‘ভারতবর্ষ’ গল্পের মােল্লাসাহেব এবং ভটচাজমশাইয়ের চরিত্রের তুলনামূলক আলােচনা করাে।

মােল্লাসাহেব এবং ভটচাজমশাইয়ের চরিত্রের তুলনামূলক আলােচনা: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ভারতবর্ষ গল্পের মােল্লাসাহেব এবং ভটচাজমশাই—এই দুজন দুই সম্প্রদায়ের গ্রামবাসীদের নেতা হিসেবে উঠে এসেছেন। বুড়ির মৃতদেহের অধিকার নিয়ে হিন্দু- মুসলমানের যে সংঘাত হয়, তাতে মােল্লাসাহেব মুসলিম পক্ষের মুখপাত্র হন। বলেন সকালে বাস ধরতে যাওয়ার সময় তিনি মুমূর্ষু বুড়িকে স্পষ্ট কলমা পড়তে শুনেছেন। ঠিক সেই সময়েই ভটচাজমশাই সদ্য বাস থেকে নেমে সেই ভিড়ের মধ্যে ঢােকেন এবং মােল্লাসাহেবের কথার প্রতিবাদ করে জানান যে, সকালে মােল্লাসাহেবের সঙ্গে একই বাসে ওঠার আগে তিনি মুমূর্য বুড়িকে ‘শ্রীহরি’ জপ করতে স্পষ্ট শুনেছেন। সুতরাং এভাবেই দুই সম্প্রদায়ের দুই নেতা সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি করেন। শুধু তাই নয়, মােল্লাসাহেব এরপর নিজ-সম্প্রদায়ের মানুষকে প্ররােচিত করতে ‘জেহাদ’ অর্থাৎ ধর্মযুদ্ধের ঘােষণা করেন। উলটোদিকে ভটচাজমশাইও একইভাবে হিন্দু জনতাকে প্ররােচিত করতে যবন হত্যার উদ্দেশ্যে মা কালীর আবির্ভাব আহ্বান করতে থাকেন।

সুতরাং মােল্লাসাহেব এবং ভটচাজমশাইদুজনেই উগ্র এবং ধর্মান্ধ হয়ে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের সহজসরল মানুষকে ভয়ংকর সংঘর্ষে প্ররােচিত করেছেন, মানবতার বিপক্ষে যাদের অবস্থান।