মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্ৰকবিতায় মাহেশ্বরী পুরীর রানি জনা রাজা নীলধ্বজকে উদ্দেশ করে আলােচ্য মন্তব্যটি করেছেন।

পাণ্ডবদের অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘােড়ার গতিরােধ করার জন্য মাহেশ্বরী পুরীর যুবরাজ প্রবীর অর্জুনের হাতে নিহত হন। রাজমাতা জনা চেয়েছিলেন, রাজা নীলধ্বজ নিশ্চয় পুত্রহত্যার প্রতিশােধ নেবেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায় যে, রাজা নীলধ্বজ পুত্রঘাতক পার্থর সঙ্গে সখ্য স্থাপন করেছেন। ক্ষুদ্ধ ও লজ্জিত জনা নীলধ্বজের উদ্দেশে এরপর একের পর এক যুক্তি দিয়ে বলেছেন অর্জুন কখনও কোথাও কোনােরকম মহারথী প্রথা মানেননি। ব্রাহ্মণ ছদ্মবেশে দ্রৌপদীকে লাভ, কৃয়ের সাহায্যে খাণ্ডব বন দহন, শিখণ্ডীর সাহায্যে ভীষ্মবধ, দ্রোণাচার্য বধ বা কর্ণবধ এই কোনােকিছুই অর্জুন একক কৃতিত্বে করেননি। সবক্ষেত্রেই তিনি অপরের সাহায্য নিয়েছিলেন বা সৌভাগ্যক্রমে পেয়েছিলেন বলেই পার্থ কিছুতেই মহারথী বলে সম্বােধিত হওয়ার যােগ্য নন। তাই জনা পার্থকে কখনও মহাপাপী’, কখনও নরাধম’, আবার কখনও-বা বর্বর বলে উল্লেখ করেছেন। অর্জুনের আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে স্বামীর উদ্দেশে তার প্রশ্ন, ‘মহারথী-প্রথা কি হে এই, মহারথি?’

এভাবেই পার্থের বীরত্বপূর্ণ ভাবমূর্তি একটি মিথ্যা ধারণা এ কথা প্রমাণ করে নীলধ্বজকে পুনরায় ক্ষত্রিয়ধর্মে ফিরিয়ে আনার জন্য জনা অর্জুনের দ্বারা বারংবার মহারথী-প্রথা লঙ্ঘনের উদাহরণ নীলধ্বজের সামনে তুলে ধরেছেন।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্রকবিতায় দেখা যায়, পার্থের অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘােড়া ধরার জন্য মাহেশ্বরী পুরীর যুবরাজ প্রবীরকে পার্থ হত্যা করেন। রাজমাতা জনা আশা করেছিলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব, ক্ষত্রিয় বংশের মর্যাদা রক্ষার জন্য এবং পুত্রহত্যার প্রতিশােধ গ্রহণের জন্য রাজা নীলধ্বজ অবশ্যই যুদ্ধে তৎপর হবেন। “ক্ষত্রধর্ম্ম, ক্ষত্রকর্ম্ সাধ ভুজবলে।”—এই ছিল ক্ষত্রিয় রাজা নীলধ্বজের প্রতি জনার আহ্বান। কিন্তু তীব্র ক্ষোভ এবং বিস্ময়ের সঙ্গে জনা লক্ষ করেন যে, নীলধ্বজ অর্জুনের সঙ্গে সন্ধি ও সখ্য স্থাপন করেছেন, নানান মিষ্ট কথায় অর্জুনকে তুষ্ট করার চেষ্টা করে চলেছেন, নর্তকী এবং গায়কদের দ্বারা তার মনােরঞ্জনের কোনাে ত্রুটি রাখছেন না। এই ঘটনায় ক্ষুধ এবং বিষঃ জনা তাঁর তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করেন। তাঁর কাছে এ হল, “চণ্ডালের পদধূলি ব্রাহ্মণের ভালে”। কিন্তু ক্ষোভ প্রকাশের পরেও স্বামীর প্রতি সনাতন ভারতীয় নারীর মতাে সন্ত্রম দেখিয়ে জনা নিজেকে সংযত করেছেন। ‘গুরুজন স্বামীর প্রতি বিরূপ মন্তব্য করা থেকে বিরত হওয়ার প্রসঙ্গেই উদ্ধৃত মন্তব্যটি করা হয়েছে।

নীলধ্বজের ভূমিকায় বিষন্ন জনা নারী হওয়ার জন্য নিজে পার্থের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অক্ষম বলে মর্মযন্ত্রণ প্রকাশ করেছেন। পুত্র তাকে চিরদিনের মতাে ছেড়ে গেছেন, তাই জাহ্নবীর জলে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে তার যন্ত্রণার অবসান ঘটাতে চেয়েছেন তিনি।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্ৰকবিতায় পুত্র প্রবীরের মৃত্যুর পর জনা চেয়েছিলেন রাজা নীলধ্বজ পুত্রহত্যার প্রতিশােধ গ্রহণ করুন।

