প্রতিবন্ধীর (Handicapped) সংজ্ঞা দাও।

যেসকল ব্যক্তি শারীরিক বা মানসিক অক্ষমতার কারণে আচরণ ও বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে অন্যান্য সাধারণ মানুষদের থেকে আলাদা বলে বিবেচিত, সেই সকল ব্যক্তি প্রতিবন্ধী বলে সমাজে পরিচিত হয়ে থাকে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) সমীক্ষা অনুযায়ী পৃথিবীর মােট জনসংখ্যার কত শতাংশ প্রতিবন্ধী?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী পৃথিবীর মােট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী।

অক্ষম শিশু (Disabled) বলতে কী বােঝায়?

যেসকল শিশু অঙ্গসংস্থানগত বা মানসিক অক্ষমতাজনিত সমস্যার কারণে স্বাভাবিক জীবনে অনেকরকম কাজ নিজে করতে বাধাপ্রাপ্ত হয় তাদের অক্ষম শিশু বলে। এগুলি চিকিৎসার দ্বারা অনেকটা দূরীভূত করা যেতে পারে।

শারীরিক প্রতিবন্ধী কাদের বলা হয়?

দৈহিক দিক থেকে অক্ষম ব্যক্তিদের শারীরিক প্রতিবন্ধী বলা হয়।

দৈহিক প্রতিবন্ধী শিশুদের শ্রেণিবিভাগ করাে।

দৈহিক প্রতিবন্ধীদের সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায়-

  • জ্ঞানেন্দ্রিয় ত্রুটি জনিত প্রতিবন্ধী,

  • কর্মেন্দ্রিয় ত্রুটি জনিত প্রতিবন্ধী এবং

  • বাগ্যন্ত্রের ত্রুটিজনিত প্রতিবন্ধী।

শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুদের দুটি শ্রেণিবিভাগ করাে।

শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু প্রধানত তিনপ্রকার। এর মধ্যে দুটি হল জ্ঞানেন্দ্রিয় প্রতিবন্ধী এবং বাগ্যন্ত্রের ত্রুটিজনিত প্রতিবন্ধী।

দৈহিক প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষায় যে-কোনাে দুটি সমস্যা লেখাে।

দৈহিক প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষায় দুটি অন্যতম সমস্যা হল-

দৈহিক প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার যে-কোনাে দুটি প্রয়ােজনীয়তা উল্লেখ করাে।

দৈহিক প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তা তাদের-

  • আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তােলা এবং

  • পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতিবিধানে উপযােগী করে তােলা।

আধুনিক শিক্ষায় প্রতিদ্বন্দ্বী’ শব্দটি প্রতিবন্ধী’ অপেক্ষা বেশি গ্রহণযােগ্য কেন?

আধুনিক শিক্ষায় প্রতিদ্বন্দ্বী শব্দটি প্রতিবন্ধী’ অপেক্ষা বেশি গ্রহণযােগ্য, কারণ— আধুনিক শিক্ষায় প্রতিবন্ধীদেরও প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে অংশগ্রহণ করে শিক্ষালাভ করতে হয়।

ব্যতিক্রমী শিশু কাদের বলা হয়?

নিজস্ব ব্যক্তিগত শারীরিক, মানসিক বা সামাজিক বৈশিষ্ট্যের সমস্যাজনিত বিভিন্ন কারণবশত যেসকল শিশু সমাজে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা গ্রহণ করতে অক্ষম এবং সমাজের অন্যান্য ব্যক্তিদের থেকে পৃথক, তাদের বলা হয় ব্যতিক্রমী শিশু।

বর্তমানে ব্যতিক্রমী শিশুরা কী নামে পরিচিত?

বর্তমানে ব্যতিক্রমী শিশুরা ব্যাহত বা অক্ষম বা ভিন্ন ক্ষমতা সম্পন্ন শিশু নামে পরিচিত। অনেকে আবার ব্যতিক্রমী শিশুদের বিশেষধর্মী শিশু বলেও অভিহিত করেন।

মানসিক প্রতিবন্ধকতা কাকে বলে?

