ভিন্ন সক্ষমতা সম্পন্ন শিশু বলতে সেইসমস্ত শিশুদের বােঝায় যাদের ক্ষমতা সাধারণ বা গড় মান থেকে উচ্চ মানের বা নিম্নমানের হয়ে থাকে। মনোবিদ বার্বি (Barbe)-এর মতে, “ব্যতিক্রমধর্মী বলতে সেই সমস্ত শিশুদের কেই বোঝায় যারা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন।” তাই এই সমস্ত শিশুদের শিক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়ােজন। ভিন্ন ধরনের শিশু সম্পর্কে আধুনিক ব্যাখ্যাটি হল—’ব্যতিক্রমী শিশু’ এই শব্দটির দ্বারা যে-কোনাে ধরনের অস্বাভাবিক শিশুকে বােঝায়। যেমন—Subnormal, >Handicapped, >Disabled, >Special, Impaired ইত্যাদি।
আধুনিক ব্যাখ্যা : WHO (World Health Organization) ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে এই সংক্রান্ত আধুনিক ব্যাখ্যা দিয়েছে যা বর্ণনা নিচে করা হল—
ব্যাহত: ব্যাহত বলতে মূলত আবৃত্তি, দৈহিক গঠন এবং অঙ্গসংস্থান গত কোনো অস্বাভাবিক তাকে বোঝায়। যেমন— কোনো ব্যক্তির হয়ে ডান হাতের দুটি আঙুল নেই। এই আঙুল দুটির অভাবে তার হয়তো কোন বিশেষ কাজে সামান্য অসুবিধা হতে পারে কিন্তু সামগ্রিকভাবে অগ্রগতিতে বিশেষ বাধা সৃষ্টি করতে পারে না। সেক্ষেত্রে এই ধরনের শিশুকে ব্যাহত শিশু বলাই ভালো।
অক্ষমতা (Disability) : শারীরিক গঠন, ইন্দ্রিয় সংক্রান্ত, অঙ্গসংস্থান গত এবং পেশীগত কোনো অসুবিধার ফলে যদি ব্যক্তি দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজকর্মে বিশেষ অসুবিধার সম্মুখীন হয় তাকে বলা হয় অক্ষমতা। এক্ষেত্রে ব্যক্তি সাধারণভাবে বিশেষ কাজ করতে সক্ষম না হলেও প্রয়ােজনীয় চিকিৎসা এবং অন্যান্য সংশােধনী ব্যবস্থার মাধ্যমে ক্ষমতার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যেমন— কোনো ব্যক্তি হয়তো কানে একটু কম শোনে, সেক্ষেত্রে শ্রবণযন্ত্র মাধ্যমে সে স্বাভাবিক মানুষের মতো শুনতে পাবে। এটিকে বলা হয় অক্ষমতা।
প্রতিবন্ধী (Handicapped) : ব্যক্তি যখন তার পরিবেশে স্বাভাবিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া করতে অনাক্রম্য বাধার সম্মুখীন হয়, তখন তাকে প্রতিবন্ধী বলা। যেমন- কোনো ব্যক্তি যদি বর্ণান্ধ হয় তাহলে তার কৃষিকাজে অসুবিধা না হলেও বাস চালাতে অসুবিধা হয়। এবং সে প্রতিবন্ধী হিসেবে বিবেচিত হয়।
উপরোক্ত তিন ধরনের ধারণার পারস্পরিক সম্পর্ক কাঠামোটি হল- Impairment >Disability >Handicapped।
এই ভিন্ন ধরনের ব্যক্ৰিমের মাত্রানুযায়ী এদের চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন। সামাজিক ও মানসিক দিক থেকে এরা নিরাপত্তাহীনতায় ভােগে। এরা যেমন সমাজে এখনও বহুভাবে অবহেলিত হয় তেমন পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের কাছে বোঝা প্রতিপন্ন হয়।
Leave a comment