জে এল মরেনো মনস্তত্ত্বমূলক নাটক:

(1) মনস্তত্ত্বমূলক নাটকাভিনয় (Psycho-drama) পদ্ধতির উদ্ভাবক।

(2) এটি একটি দলগত মনশ্চিকিৎসা পদ্ধতি।

(3) এই পদ্ধতিতে রোগী নিজে নাটক লেখেন এবং অভিনয়য় করেন।

(4) নাটক লেখা এবং অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ব্যক্তির অপূর্ণ ইচ্ছা, আশা, সুখ-দুঃখ প্রকাশ পায়।

(5) এইভাবে তার রুদ্ধ আবেগ মুক্ত হওয়ার সুযােগ পায়।

(6) এই পদ্ধতিতে সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের দুটি দলে ভাগ করা হয়। একটি দল অভিনয় করে ও অন্য দল দর্শকের আসন গ্রহণ করে। এখানে মনশ্চিকিৎসক রােগীদের সঙ্গে নাটকে অভিনয় করতে পারেন অথবা নাটক পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন।

(7) যে নাটক মঞ্চস্থ হবে তা রােগীদের সমস্যাকে কেন্দ্র করেই হবে। নাটক শেষ হওয়ার পর মনশ্চিকিৎসক দর্শক ও অভিনেতাদের নিয়ে এক জায়গায় বসে নাটকের প্রত্যেকটি চরিত্র নিয়ে আলােচনা করে। বিভিন্ন চরিত্রগুলির মনের অন্তর্দ্বন্দ্ব, সমস্যা, তাদের আচরণ এরকম হওয়ার কারণ ইত্যাদি সম্পর্কে সকলকে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। প্রত্যেকটা চরিত্রের মানসিক জটিলতা বা অন্তর্দ্বন্দ্ব কীভাবে কাজ করছে।

সাইবেগ ড্রামা : এটি দুটি পদ্ধতিতে কাজ করে।

প্রথম: রোগী নিজে যখন দর্শকদের আসন গ্রহণ করে এবং রােগীর ভূমিকায় অন্য কেউ অভিনয় করে, দর্শক হওয়ার ফলে সে বুঝতে পারে তার আচরণের কি সমস্যা হয়েছে, এর ফলে সমাজ জীবনে কী | প্রভাব ফেলে, এই আচরণ কতটা ক্ষতিকর ইত্যাদি। ফলে বাস্তবে সে আচরণ পরিবর্তন করতে সচেষ্ট হয়।

দ্বিতীয় : রোগী এবার তার পরিবারের কোনো একজন সদস্যের ভূমিকায় অভিনয় করে। এর ফলে সে অনুধাবন করতে পারে পরিবারের কেউ সমস্যাক্রান্ত হলে অন্যান্য সদস্যদের উপর তার কীরূপ প্রভাব পড়ে। পরিবারে কী ধরনের সমস্যার ফলে এই ধরনের আচরণগত সমস্যা দেখা যায়, সে বুঝতে পারে। মনচিকিৎসক বিভিন্ন আলোচনার মাধ্যমে রোগীকে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করেন। এতে রোগী এই ধরনের আচরণের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হয় এবং আচরণের পরিবর্তন ঘটাতে উদ্যোগী হয়।

এই নাটকাভিনয়ের মাধ্যমে রোগী নিজের আচরণ বা সমস্যা সম্পর্কে বোঝার চেষ্টা করে। অনেক সময় তার সমস্যার সমাধান এর থেকে পায়। ফলে সমস্যামূলক আচরণের প্রতিকার সম্ভব হয়।