মানসিক প্রতিবন্ধকতা বলতে বােঝায় এমন এক ধরনের মনােগত প্রতিবন্ধকতাকে, যার দ্বারা শিশুর প্রাক্ষোভিক ও বৌদ্ধিক আচরণে কিছু কিছু অস্বাভাবিকতা দেখা যায় এবং যা শিশুর সার্বিক উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটায়।

[Book Download – ক্লিক করুন]

প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য সুসংবদ্ধ শিক্ষা পরিকল্পনা কবে গৃহীত হয়?

প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য সুসংবদ্ধ শিক্ষা পরিকল্পনা ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে গৃহীত হয়।

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ কোন্ বছরটিকে প্রতিবন্ধী বর্ষ হিসেবে ঘােষণা করেছিল?

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দকে প্রতিবন্ধী বর্ষ হিসেবে ঘােষণা করেছিল।

ভারতে কবে প্রথম মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য পেশাগত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে?

ভারতে ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথম মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য পেশাগত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে।

ভারতে প্রতিবন্ধীদের অধিকারের আইন কবে পাস হয়?

ভারতে ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম প্রতিবন্ধীদের জন্য অধিকারের আইন পাস হয়।

প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার জন্য প্রথম কবে জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়?

১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার জন্য প্রথম জাতীয়‌ উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়।

কবে ও কোথায় প্রথম প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মবিনিময় কেন্দ্র গড়ে ওঠে?

১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে, মুম্বাইতে প্রথম প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মবিনিময় কেন্দ্র গড়ে ওঠে।

ভিন্ন ধরনের সক্ষম বা ব্যতিক্রমী শিশুদের শিক্ষার অধিকার কোন্ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গৃহীত হয়?

ভিন্ন ধরনের সক্ষম বা ব্যতিক্রমী শিশুদের শিক্ষার অধিকার ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে UNESCO-এর আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গৃহীত হয়।

ডাকার ফ্রেমওয়ার্ক ফর অ্যাকশন’ অনুষ্ঠিত হয় কবে?

ডাকার ফ্রেমওয়ার্ক ফর অ্যাকশন অনুষ্ঠিত হয় ২০০০ খ্রিস্টাব্দে।

প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রশিক্ষণ দানের জন্য কোন কোন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়?

প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রশিক্ষণ দানের জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর দ্য হ্যান্ডিক্যাপড় (NIH) এবং বিভিন্ন শিক্ষাবিজ্ঞানের আঞ্চলিক কলেজের পরিচালনাধীন ট্রেনিং সেন্টার ও নির্বাচিত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বিশেষ শিক্ষা বিভাগে শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।

NIRTR-এর সম্পূর্ণ কথাটি কী?

NIRTR-এর সম্পূর্ণ কথাটি হল— National Institute for Rehabilitation Training and Research।

NPRPD-এর পুরাে কথাটি কী?

National Programme for Rehabilitation of Person with Disability!

কোন দিনটিকে প্রতিবন্ধী দিবস হিসেবে পালন করা হয়?

১৫ মার্চ দিনটিকে প্রতিবন্ধী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

অস্থি প্রতিবন্ধীদের জন্য ভারতের কোথায়, কবে জাতীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে?

অস্থি প্রতিবন্ধীদের জন্য ভারতের হায়দরাবাদে, ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে।

কীসের সাহায্যে অস্থি সংক্রান্ত প্রতিবন্ধীদের অসামর্থ্যের পরিমাপ করা যায়?

ম্যাকব্রাইড স্কেলের সাহায্যে অস্থি সংক্রান্ত প্রতিবন্ধীদের অসামর্থ্যের পরিমাপ করা যায়।

শিক্ষাবিজ্ঞানে কাদের অন্ধ বলা হয়?

