পাশ্চাত্ত্য অভিনয়কলার আদর্শ অনুসরণে বাঙলার থিয়েটার গড়ে তুলবার উদ্যম দেখা দেয় উনবিংশ শতাব্দীর চতুর্থ দশক থেকে। ১৮৩৫ খ্রীষ্টাব্দে শ্যামবাজারে ‘নবীন বসুর রঙ্গমঞ্চ’ এবং আরও পরবর্তীকালে ‘বিদ্যোৎসাহিনী রঙ্গমঞ্চ’ (১৮৫৭), ‘বেলগাছিয়া নাট্যশালা’ (১৮৫৮), ‘পাথুরিয়াঘাটা রঙ্গনাট্যালয়’ প্রভৃতি শৌখীন রঙ্গমঞ্চের প্রতিষ্ঠাতাদের উৎসাহেই আমাদের থিয়েটারের সূচনা এবং বিকাশ হয়। অভিনয়ের আগ্রহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন নাটকের প্রয়ােজন দেখা দেয়। এই প্রয়ােজন মিটিয়ে মধুসূদনের পূর্বে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন রামনারায়ণ তর্করত্ন। বেলগাছিয়া নাট্যশালায় এই রামনারায়ণের রত্নাবলী’ নাটকের রিহাস্যাল দেখে মধুসূদন বাঙলা নাটকের দৈন্যদশা ঘােচাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন এবং তার প্রথম নাটক ‘শর্মিষ্ঠা’ (১৮৫৯) রচনা করেন। এই নাটকের অভিনয় সাফল্য উৎসাহিত হয়ে তিনি দুবছরের মধ্যে পর পর ‘পদ্মাবতী’ (১৮৬০), ‘কৃষ্ণকুমারী’ (১৮৬১) এবং ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ (১৮৬০) ও ‘বুড়াে শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ (১৮৬০) এই চারখানি নাটক ও প্রহসন রচনা করেন। রামনারায়ণ তর্করত্ন পর্যন্ত বাঙলা নাটকে কোন সুষ্ঠু শিল্পরূপ সৃষ্টি হয় নি। পাশ্চান্ত্য সাহিত্যের নানা শাখায় সুপণ্ডিত এবং প্রকৃত সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী মধুসূদনই বাঙলা নাটকের আদর্শ প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সংস্কৃত প্রভাব বর্জন করে পাশ্চাত্ত্য নাট্য-আঙ্গিক আয়ত্ত করে যে প্রকৃত বাঙলা নাটক সম্ভব এ বিষয়ে মধুসূদন নিশ্চিত ছিলেন। ‘শর্মিষ্ঠা’য় এ বিষয়ে তিনি পূর্ণ সাফল্য অর্জন করতে পারেন নি। সংস্কৃত নাটকের প্রভাবে ‘শর্মিষ্ঠা’র রচনাভঙ্গি আড়ষ্ট। প্রত্যক্ষ নাট্য ক্রিয়ার পরিবর্তে পরােক্ষ প্রভাবে শর্মিষ্ঠা’র রচনাভঙ্গি আড়ষ্ট। প্রত্যক্ষ ঘটনার বিবরণ উপস্থাপন করায় শর্মিষ্ঠায় নাট্যরস সংহত হয়ে উঠতে পারে নি। মধুসূদন অনলসভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষার পথে অগ্রসর হয়ে ‘পদ্মাবতী’তে অপেক্ষকৃত উন্নততর শিল্পকৃতি উপস্থাপন করেন। তৃতীয় নাটক ‘কৃষ্ণকুমারী’ তার শ্রেষ্ঠ রচনা। রাজপুতানার ইতিহাস থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে পারিবারিক এবং রাজনৈতিক পটভূমির নানামুখী ঘটনায় আবর্তিত এক জটিল নাট্যকাহিনী তিনি এই নাটকে রচনা করেছেন। ‘কৃষ্ণকুমারী’ বাঙলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ট্র্যাজিডি। এই তিনটি নাটকে মধুসূদন পাশ্চাত্ত্য নাট্যাদর্শকে বাঙলা সাহিত্যে স্থায়িভাবে প্রতিষ্ঠিত করে দিলেন। বাঙলা নাটকের আর একটি বিশিষ্ট শাখা প্রহসন। প্রহসনের আদর্শ শিল্পরূপ মধুসূদনের ‘বুড়াে শালিকের ঘাড়ে রো’ নামক রচনায় চূড়ান্তভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
