গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র উৎসব নাইয়া। সবাই তাকে উচ্ছব বলে ডাকে। গ্রামের সতীশ মিস্ত্রির জমিতে উচ্ছব চাষের কাজ করে। তাতেই কয়েকমাস তার খাওয়ার ব্যবস্থা হয়। কিন্তু তা সারাবছরের জন্য নয়। এরকমই একবার অনেকদিন পরে উচ্ছব সপরিবারে পেট ভরে ভাত খাওয়ার সুযোেগ পেয়েছিল। কিন্তু সেদিনই বন্যায় মাতলা নদীর বিধ্বংসী জলের তােড়ে সে। তার স্ত্রী, পুত্রকন্যা সব হারায়। নষ্ট হয় মাথা গোঁজার আশ্রয়টুকুও। দু-মুঠো ভাতের আশায় গ্রামতুততা বােন বাসিনীর মনিব বাড়িতে ফাইফরমাশ খাটার জন্যে কলকাতায় আসে উচ্ছব। সেখানে নাকি ভাতের ছড়াছড়ি। সেখানে বাদা থেকে বিভিন্ন প্রকারের চাল আসে। সেই বাড়িতে চালের প্রাচুর্য দেখে উচ্ছব অবাক হয়। এদিকে সে বাড়িতে লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত বডােকর্তার অন্তিম দশা। তা থেকে মুক্তিলাভের জন্য সবাই তান্ত্রিকের শরণাপন্ন হয়। উচ্ছবের উপরে দায়িত্ব পড়ে হােমযজ্ঞের কাঠ কাটার। অভুক্ত অবস্থায় সারাদিন কাঠ কাটে সে। অথচ ভাত জোটে না। তান্ত্রিক বিধান দেয়। যজ্ঞ শেষ হওয়ার আগে খাওয়া যাবে না। দিনের শেষে উচ্ছব ক্লান্ত শরীরে মন্দিরের চাতালে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। তার ঘুম ভাঙে কারও ধাক্কায়, শােনে কত্তাবাবু গত হয়েছেন বাড়ির সব খাবার ওরা ফেলে দিচ্ছে। উচ্ছর ভাতের হাঁড়িটি নিজের জিম্মায় নেয়, ছুটে যায় স্টেশনে, সেখানে বসে পাগলের মতন দু-হাতে ভাত খেতে থাকে, মনে মনে তার হারানাে স্ত্রী, পুত্রকন্যাদেরও ভাত খাইয়ে দেয়। তারপর হাঁড়ির কানায় মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে উচ্ছব। পরদিন সকালে হাঁড়ি চুরির অপরাধে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। যে বাদা থেকে বড়ােবাড়িতে অত চাল আসত সেটি দেখার ইচ্ছা ছিল উচ্ছবের। কিন্তু তার সন্ধান পাওয়া উচ্ছবের আর হয়ে ওঠে না.