যেসব শিশুদের দর্শনজনিত কারণে বই পড়া, বাের্ডে লেখা, ম্যাপ-এর লেখা ও চিত্র দেখা সম্ভব নয়, শিক্ষাবিজ্ঞানে তাদের অন্ধ বলা হয়।

অন্ধ বা দৃষ্টিহীন শিশুদের শিক্ষার দুটি উদ্দেশ্য লেখাে।

অন্ধ বা দৃষ্টিহীন শিশুদের শিক্ষার দুটি উদ্দেশ্য হল-

  • শারীরিক অক্ষমতার জন্য অন্ধ শিশুদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব তৈরি হয়, সেই আত্মবিশ্বাসকে ফিরিয়ে আনা।

  • অন্ধ শিশুদের সাধারণ মানসিক ক্ষমতার পাশাপাশি বিশেষ মানসিক ক্ষমতার (যেমন নৃত্য, গীত, হস্তশিল্প) বিকাশ সাধনের জন্য শিক্ষাদান বিশেষ আবশ্যিক।

কলকাতার Blind School-এর প্রতিষ্ঠাতা কে?

কলকাতার Blind School-এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন লালবিহারী শাহ।

কলকাতায় প্রথম কবে ও কোথায় অন্ধ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়?

কলকাতায় প্রথম ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে, বেহালায় অন্ধদের বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

ভারত সরকার অন্ধ শিশুদের জন্য প্রথম কমিটি গঠন করে কবে?

ভারত সরকার ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে প্রথম অন্ধ শিশুদের জন্য কমিটি গঠন করে।

National Centre for the Blind কোথায় অবস্থিত?

ভারত সরকার দেরাদুনে এটি প্রতিষ্ঠা করে।

জাতিপুঞ্জ কোন্ বছরটিকে অন্ধত্ব বর্ষরূপে পালন করেছিল?

জাতিপুঞ্জ ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দটিকে আন্তর্জাতিক অন্ধত্ব বর্ষরূপে পালন করেছিল।

আন্তর্জাতিক স্তরে অন্ধদের সংঘটির নাম কী?

আন্তর্জাতিক স্তরে অন্ধদের সংঘটি হল— International Association for the prevention of Blindness

অন্ধ শিশুদের একটি শিক্ষাপদ্ধতির নাম উল্লেখ করাে।

অন্ধ শিশুদের একটি উল্লেখযােগ্য শিক্ষাপদ্ধতি হল শব্দনির্ভর পদ্ধতি।

অন্ধদের চাকুরির সুবিধার জন্য ভারত সরকার কী প্রতিষ্ঠা করে?

ভারত সরকার চাকুরির ক্ষেত্রে অন্ধদের সুযােগসুবিধার জন্য প্রতিষ্ঠা করে Employment Bureau।

অন্ধ শিশুদের শিক্ষার উপকরণ হিসেবে কেন অ্যাবাকাস ব্যবহার করা হয়?

অন্ধ শিশুদের দ্রুত ও নির্ভুলভাবে গাণিতিক সমস্যার সমাধান শেখানাের জন্য অ্যাবাকাস ব্যবহার করা হয়।

দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধীদের বুদ্ধি পরিমাপ করেন কোন মনােবিদ?

দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধীদের বুদ্ধি পরিমাপ করেন মনােবিদ এস পি হেইস (S P Hayes)।

প্লাস কারিকুলাম কী?

প্লাস কারিকুলাম হল অন্ধদের শিক্ষাদানের এমন এক পাঠক্রম, যা প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের প্রশিক্ষণদানের মাধ্যমে আগামী দিনের বা ভবিষ্যতের শিক্ষাগ্রহণের কাজে শিশুকে যােগ্য করে তােলে। দৈনন্দিন জীবনযাপনে দক্ষতা অর্জন, জ্ঞানেন্দ্রিয়ের প্রশিক্ষণ, পরিবেশ পরিচিতি প্রভৃতি বিষয়ে প্রশিক্ষণদান করে এই পাঠক্রম।

আইনত দৃষ্টিহীন কাদের বলা হয়?