যদিও জনার শত অনুরােধ সত্ত্বেও রাজা নীলধ্বজ কিন্তু যুদ্ধ যাত্রার কোনাে আয়ােজন করেন না। তিনি বরং অতিথিরত্ন পার্থকে সাদরে বরণ করে নিতেই ব্যস্ত থাকেন। পুত্রহস্তা পার্থকে মিত্রশ্রেষ্ঠ হিসেবে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত দেখে জনা বিস্মিত ও হতবাক হয়ে যান। নীলধ্বজের এই অস্বাভাবিক আচরণের ব্যাখ্যা খোঁজেন এই ভেবে যে, পুত্রের মৃত্যুতে রাজা নীলধ্বজ হয়তাে তার স্বাভাবিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। নয়তাে কীভাবে, কোন্ যুক্তিতে তিনি তাঁর পুত্রের রক্তে রঞ্জিত হত্যাকারীর হাত মিত্রভাবে স্পর্শ করেন! ক্ষত্রিয়ধর্মের এই লঙ্ঘন যে দেশে-দেশান্তরে আলােচনা ও ব্যঙ্গের বিষয় হবে, জনা তা নিশ্চিতভাবেই উপলদ্ধি করেছেন। এরপর জনা বাধ্য হয়েই নীলধ্বজের কাছে প্রকাশ করে দেন শ্রেষ্ঠ বীর হিসেবে সকলের দ্বারা বন্দিত পার্থের শঠতাকে। এত কিছুর পরেও জনা যখন বুঝতে পারেন যে, কিছুতেই তিনি আর স্বামীকে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করে তুলতে সক্ষম হবেন না, তখন স্বামীর প্রতি জনার ক্ষোভ হতাশার আকার নেয়। জনার মনে হয়, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী হিসেবে তাঁর বিশেষ কোনাে গুরুত্বই নেই। এই অসহায়তা থেকেই জনা গঙ্গার জলে আত্মবিসর্জনের সিদ্ধান্ত নেন।

নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্ৰকবিতায় নীলধ্বজ‌ পুত্রহস্তা পার্থের সঙ্গে সখ্য স্থাপন করায় ক্ষুব্ধ, বিরক্ত জনা পার্থের চরিত্রের নীচতাকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন। তাই তাঁর জননী কুন্তীও জনার আক্রমণের লক্ষ্য হয়েছেন। একদা কুন্তীর আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে মহর্ষি দুর্বাসা বর দিয়েছিলেন যে, কুন্তী তার দেওয়া মন্ত্রের সাহায্যে যখনই যে দেবতাকে স্মরণ করবেন, তিনি তখনই তার কাছে আসবেন এবং তাঁর প্রসাদে কুন্তীর পুত্রলাভ হবে। কৌতূহলী কুন্তী এরপর সূর্যকে আহ্বান করেন এবং এই ঘটনার ফলশ্রুতিতে কর্ণের জন্ম হয়। কুমারী-জননী কুন্তী কলঙ্কের ভয়ে কর্ণকে জলে ভাসিয়ে দেন। এরপর ব্ৰত্মশাপে সন্তান উৎপাদনে অক্ষম স্বামী পাণ্ডুর ইচ্ছায় কুন্তী প্রথমে ধর্ম, পরে বায়ু এবং শেষে ইন্দ্রকে আহ্বান করেন। এরই পরিণতিতে যথাক্রমে যুধিষ্ঠির, ভীম এবং অর্জুনের জন্ম হয়। কিন্তু কুন্তীর এই আচরণ জনার দ্বারা তীব্রভাবে নিন্দিত হয় এবং তিনি কুন্তীকে স্বৈরিণী, কুলটা ও ‘বেশ্যা’ বলে সম্বােধন করেন। এভাবে অর্জুনের জন্ম ইতিহাস ও বংশমর্যাদাকে কালিমালিপ্ত করে জনা চেয়েছেন তার প্রতি নীলধ্বজের বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে। আর এর মধ্য দিয়ে নীলধ্বজকে ক্ষত্রিয়ধর্মে ফেরত আনতে।

“১৬১২ সালের মে মাসে তিনি চিঠিতে লিখলেন”—চিঠি লেখার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে চিঠিটির বক্তব্য নিজের ভাষায় লেখাে।

“এই স্বভাবই শেষ জীবনে তার অশেষ দুঃখের কারণ হলাে” -কার কোন্ স্বভাবের কথা বলা হয়েছে? সেই স্বভাব তার শেষ জীবনে অশেষ দুঃখের কারণ হলাে কীভাবে?

