চৌকিদারের চরিত্র: কথামুখ : সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ভারতবর্ষ গল্পের চৌকিদার চরিত্রের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
বাস্তব বুদ্ধিসম্পন্নতা : বাজার-পার্শ্ববর্তী বটগাছতলায় বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। ভেবে গ্রামের লােকেরা চৌকিদারকে খবর দেয়। চৌকিদার অকুস্থলে এসে গ্রামবাসীকে খবরটা থানায় দিতে বারণ করে। পৌষের অকাল-দুর্যোগে এক ভিখারিনি বুড়ির মৃত্যু থানায় খবর দেওয়ার মতাে তত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। তা ছাড়া, থানা যেহেতু সেখান থেকে পাঁচ ক্রোশ দূরে, তাই খবর পেয়ে থানার লােকেদের আসতে আসতে মাঝরাত্রি হয়ে যাবে। ততক্ষণে লাশের দুর্গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে। তাই সে বুড়িকে নদীর চড়ায় ফেলে আসার বাস্তবােচিত পরামর্শ দেয়। তবে বাস্তববুদ্ধির অধিকারী চৌকিদারের পর্যবেক্ষণে একটু ভুল হয়েছিল। কেননা সে জীবন্ত বুড়িকে দেখে বলেছিল যে, লাশ ফুলে উঠেছে।
কর্তব্যসচেতনতা : বুড়ির মৃতদেহের অধিকার নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি হলে, বিপন্ন চৌকিদার শুধুমাত্র একটি লাঠিকে সম্বল করে দু-পক্ষকে নিরস্ত করতে শেষ পর্যন্ত লড়ে যায়। সশস্ত্র কোনাে পক্ষ যখনই এক কদম এগােনাের চেষ্টা করছিল, তখনই নীল-ইউনিফর্ম-পরা চৌকিদার তার লাঠিটা পিচে ঠুকে ‘সাবধান’ বা ‘খবরদার’ বলে গর্জন করে উঠছিল। বৃড়ি উঠে না দাঁড়ালে সে হয়তাে একা দাঙ্গা ঠেকাতে সমর্থ হত না, কিন্তু কর্তব্যসচেতন চৌকিদারের মরিয়া চেষ্টাকে সাধুবাদ জানাতেই হয়।
Leave a comment