যেসকল দৃষ্টিহীনদের উভয় চোখে ভিশুয়াল অ্যাকুইটি ২০/২০০-এর বেশি নয় বা দৃষ্টিক্ষেত্র ২০ ডিগ্রি-র কম তাদেরকে আইনত দৃষ্টিহীন বলা হয়।

দৃষ্টিহীনদের শিক্ষার জন্য ভারত সরকারের যে-কোনাে একটি পদক্ষেপ উল্লেখ করাে।

ভারত সরকার দেরাদুনে স্থাপন করেছে National Centre for the Blind| এখানে আছে ব্রেইল প্রেস এবং ব্রেইলের জন্য প্রয়ােজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরির কারখানা ও সংরক্ষিত কর্মশালা।

মেন্টাল ম্যাপ (Mental Map) বা মানসিক মানচিত্র কী?

মেন্টাল ম্যাপ হল দৃষ্টিহীন শিশুদের শিক্ষার একটি উপকরণ বা পদ্ধতি। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের একটি মানসিক চিত্র তৈরি করে দিতে হবে। কোথায় শিক্ষকের টেবিল-চেয়ার আছে, প্রবেশের পথ কোন দিকে, বেগুলাে কীভাবে সাজানাে আছে তার একটি ছবি যেন শিক্ষার্থীদের মাথায় সবসময় থাকে। একেই বলা হয় মেন্টাল ম্যাপ।

টকিং বুক (Talking Book) কী?

টকিং বুক (Talking Book) হল এক ধরনের রেকর্ডিং বই, যা শুনে দৃষ্টিহীন শিশুরা শিক্ষালাভ করে। অর্থাৎ এটি হল দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্যবহৃত একটি শিক্ষা উপকরণ।

দৃষ্টিহীন শিশুদের গড় বুদ্ধ্যঙ্ক কত?

দৃষ্টিহীন শিশুদের গড় বুদ্ধ্যঙ্ক (IQ) হল ৯৮.৫।

স্ক্রিন রিডার যন্ত্র কী ধরনের ব্যতিক্রমী শিশুদের শিক্ষার কাজে ব্যবহৃত হয়?

স্ক্রিন রিডার যন্ত্র অন্ধ শিশুদের শিক্ষার উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

অন্ধদের জন্য ৯টি বিন্দুর সংকেত কে উদ্ভাবন করেন?

১৬১৭ খ্রিস্টাব্দে ফাদার লানার অন্ধদের জন্য ৯টি বিন্দুর সংকেত উদ্ভাবন করেছিলেন।

১২টি বিন্দুর ধ্বনিনির্ভর পদ্ধতির উদ্ভাবক কে?

১২টি বিন্দুর ধ্বনিনির্ভর পদ্ধতির উদ্ভাবক লুই ব্রেইল-এর শিক্ষক চার্লস বার্বিয়ের।

রাতের লিখন (Ecriture nocturare) কী?

নেপােলিয়নের গােলন্দাজ বাহিনীর ক্যাপটেন চার্লস বার্বিয়ের সৈন্যদের মধ্যে গুপ্ত খবর আদানপ্রদানের জন্য একটি সংকেত ব্যবহার করতেন। এই সংকেতকেই Ecriture nocturare (Night Writing) অর্থাৎ রাতের লিখন বলা হত।

পূর্ণ অন্ধদের শিক্ষার পদ্ধতিটির নাম লেখাে।

পূর্ণ অন্ধদের শিক্ষার পদ্ধতিটির নাম ব্রেইল পদ্ধতি।

ব্রেইল পদ্ধতির প্রথম প্রবর্তন কে এবং কবে করেন?

ব্রেইল পদ্ধতি প্রথম প্রবর্তন করেন লুই ব্রেইল, ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে।

ব্রেইল পদ্ধতি কী?

ব্রেইল হল একটি স্পর্শভিত্তিক পঠনপদ্ধতি। এটি একটি আয়তাকার প্লেটের মধ্যে দুই সারিবিশিষ্ট এক বিশেষ উপকরণ, যার প্রতিটি সারিতে থাকে ব্রেইল কোশ। প্রতিটি কোশ ৬টি dot নিয়ে গঠিত। লিতে স্টাইলাস দিয়ে চাপ দিলে আয়তাকার প্লেটের তলায় রাখা কাগজে গর্ত হয়ে উঁচু উঁচু বিন্দু পাওয়া যায়। এই উঁচু বিন্দুগুলি স্পর্শ করে ব্রেইল বই পড়া হয়।

ব্রেইল বর্ণমালায় ক-টি ডট বা চিহ্ন রয়েছে?

