ভাষাবিজ্ঞানের আলােচনার বহুলপ্রচলিত শাখা হল তিনটি- তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান, ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান এবং বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান। এর মধ্যে ঐতিহাসিক এবং বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সংক্ষিপ্ত আলােচনাই আমরা করব।
ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান : ভাষাবিজ্ঞানের যে শাখায় কোনাে ভাষার প্রাচীনতম রূপ থেকে আধুনিক রূপ পর্যন্ত ধারাবাহিক বিবর্তনের রূপরেখা আলােচিত হয়, তাকে বলে ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান (Historical Linguistics)। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভাষার যে বিবর্তন হয়, সেই বিবর্তনের ফলে ভাষার সংগঠনে যে পরিবর্তন দেখা যায়, তা নির্দেশ করাই ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানের কাজ। অর্থাৎ কোনাে ভাষার ধারাবাহিক রূপান্তরের বিস্তৃত আলােচনা করাই এই ভাষাবিজ্ঞানের কাজ। ভাষার ধ্বনিপরিবর্তনের কারণ ও বৈশিষ্ট্য আলােচনা তাই এই ভাষাবিজ্ঞানের আলােচ্য।
বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান : একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনাে ভাষার বৈশিষ্ট্যাবলির যে চর্চা করা হয়, তাকেই বলে বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান (Descriptive Linguistics)। যে ভাষার কোনাে অতীত নিদর্শন নেই, অথবা, যে ভাষা এখনও অবধি মৌখিক ভাষা— সেই ভাষার আলােচনার জন্য বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম। বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান অনুযায়ী ভাষাবিজ্ঞানের আলােচ্য বিষয় চারটি ধ্বনিবিজ্ঞান ও ধ্বনিতত্ত্ব, রূপতত্ত্ব, বাক্যতত্ত্ব এবং শব্দার্থতত্ত্ব। বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান তাই ভাষার সাংগঠনিক আলােচনাকেই প্রাধান্য দেয়।
Leave a comment