মধুসূদন যার সূচনা করলেন সেই পথে বাঙলা নাটককে বিপুলতর সৃষ্টিসম্ভারে সমৃদ্ধ করে তুলেছেন দীনবন্ধু মিত্র। দীনবন্ধু নাটকের বিষয়বস্তু-অন্বেষণে পুরাণ-ইতিহাসের মুখাপেক্ষী না হয়ে সমসাময়িক জীবনের বাস্তব পটভূমির ওপরেই নির্ভর করেছেন। সিপাহী বিদ্রোহের পরে নীল চাষ সংক্রান্ত কৃষি-সমস্যা এবং কৃষকদের ওপরে নীলকর সাহেবদের অকথ্য অত্যাচার নিয়ে দেশের সর্বশ্রেণীর মানুষের মধ্যে যে বিক্ষোভ দেখা দিয়েছিল, সেই বাস্তব জীবনের সংকট এবং বিক্ষোভকেই তিনি তার প্রথম নাটক ‘নীলদর্পণ’-এর বিষয়বস্তুরূপে ব্যবহার করেন। তখনকার সাহিত্যিক পরিবেশ-সম্পর্কে অবহিত পাঠক মাত্রেরই কাছে দীনবন্ধুর এই প্রচেষ্টাকে দুঃসাহসী এবং বলিষ্ঠ মনােভাবের পরিচায়ক বলে বােধ হবে। বাঙলাদেশের সাধারণ মানুষ তাদের শক্তি ও দুর্বলতা, তাদের বিশিষ্ট স্বভাব নিয়ে এই নাটকের বাস্তব প্রেক্ষাপটে নিজেদের যথাযথ স্থান অধিকার করেছে। বাংলাদেশ ও বাঙালী জমসমাজে পাশ্চাত্ত্য প্রভাবে যে রূপান্তর সাধিত হচ্ছিল—সেই ভাঙাগড়ার পটে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের চারিত্রিক বিকার-বিকৃতি দীনবন্ধুর পরবর্তী নাটক-প্রহসনে উজ্জ্বলভাবে চিত্রিত হয়েছে। বস্তুনিষ্ঠ জীবনদৃষ্টিই দীনবন্ধুর প্রধান বৈশিষ্ট্য। আপন প্রতিভার ধর্ম থেকে তিনি যেখানে বিচলিত হন নি সেই সব রচনায় তার শিল্প-সাফল্য অতুলনীয়। ‘বিয়ে পাগলা বুড়ো’ (১৮৬৬), ‘সধবার একাদশী’ (১৮৬৬), ‘জামাই বারিক’ (১৮৭২) প্রভৃতি দীনবন্ধুর অবিস্মরণীয় রচনা। তাঁর সমগ্র রচনাবলীর মধ্যে সধবার একাদশী শ্রেষ্ঠ। বাস্তবতার রসে পুষ্ট দীনবন্ধুর সামাজিক নাটকগুলির জন্যই অভিজাত শ্রেণীর শৌখীন নাট্যচর্চার গণ্ডির বাইরে বৃহত্তর জনসমাজের অভিনয়-কলার প্রসার সম্ভব হয়েছিল। অপেক্ষাকৃত কম খরচে অভিনয় করা সম্ভব হওয়ায় এই নাট নিয়ে বিত্তহীন অথচ কলারসিক যুবকবৃন্দ বাঙলার জাতীয় রঙ্গালয় ‘ন্যাশনাল থিয়েটার’ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। মধুসূদন-উদ্ভাবিত বাংলা নাটকের শিল্পরূপ দীনবন্ধুই জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন।
দীনবন্ধুর পরে বাঙলার নাট্যক্ষেত্রে শক্তিশালী প্রতিভাধররূপে আবির্ভূত হন গিরিশচন্দ্র ঘােষ। তাদের মধ্যবর্তীকালে আরও কয়েকজন লেখক বাঙলা নাটকের ঐতিহ্যকে নানাভাবে পরিপুষ্ট করেছেন। এই লেখকদের মধ্যে মনােমােহন বসু, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং রাজকৃষ্ণ রায়ের নাম উল্লেখযােগ্য।