ব্রেইল বর্ণমালায় ৬৩টি ডট বা চিহ্ন রয়েছে।

ব্রেইল কোশের প্রতিটি কোশে কতগুলি ডট (•) থাকে?

ব্রেইল কোশের প্রতিটি কোশে ৬টি করে ডট থাকে।

স্টাইলাস কী?

ব্রেইল ব্যবস্থায় উঁচু উঁচু ডট বা বিন্দুগুলি পুরু কার্ডবাের্ড বা শক্ত কাগজের উপর তৈরি হয়, যে কলমের চাপ দেওয়ার ফলে এই বিন্দুগুলি তৈরি হয় তাকে স্টাইলাস বলা হয়।

ব্রেইল কোন্ ভাষায় লেখা হয়?

ব্রেইল প্রথমে ফরাসি ভাষায় লেখা হলেও বর্তমানে চিনা, স্প্যানিশ, কোরিয়াে, ইংরেজি ও বাংলা ভাষাতেও লেখা‌ হয়।

একজন দক্ষ ব্রেইল টাইপিস্ট প্রতি মিনিটে কতগুলি শব্দ টাইপ করতে পারেন?

একজন দক্ষ ব্রেইল টাইপিস্ট প্রতি মিনিটে ৬০টি শব্দ টাইপ করতে পারেন।

ব্রেইল পাঠের নিয়ম কী?

ব্রেইল পাঠের নিয়ম হল ব্রেইলের বিন্দুগুলি বাম দিক থেকে ডান দিকে স্পর্শ করে পড়তে হবে।

ভারত সরকার অন্ধ শিশুদের জন্য যে ব্রেইল রচনা করেন তার নাম কী?

ভারত সরকার অন্ধ শিশুদের জন্য রচনা করেন ভারতী ব্রেইল।

কবে অন্ধদের শিক্ষার জন্য স্ট্যান্ডার্ড ইংলিশ ব্রেইল পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছিল?

১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে অন্ধদের শিক্ষার জন্য স্ট্যান্ডার্ড ইংলিশ ব্রেইল পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছিল।

বেস্ট ব্রেইল প্রেস নামক জাতীয় পুরস্কার কবে, কে প্রদানের ব্যবস্থা করে?

ভারত সরকার ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে বেস্ট ব্রেইল প্রেস নামক জাতীয় পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা করে।

পশ্চিমবঙ্গের কোথায় ব্রেইল প্রেস গড়ে উঠেছে?

পশ্চিবঙ্গের নরেন্দ্রপুরে গড়ে উঠেছে ব্রেইল প্রেস।

দেরাদুনের কেন্দ্রীয় ব্রেইল ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত পত্রিকাটির নাম কী?

দেরাদুনের কেন্দ্রীয় ব্রেইল ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত পত্রিকাটির নাম আলােক।

ভারতে কবে ও কোথায় প্রথম বয়স্ক অন্ধদের জন্য শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়?

১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে উত্তর ভারতের দেরাদুনে প্রথম বয়স্ক অন্ধদের জন্য শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়।

ব্রেইল মেথড কবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়?

ব্রেইল মেথড ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে।

বিশ্ব ব্রেইল পর্ষদ কবে ও কার উদ্যোগে গঠিত হয়?

১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কোর উদ্যোগে ৩০টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে বিশ্ব ব্রেইল পর্ষদ গঠিত হয়।

বধির বা কালা (Deaf) কাদের বলা হয়?

