অথবা, শৈলবালা মৃত্যুবরণ করে কেন?

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘মধ্যবর্তিনী’ গল্পে নিবারণ শৈলবালার মন জয় করার জন্য গাউন পরা কাচের পুতুল, গোপনে এক শিশি এসেন্স বা মিষ্টিদ্রব্য এনে সখ্যতা গড়ে তোলে। হরসুন্দরী বুঝতে পারে সংসারের সমস্ত কাজ করতে হবে তাকে এবং তারা (নিবারণ এবং শৈলবালা) দু’জন মিলে সারাদিন শিশুর মতো আচরণ করবে। হরসুন্দরী সংসারের কোনো কাজ শৈলবালাকে করতে দেয় না। এমনকি কোন কাজে হাত দিলেও নিবারণ বাবু কষ্ট পায়। হরসুন্দরী তার নিজের সমস্ত গহনা শৈলবালাকে দিয়ে দেয়। এদিকে শৈলবালার বিভিন্ন আবদার মিটাতে বা শখের বশে নিবারণ বাবু তাকে গোপনে অনেক কিছু কিনে দেয়। তার আবদার মিটাতে গিয়ে অবশেষে নিবারণ বাবু ম্যাকমোরান কোম্পানির ক্যাশ তহবিলেও গোপনে হাত প্রদান করে। তার-এ অপকর্ম ধরা পড়লে কোম্পানির মালিক তাকে আড়াই হাজার টাকা পূরণের জন্য দু’দিন সময় বেঁধে দেয়। হাতটানের টাকা পূরণের জন্য নিবারণ বাবু হরসুন্দরীর কাছে হাত পাতে কিন্তু তত দিনে সে গহনার মালিক হয়েছে শৈলবালা। সে কিছুতেই বিপদের সময় সে গহনা নিবারণকে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। গল্পের ভাষায়:

“হরসুন্দরী হতবুদ্ধি স্বামীকে কহিল, “তালা ভাঙিয়া ফেলো না।” শৈলবালা প্রশান্তমুখে বলিল, “তাহা হইলে আমি গলায় দড়ি দিয়া মরিব।”

শৈলবালা তার সিন্দুকের চাবি পুকুরে নিক্ষেপ করে। অবশেষে নিবারণ তার পৈতৃক বাড়ি আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করে অন্যত্র চলে যায়। নতুন বাসায় এসে শৈলবালার অসুখের এবং অসন্তোষের শেষ থাকে না। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এসে অন্তঃসত্ত্বা শৈলবালা অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং পরিণতিতে অন্তঃসত্ত্বা শৈলবালা, মু্যুবরণ করে, যা সব পাঠককে ছুঁয়ে যায়।