মনােমােহন বসুর (১৮৩১-১৯১২) ‘সতী (১৮৭৩), হরিশ্চন্দ্র’ (১৮৭৫) প্রভৃতি পৌরাণিক নাটক সমসাময়িক কালে প্রভূত জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। মনােমােহন মধুসূদন-দীনবন্ধু-রচিত নাটকের শিল্পগত আদর্শ হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন নি। তিনি নাটকে একান্তভাবে পাশ্চাত্ত্য রীতি অনুসরণের পক্ষপাতীও ছিলেন না। তিনি রঙ্গমঞ্চে দেশীয় যাত্রার অভিনয় প্রবর্তনের চেষ্টা করেন এবং তার এই চেষ্টা সাফল্যমণ্ডিত হয়। নিজের আদর্শ-সম্পর্কে এক বিবৃতিতে মনােমােহন বলেছেন, “আমরা মধ্যস্থ মানুষ; আমরা চাই দেশে পূর্বে যাহা ছিল, তাহা ধ্বংস না করিয়া তাহাকে সংশােধিত করিয়া লও। আমরা চাই সেই যাত্রার গান সংখ্যায় কমাইয়া ও গাইবার প্রণালীকে শােধিত করিয়া নাটকের স্বভাবানুযায়ী কথােপকথনাদি বিবৃত হউক।” যাত্রাগানের ত্রুটি-বিচ্যুতি শােধন করে তিনি গীতিবহুল, ভক্তিরসাশ্রিত পৌরাণিক আখ্যান নিয়ে এক ধরনের পালাগান প্রবর্তন করেন। এটি ‘গীতাভিনয় নামে খ্যাত। মনােমােহনকে আধুনিক নাট্যকলার ধারায় যাত্রাওয়ালাদের শেষ উত্তরাধিকারী এবং প্রগতি-বিরােধী লেখক বলা যায়। অবশ্য তার রচনা পদ্ধতি দ্বারা গিরিশচন্দ্রও অনেক পরিমাণে প্রভাবিত হয়েছিলেন। তিনি ‘প্রণয় পরীক্ষা’, ‘আনন্দময়’ প্রভৃতি কয়েকটি সামাজিক নাটকও রচনা করেছিলেন। কিন্তু এগুলি বৈশিষ্ট্যবর্জিত রচনা।
জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৪৫-১৯২৫) বাঙলার সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে একজন প্রধান পুরুষ ছিলেন। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে যাদের চেষ্টায় অভিনয়-চর্চার একটা ধারাবাহিক ঐতিহ্য গড়ে ওঠে, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ তাদের অন্যতম। গিরিশচন্দ্রের আবির্ভাবের পূর্বে সামগ্রিকভাবে বাংলা থিয়েটারে জ্যোতিরিন্দ্রনাথের অপ্রতিহত প্রভাব ছিল। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ মনে করতেন—দেশের জনমানসে স্বাদেশিকতা বােধ জাগ্রত করে তােলবার শক্তিশালী মাধ্যম রঙ্গমঞ্চ। তিনি এই উদ্দেশ্য এবং আদর্শ নিয়েই নাটক রচনায় ব্রতী হয়েছিলেন। ‘পুরুবিক্রম’ (১৮৭৪), ‘সরােজিনী’ (১৮৭৫), ‘অশ্রুমতী’ (১৮৭৯), ‘স্বপ্নময়ী’ (১৮৮২) প্রভৃতি ঐতিহাসিক নাটক রচনা করে তিনি বাঙলা সাহিত্যক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা অর্জন করেন। এইসব নাটকে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ একান্তভাবে পাশ্চাত্ত্য নাট্যাদর্শ অনুসরণ করেছেন। আলাউদ্দিনের চিতাের আক্রমণের পটভূমিকায় রচিত সরােজিনী নাটকে মধুসূদনের ‘কৃষ্ণকুমারী’র প্রভাব অত্যন্ত স্পষ্ট। ঐতিহাসিক নাটক ভিন্ন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ গীতিনাট্য এবং প্রহসনও রচনা করেছেন। তার গীতিনাট্যের মধ্যে ‘বসন্তলীলা’ এবং ‘ধ্যানভঙ্গ’ উল্লেখযােগ্য। অনুজ রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সঙ্গীত নিয়ে তিনি যে পরীক্ষা চালাতেন এইসব গীতিনাট্যকে তারই ফল বলা যায়। তার কোন কোন গান রবীন্দ্রনাথের রচনা। জ্যোতিরিন্দ্রনাথের প্রহসনগুলির মধ্যে ‘কিঞ্চৎ জলযােগ’ এবং অলীক বাবু বিখ্যাত রচনা। এইসব মৌলিক রচনা ভিন্ন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ সংস্কৃত, ইংরেজি এবং ফরাসী ভাষা থেকে বহু নাটক বাঙলায় অনুবাদ করেছিলেন। তার সমগ্র রচনাবলীর দুই-তৃতীয়াংশই অনুবাদ। সংস্কৃত ভাষায় রচিত প্রায় সবগুলি নাটক তিনি বাংলায় অনুবাদ করেন। এটি তার সাহিত্যিক কীর্তি-প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য।