শ্রবণযন্ত্রের ত্রুটি নিয়ে জন্মানাে শিশুদের শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের কোনাে কার্যকারিতা থাকে না, তাদেরকে বলা হয় বধির বা কালা। মূলত ৫০০, ১০০০ বা ২০০০ কম্পাঙ্কে ৭০ ডেসিবেল বা তার বেশি শব্দ শুনতে না পেলে অবশিষ্ট শ্রবণশক্তি কাজ করছে না বলে মনে করা হয় এবং এইসব ব্যক্তিকেই বধির বলে চিহ্নিত করা হয়।

শ্রেণিকক্ষে বধিরদের দুটি সমস্যামূলক আচরণ উল্লেখ করাে।

শ্রেণিকক্ষে বধিরদের দুটি সমস্যামূলক আচরণ হল- 

  • বার বার জিজ্ঞেস করা, 

  • সহপাঠীর খাতায় উকি দেওয়া।

শ্রবণ প্রতিবন্ধকতা বা বধিরতার দুটি কারণ লেখাে।

শ্রবণ প্রতিবন্ধকতা বা বধিরতার দুটি কারণ হল—

  • শব্দদূষণ,

  • অপুষ্টি ও রক্তে Rh উপাদানের অসামঞ্জস্যতা।

রিসাের্স কক্ষ কী?

রিসাের্স কক্ষ হল বধির শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বিদ্যালয়ে নির্মিত একটি প্রতিবন্ধী কক্ষ, যেখানে বধির শিক্ষার্থীদের শিখনের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ থাকে এবং তারা শিক্ষকের সহায়তায় শিক্ষালাভ করে।

মূক ও বধির কাদের বলা হয়?

মনােবিদ অ্যালিস স্ট্রেঞ্জ (Alice Streng)-এর মতে, জন্ম থেকে যে শিশু কম শুনতে পায় বা শুনতে পায় না অথবা যে শিশু শৈশবেই ভাষা ও বাচনিক ভঙ্গি অর্জন করার পূর্বেই শ্রবণশক্তি হারিয়েছে, তাকে বলে মূক ও বধির (Deaf and dumb)।

ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন মূক ও বধির শিক্ষাকেন্দ্র কবে ও কোথায় স্থাপিত হয়?

১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে, মুম্বাইয়ে খ্রিস্টান মিশনারিদের সহায়তায় ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন মূক ও বধির শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপিত হয়।

মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষার একটি উদ্দেশ্য লেখাে।

মূক ও বধির শিশুদের সামাজিক বিকাশের উন্নতিসাধন করা হল এদের শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য।

মূক ও বধিরদের শিক্ষার কয়েকটি পদ্ধতির নাম লেখাে।

মূক ও বধিরদের শিক্ষার কয়েকটি পদ্ধতি হল—

  • মৌখিক পদ্ধতি,

  • সঞ্চালনমূলক পদ্ধতি, 

  • কম্পন ও স্পর্শ পদ্ধতি এবং

  • দর্শনভিত্তিক পদ্ধতি প্রভৃতি।

কে মূক ও বধিরদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে মৌখিক পদ্ধতির প্রবর্তন করেন?

মূক ও বধিরদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে মৌখিক পদ্ধতির প্রবর্তন করেন জুয়ান পাবলাে বনে (Juan Pablo Bonet)।

কোন্ ধরনের প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদানের জন্য ওষ্ঠ পঠন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়?

মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদানের জন্য ওষ্ঠ পঠন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

ওষ্ঠ পঠন কী? অথবা, ঠোট নাড়া’ পদ্ধতি কী?

ঠোট নাড়াচাড়া দেখে বক্তার মনের ভাব বুঝে নেওয়াকে ওষ্ঠ পঠন বলা হয়।

বধিরদের জন্য কে প্রথম হস্তের মাধ্যমে বর্ণপ্রকাশের রীতির সূত্রপাত করেন?

রডরিগস পেরারে (Rodrigues Pereire) প্রথম বধিরদের জন্য হাতের মাধ্যমে বর্ণপ্রকাশের রীতির সূত্রপাত করেন।

আঙুলের মাধ্যমে সঞ্চালনমূলক শিখন পদ্ধতির প্রবর্তক কে?

আঙুলের সাহায্যে সঞ্চালনমূলক শিখন পদ্ধতির প্রবর্তক হলেন রডরিগস পেরারে।

কম্পন ও স্পর্শ পদ্ধতি কী?

