‘ভারতী’ পত্রিকা
বাংলা গদ্যের বিকাশে- সাহিত্যের নতুন আঙ্গিক-প্রবর্তনে, সামাজিক ভাব আন্দোলনের সৃষ্টিতে রাজনৈতিক চেতনা-সঞ্চারে এবং সাহিত্য-সংস্কৃতিগত রুচি-নির্মাণে সাময়িকপত্রের দান অপরিসীম। এরই ধারাবাহিকতায় ‘ভারতী’ পত্রিকার অবদান স্বীকার্য।
ভারতী পত্রিকার সবচেয়ে বড়ো পরিচয়- এই পত্রিকার মাধ্যমে মূলত বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রযুগের সূত্রপাত ঘটে। পত্রিকাটি প্রথম প্রকাশ পায় ১৮৭৭ সালে পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক ছিলেন দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর। জীবেন্দ্র সিংহ রায় ‘ভারতী’ পত্রিকা সম্পর্কে বলেন- “ভারতী নিঃসন্দেহে উঁচু জাতের পত্রিকা, দীর্ঘদিন তা বাঙালি পাঠকের সেবা করেছে, বহু নবীন লেখক সৃষ্টি করেছে- অপরিমিত সাহিত্যসম্ভার পরিবেশন করে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে, ফলে বাংলা সাময়িকপত্রের ইতিহাসে ভারতী পত্রিকা বিশিষ্ট স্থান করে আছে। দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরে যাঁরা এ পত্রিকার দায়িত্ব পালন করেন- তাঁরা হচ্ছেন- স্বর্ণকুমারী দেব, হিরন্মীয় দেবী, সরলা দেবী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়, মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়। বস্তুত পত্রিকাটি দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও তাঁর ভাই-বোন-আত্মীয়-কেন্দ্রিক পরিমণ্ডলে লালিত ও পরিচালিত হয়েছে। তবে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়- এই পত্রিকার পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমেই ঘটেছে বাংলা সাহিত্যের বিস্ময়কর প্রতিভা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আবির্ভাব। শেষ পর্যন্ত সাহিত্যচর্চার বিস্ময়কর উত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে ‘ভারতী গোষ্ঠী’ নামে সাহিত্যিক পরিমণ্ডল। এই সাহিত্যগোষ্ঠীর সাথে সম্পর্কযুক্ত ছিলেন- সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমেন্দ্রকুমার রায়, প্রেমাঙ্কুর আতর্থী, সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ সাহিত্যিক। এঁদের অধিকাংশই বাংলা সাহিত্যে একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।
Leave a comment