রাজকৃষ্ণ রায় (১৮৪৫-১৮৯৪) বীণা নামক সাধারণ রঙ্গালয়ের পরিচালকরূপে দক্ষতার পরিচয় দেন এবং রঙ্গমঞ্চের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত থেকে অনেকগুলি নাটক রচনা করেন। ফারসী সাহিত্যের বিষয় নিয়ে রচিত লয়লা মজনু, ‘বেনজীর বদরেমুনি’র নাটকে তিনি বিষয়ের দিক থেকে বৈচিত্র্য সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু নাট্যকার হিশাবে তার খ্যাতি এবং জনপ্রিয়তার হেতু ‘পতিব্রতা’, ‘অনলে বিজলী’, ‘প্রহ্লাদ মহিমা’ প্রভৃতি পৌরাণিক নাটক। চিতােরের রাণা সঙ্গ সিংহের কাহিনী নিয়ে রচিত ‘লৌহ কারাগার’ এবং ধাত্রী পান্নার কাহিনী নিয়ে রচিত ‘বনবীর’ নামক ঐতিহাসিক নাটক দুটিও উল্লেখযােগ্য। রাজকৃষ্ণ রায়ের কোন নাটকেই বিশিষ্টতা বা শিল্পগত উৎকর্ষের পরিচয় নেই। তার রচনায় মনােমােহন বসুর প্রভাবই অনুভব করা যায়।
বাঙলা নাটকের ক্ষেত্রে এইসব লেখকদের প্রভাব-প্রতিপত্তি গিরিশচন্দ্রের আবির্ভাবে বিলুপ্ত হয়ে যায়। অসাধারণ শক্তিশালী নট এবং নাট্য-পরিচালক গিরিশচন্দ্র সাধারণ রঙ্গমঞ্চে ক্রমে অপ্রতিহত প্রভাব বিস্তার করেন। গিরিশচন্দ্র-রচিত নাটকের সংখ্যা প্রায় শত সংখ্যক। এইসব রচনার সাহিত্যিক গুণ যেমনই হােক, তার অভিনয় এবং পরিচালনা-নৈপুণ্যে প্রতিটি নাটকই মঞ্চসাফল্য অর্জন করত। একাদিক্রমে পৌরাণিক, ঐতিহাসিক এবং সামাজিক নাটকের অবিশ্রান্ত ধারায় তিনি অন্য সকলের রচনাকে আচ্ছন্ন করেছেন। গিরিশচন্দ্রের পৌরাণিক নাটকের মধ্যে জনা’, ঐতিহাসিক নাটকের মধ্যে ‘সিরাজদ্দৌলা’ এবং সামাজিক নাটকের মধ্যে ‘প্রফুল্ল’ শ্রেষ্ঠ রচনা। এই নাটকগুলির অভিনয়-সাফল্যও অসাধারণ ‘সিরাজদ্দৌলা নাটক রাজরােষে পড়ায় দীর্ঘকাল সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত অবস্থায় থাকে সাহিত্যিক প্রতিভায় গিরিশচন্দ্র খুব বড়াে ছিলেন না, কিন্তু তিনি যে সব নাটক রচনা করেছেন উপযুক্ত অভিনেতৃগােষ্ঠীর সহায়তায় তার অভিনয় করে প্রভূত জনসমাদর অর্জন করেছেন এইভাবে দীর্ঘকাল রঙ্গমঞ্চের সঙ্গে সর্বতােভাবে যুক্ত থেকে তিনি নাট্যকলাকে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জীবনে স্থায়িভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এটাই তার সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি। মধুসূদন থেকে যে নাট্যচর্চার সূচনা হয়েছিল গিরিশচন্দ্রে তা দেশের সাংস্কৃতিক জীবনের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত হয়ে সমৃদ্ধির দিকে অগ্রসর হয়েছে।
Leave a comment