যে শিখন পদ্ধতির দ্বারা মূক ও বধির শিক্ষার্থীরা শিক্ষক শিক্ষিকার শব্দোচ্চারণের সময় তাদের কণ্ঠনালির উপর ও মুখের উপর হাত দিয়ে শব্দের কম্পন উপলব্ধি করে শব্দ শেখে, সেই শিখন পদ্ধতিকে কম্পন ও স্পর্শ পদ্ধতি বলে।

কম্পন ও স্পর্শ পদ্ধতির মাধ্যমে শিখন পদ্ধতির প্রবর্তক কে?

কম্পন ও স্পর্শ পদ্ধতির মাধ্যমে শিখন পদ্ধতির প্রবর্তক হলেন কেটি অ্যালক ও সােফিয়া অ্যালকন।

করপল্লবি কী?

করপল্লবি হল বধিরদের শিখনের বর্ণপদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে দুই হাতের দশটি আঙুল, হাতের তালু, জিহ্বা, ঠোট প্রভৃতি সবকটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবহার করা হয় এবং এগুলির সাহায্যে সাংকেতিক চিহ্নগুলি বােঝানাে হয়। এক্ষেত্রে এক-একটি বর্ণ অনুযায়ী হাতের তালুর মধ্যে আঙুলের স্থান স্থির করা হয়, অপর পদ্ধতির ক্ষেত্রে সঞ্চালনমূলক পদ্ধতির মাধ্যমে করা হয়। ভারতে এই ধরনের বর্ণের নাম হল করনপল্লবি (Karan Pallavi) বা করপল্লবি।

ভারতে হাতের অঙ্গুলি সঞ্চালনমূলক পদ্ধতির নাম কী?

ভারতে হাতের অঙ্গুলি সঞ্চালনমূলক পদ্ধতির নাম হলো করপল্লবি।

প্রতিবন্ধী শিশুদের লিখন ক্ষমতার উন্নতির জন্য গৃহীত একটি মডেলের নাম করাে।

প্রতিবন্ধী শিশুদের লিখন ক্ষমতার উন্নতির জন্য গৃহীত একটি মডেল হল— De Beaugrande’s Writing Training Programme (১৯৮২ খ্রি.)।

PEP-এর সম্পূর্ণ কথাটি লেখাে।

PEP-এর সম্পূর্ণ কথাটি হল Psycho Educational Profile।

কয়েকটি সমস্যামূলক আচরণের নাম লেখাে।

কয়েকটি সমস্যামূলক আচরণ হল—

  • বিদ্যালয় থেকে পালিয়ে যাওয়া,

  • মিথ্যে কথা বলা এবং

  • অন্যকে উৎপীড়ন করা ইত্যাদি।

জাতীয় প্রতিবন্ধী অর্থযােজনা ও উন্নয়ন নিগম কবে গঠিত হয়?

১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জানুয়ারি ভারতে জাতীয় প্রতিবন্ধী অর্থযােজনা ও উন্নয়ন নিগম গঠিত হয়।

শ্রেণিকক্ষে দুটি আচরণগত সমস্যার উল্লেখ করাে।

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর দুটি আচরণগত সমস্যা হল-

  • কর্তৃত্বের মানসিকতা দেখানাে,

  • সর্বদা অন্যদের সঙ্গে ঝগড়া করা।

ইনক্লুসিভ এডুকেশন বা অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা কী?

ইনকুসিভ এডুকেশন (Inclusive Education) বা অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা হল এমন একটি শিক্ষাপদ্ধতি, যেটি বিশেষ কোনাে একজন শিশুর জন্য নয়, আবার একজন শিশুকে বাদ দিয়েও নয়; অর্থাৎ জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, অক্ষমতা, প্রতিবন্ধকতা নির্বিশেষে সকলের জন্য Regular Mainstream School-এর শিক্ষাব্যবস্থা।

ICIDH-এর পুরাে কথাটি কী?

ICIDH-এর সম্পূর্ণ কথাটি 201-International Classification of Impairments Disabilities and Handicaps।