আমাদের সৌরজগতে গ্রহের সংখ্যা ৮ টি। মঙ্গল সূর্য থেকে দূরত্বের দিক দিয়ে চতুর্থ গ্রহ এবং সৌরজগতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম গ্রহ। এটি শুধুমাত্র বুধের চেয়ে বড়। মঙ্গলের নামকরণ করা হয় যুদ্ধের রোমান দেবতার নামে। সে সাথে সবার কাছে এটি “লাল গ্রহ” নামেও পরিচিত।


মঙ্গল কে লাল গ্রহ নামকরণের ইতিহাস

মঙ্গলকে সাধারণত লাল গ্রহ বলা হয় কারণ আকাশে লাল বা কমলা রঙের হয়ে দৃশ্যমান হয় বলে। এমনকি এর লালচে রঙ খালি চোখে স্পষ্ট দেখা যায়। 

প্রাচীন গ্রিক ভাষায় গ্রহটির নাম তার লাল রঙ এবং যুদ্ধের দেবতার নামের সাথে সম্পর্কিত। প্রাচীন গ্রিকরা মনে করত লাল রঙটি রক্ত-পিপাসু দেবতা “Mars বা মঙ্গল” কে নির্দেশ করে, যিনি গ্রীক পুরাণে যথাক্রমে সন্ত্রাস ও ভয়ের প্রতীকী যমজ দেবতা ডিমোস এবং ফোবোসের টানা রথে চড়েছিলেন। এই পৌরাণিক কাহিনীর ফলস্বরূপ, মঙ্গল গ্রহের দুটি চাঁদের নামকরণ করা হয় ডিমোস এবং ফোবোস।

আধুনিক প্রযুক্তি এবং মহাকাশযান বিজ্ঞানীদের নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে যে, মঙ্গলের পৃষ্ঠ এবং বায়ুমণ্ডল সূর্যালোকের উপস্থিতিতে লাল দেখায়। 

মঙ্গল গ্রহ কে কেন লাল দেখায়?

প্রতিটি গ্রহেরই স্বতন্ত্র গঠন ও উপাদান রয়েছে। বিভিন্ন গ্রহে বিভিন্ন পদার্থের উপস্থিতির ব্যাপক তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠে প্রচুর পরিমাণে আয়রন অক্সাইড নামক এক ধরনের লাল যৌগ রয়েছে।

লালচে আয়রন অক্সাইড 

প্রকৃতপক্ষে, মঙ্গলের সমগ্র পৃষ্ঠ আয়রন অক্সাইডের একটি পাতলা স্তর দ্বারা আচ্ছাদিত, কারণ লোহা মঙ্গলের ভূত্বকের সবচেয়ে অধিক উপাদানগুলির মধ্যে একটি।

আয়রন অক্সাইডের সহজ পরিচিতি হল “মরিচা”। আমরা লোহার তৈরি কোন বস্তুতে সচারচর মরিচা দেখে থাকি। এই মরিচাই হল আয়রন অক্সাইড।

যখন লোহা পানি এবং অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসে তখন এটি বিক্রিয়া করে লোহার অক্সাইডের একটি স্তর তৈরি করে যা লাল বা কমলা রঙের হয়।

মঙ্গল গ্রহে আয়রন অক্সাইড অনেক আগেই তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করা হয় যখন গ্রহে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পানি ছিল। আর সেজন্যই ভূ-পৃষ্ঠ জুড়ে লোহার সাথে পানির বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়েছে আয়রন অক্সাইডের এই স্তর। আবার মরিচার উপাদান ধুলো মেঘ হিসেবে বায়ুমণ্ডলে অবস্থান করে। ফলে এর বায়ুমণ্ডলও লালচে।

ভাল লাগলে কমেন্ট করে আপনার মতামত জানান