ভারতের মতাে বিশাল দেশে জাতীয় বিকাশের পথে বেশ কিছু বাধা রয়েছে। যেমন一

[1] বিভিন্ন ধর্মের সমাবেশ : ভারত বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের দেশ প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজ ধর্মের প্রতি একনিষ্ঠ। এর ফলে তাদের মধ্যে বিরােধ বা বিভেদ দেখা যায়, যা জাতীয় জীবনে অনৈক্য সৃষ্টি করে।

[2] ভাষার ভিন্নতা : ভাষার ভিন্নতাও জাতীয় বিকাশের অন্তরায়। হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণ করা হলেও ভাষাসমস্যার পুরােপুরি সমাধান করা যায়নি।

[3] জাতিভেদপ্রথা অনুসরণ : প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের দেশে কঠোরভাবে জাতিভেদপ্রথা মেনে চলা হত। শূদ্র প্রভৃতি নিম্নবর্ণের সমাজের মানুষদের শিক্ষার অধিকার ছিল না। এর ফলে সমাজব্যবস্থায় বিরাট এক ব্যবধান সৃষ্টি হয়েছিল, যা আজও আমাদের দেশের জাতীয় বিকাশের ক্ষেত্রে এক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে।

[4] অর্থনৈতিক বৈষম্য : দেশের মােট জাতীয় উৎপাদন বর্তমানে যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পেলেও জনগণের মধ্যে ব্যাপক অর্থনৈতিক বৈষম্য জাতীয় বিকাশের পথে বাধার সৃষ্টি করছে।

[5] বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ : ভারত হল বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশগুলির অন্যতম। এখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের মধ্যে অসহিষুতা অনেক সময় জাতীয় বিকাশের পথে বাধার সৃষ্টি করে।

[6] অশিক্ষা : ভারতের মােট জনসংখ্যার একটা বড়াে অংশ এখনও নিরক্ষর। শিক্ষার আলাে থেকে এরাবঞ্চিত। যতদিন না এইসব মানুষের কাছে জ্ঞানের আলাে পৌঁছােবে ততদিন জাতির সুষম বিকাশ ও উন্নতি সম্ভব নয়।

[7] মূল্যবোধের অভাব : ভারতে বিভিন্ন কারণে জনগণের মধ্যে মূল্যবােধের অভাব দেখা দিয়েছে।

[8] সমাজসচেতনতার অভাব : সমাজ সম্পর্কে সচেতনতার অভাবে মানুষ স্বার্থপর হয়ে উঠছে। আর এর ফলেই ভারতে জাতীয় বিকাশ প্রত্যাশানুযায়ী হচ্ছে না।

[9] বিজ্ঞানমনস্কতার অভাব : বিজ্ঞানমনস্কতার অভাবের ফলে আমাদের দেশের বহু মানুষ আজও অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কারে আচ্ছন্ন, যার ফলে প্রতি মুহূর্তেই জাতীয় বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।

বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় আশু প্রয়ােজন হল, জাতীয় বিকাশের ক্ষেত্রে উপরিউক্ত বাধাগুলি দূর করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।