গালিলিও-র ছাত্রজীবন সম্পর্কে যা জান লেখাে।

গালিলিও’ প্রবন্ধটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করাে।

‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অনুসরণে গালিলিওর বিজ্ঞানসাধনার পরিচয় দাও।

“নিজের দূরবিন নিয়ে গালিলিও অনেক নতুন আবিষ্কার করলেন।”—দূরবিনের সাহায্যে গালিলিও কী কী আবিষ্কার করলেন? সনাতনীরা তার বিরুদ্ধতা করেছিলেন কেন?

সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বনে প্রখ্যাত বিজ্ঞানী গালিলিওর পরিবারের পরিচয় দাও। পারিবারিক দায়িত্ব পালনে গালিলিওর ভূমিকা আলােচনা করাে।

“গালিলিও রাজি হলেন,”—কোন্ ব্যাপারে রাজি হয়েছিলেন গালিলিও? গালিলিওর জীবনের শেষ পাঁচ বছরের পরিচয় দাও।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কী ধরনের রচনা তার ব্যাখ্যা করাে।

পৌরাণিক চরিত্র নিয়ে ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা রচিত হলেও সেখানে কবি মধুসূদনের যে স্বাতন্ত্রের পরিচয় পাওয়া যায় তা লেখাে।

রেনেসাঁর লক্ষণগুলি কীভাবে ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রকাব্যে প্রতিফলিত হয়েছে লেখাে।

পত্ৰকাব্যের সংজ্ঞা দাও। কোন্ পত্রকাব্য দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মধুসূদন তাঁর নীলধ্বজের প্রতি জনা লিখেছিলেন?

পত্ৰকবিতা হিসেবে ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’-র সার্থকতা আলােচনা করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশ অবলম্বনে নীলধ্বজ চরিত্রটিকে বিশ্লেষণ করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কাব্যাংশে উল্লিখিত জনা চরিত্রটি সম্পর্কে আলােচনা করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশে নীলধ্বজের প্রতি জনার যে ক্ষোভ ও অভিমানের প্রকাশ ঘটেছে, তা নিজের ভাষায় লেখাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশে জনা কেন কুন্তীর নিন্দায় সরব হয়েছেন? কুন্তী সম্পর্কে জনা যে মূল্যায়ন করেছেন তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশে জনা কেন দ্রৌপদীর নিন্দায় সরব হয়েছেন? দ্রৌপদী সম্পর্কে জনা যে মূল্যায়ন করেছেন তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশে জনা কেন অর্জুনের নিন্দায় সরব হয়েছেন? অর্জুন সম্পর্কে জনা যে মূল্যায়ন করেছেন তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করাে।

“সত্যবতীসুত ব্যাস বিখ্যাত জগতে!” -মন্তব্যটির পৌরাণিক প্রসঙ্গ উল্লেখ করাে। কাব্যাংশে এটি উল্লেখের কারণ আলােচনা করাে।

“বসুন্ধরা গ্রাসিলা সরােষে/ রথচক্র যবে, হায়;” -মন্তব্যটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করাে। মন্তব্যটিতে যে পৌরাণিক প্রসঙ্গের উল্লেখ করা হয়েছে তার বিস্তৃত বর্ণনা দাও।

“হতজ্ঞান আজি কি হে পুত্রের বিহনে” -বক্তা এই মন্তব্যটি কখন করেছেন? তার এরূপ মন্তব্যের কারণ কী?

“কি কহিবে, কহ/ যবে দেশ-দেশান্তরে জনরব লবে/ এ কাহিনী” -মন্তব্যটির তাৎপর্য আলােচনা করাে।

“…কী গুণে তুমি পূজ, রাজরথি,/ নরনারায়ণ-জ্ঞানে?”- মন্তব্যটির তাৎপর্য আলােচনা করাে।

“এই তাে সাজে তােমারে, ক্ষত্রমণি তুমি,” -বক্তার এই মন্তব্য কি যথার্থ ছিল?

“ভুলিব এ জ্বালা,/এ বিষম জ্বালা, দেব, ভুলিব সত্বরে। বক্তা এখানে কোন জ্বালা ভুলতে চেয়েছেন? শেষপর্যন্ত কীভাবে এই জ্বালা থেকে তিনি মুক্তি খুঁজেছেন?

“কি লজ্জা! দুঃখের কথা, হায়, কব কারে?” -বক্তা কোন্ দুঃখ এবং লজ্জার কথা বলতে চেয়েছেন?

“মিথ্যা কথা, নাথ। বিবেচনা কর,” -এক্ষেত্রে বক্তা কীভাবে নিজের মত প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন?