বিশেষ পরিচিত ছিলেন। ঝড়-বৃষ্টির রাতে ধনে-জনে সর্বস্বান্ত হয়ে যাওয়া উচ্ছব যখন উন্মাদের মতাে বউ-ছেলেমেয়েকে খোঁজার ব্যর্থ চেষ্টা করছিল, তখন সাধন দাশই তার সংবিৎ ফেরানাের উদ্দেশ্যে তাকে জানান— “তােরেও তাে টেনে নেচ্ছেল। গাচে বেধে রয়ে গেলি।” এর কয়েকদিন পর উচ্ছব যখন কলকাতা যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়, তখন সাধন দাশ সরকার ঘর কত্তে খরচা দেবে জানিয়ে তাকে গ্রাম ত্যাগ করতে নিষেধ করেন। সুতরাং সাধন ছিলেন উচ্ছবের শুভাকাঙ্ক্ষী।
মহানাম শতপথি : মহানাম শতপথি ছিলেন ব্রাক্ষ্মণ। চারপাশের কয়েকটি প্রেমের বন্যা-মৃতদের শ্রাদ্ধের দায়িত্ব ছিল তার উপর।
সতীশ মিস্তিরি : জোতদার সতীশ মিস্তিরির জমিতেই বছরের কয়েকমাস চাষের কাজ করত উচ্ছব। কিন্তু ঝড়জলের রাতে সর্বস্বান্ত, উন্মাদপ্রায় হয়ে যাওয়া উচ্ছব একদিন তার কাছে ভাত খেতে চাইলে তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন। উচ্ছবকে তিনি জানান, “তােকে এগলা দিলে চলবে? তাহলেই পালে পালে পঙ্গপাল জুটবে নে?” সুতরাং, এই ধনী ব্যক্তির দয়া-মায়া-মমতা বলে কিছুই ছিল না।
Leave a comment