ব্রাজিল :-

ব্রাজিল দেশটি অনেক মানুষের কাছে ফুটবল পরিচিত একটি দেশ। মোট পাঁচ বার ব্রাজিল বিশ্বকাপ জিতেছে। ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০, ১৯৯৪ ও ২০০২ সালে। তো চলুন জেনে নেই সবার প্রিয় ফুটবলের দেশ ব্রাজিল সম্পর্কে।

দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের পূর্বাংশে ব্রাজিলের অবস্থান। দেশটির পূর্ব দিকে বিস্তত আটলান্টিক মহাসাগর অবস্থিত। অবশিষ্টাংশে অর্থাৎ উত্তর, দক্ষিণ এবং পশ্চিমে ১০টি দেশের সাথে স্থল সীমান্ত রয়েছে। এসব দেশসমূহ হলো 

  • আর্জেন্টিনা
  • বলিভিয়া
  • কলম্বিয়া
  • ফরাসি গায়ানা
  • গায়ানা
  • প্যারাগুয়ে
  • পেরু
  • সুরিনাম
  • উরুগুয়ে,
  • ভেনিজুয়েলা

ব্রাজিলের মোট স্থল সীমানা ১৬,১৪৫ কিলোমিটার এবং উপকূল রেখার দৈর্ঘ্য ৭,৪৯১ কিলোমিটার। পূর্ব-পশ্চিমে সর্বোচ্চ দূরত্ব প্রায় ৪,৩২৬ কিলোমিটার এবং উত্তর-দক্ষিণে ৪,৩২০ কিলোমিটার।

দেশটির আয়তন ৮৫,১৫,৭৭০ বর্গকিলোমিটার। এটি আয়তনে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের বৃহত্তম এবং বিশ্বে পঞ্চম। দেশটির দীর্ঘতম নদী আমাজান (৬.৯৯২ কিলোমিটার)। দেশটি দীর্ঘ সময় ধরে পর্তুগীজদের উপনিবেশ থাকার পর ১৮২২ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। 

বর্তমানে ২৬টি রাজ্য এবং একটি ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট নিয়ে দেশটি গঠিত। ব্রাজিল এর রাজধানী ব্রাসিলিয়া, দেশটির পতাকায় ২৭টি তারা রয়েছে। তারাগুলো ২৬টি রাজ্য এবং একটি ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট এর প্রতিনিধিত্ব করছে। এটি একটি গতিশীল অর্থনীতির দেশ। এক্ষেত্রে সরকারের বহুমুখী পদক্ষেপ অতি দ্রুত নগরায়ন, শিল্পপণ্যের উৎপাদন, রপ্তানিমুখী কৃষিপণ্যের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

জনসংখ্যায় ব্রাজিল বিশ্বে ষষ্ঠ। এর বর্তমান জনসংখ্যা ২০৬.১ মিলিয়ন এবং বৃদ্ধির হার ০.৮% (পিআরবি, ২০১৬)। প্রায় ৩০০ বছর পর্তুগীজদের শাসনাধীন থাকায় এখানকার সংস্কৃতির ধরণ অনেকটা পৰ্তুগীজ ধাঁচের। দেশটির শিক্ষার হার ২০১৫ সালে ছিল (১৫+ বছর) ৯৩% (ইউনেস্কো)।

ব্রাজিলের মোট ভূমির ৩২.৯ শতাংশ কৃষিকাজে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে আবাদী। ৮.৬ শতাংশ, স্থায়ী ফসল ০.৮ শতাংশ এবং স্থায়ী চারণ ভূমি ২৩.৫ শতাংশ (সিআইএ, ২০১৭)। উৎপাদিত কৃষিপণ্যের মধ্যে রয়েছে কফি, সয়াবিন, গম, ধান, ভুট্টা, আখ, কোকো, সাইট্রাস ইত্যাদি। সাওপাওলোর প্যারাইবা উপত্যকা, রিও জাকুহী উপত্যকা, রিওগ্রান্ডে দোসুল অঞ্চলে অধিক পরিমাণে ধান উৎপাদিত হয়।

ভুট্টা উৎপাদনে ব্রাজিল বিশ্বে তৃতীয়। মিনাস জেরাইস, সাওপাওলো, রিওগ্রান্ডে দোসুল প্রভৃতি এলাকায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভুট্টা উৎপাদিত হয়। এছাড়া কফি উৎপাদনে ব্রাজিল বিশ্বে প্রথম। দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বিশাল কফি বাগান রয়েছে। সাওপাওলো কফি উৎপাদনের কেন্দ্রভূমি। এখানে বিস্তীর্ণ চারণভূমি থাকায় পশুপালনেও সমৃদ্ধি লাভ করেছে।

ব্রাজিলের ভূ-প্রকৃতিকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা- 

  • ব্রাজিলীয় উচ্চভূমি অঞ্চল
  • আটলান্টিক মহাসাগরীয় উপকূলীয় নিম্নভূমি অঞ্চল এবং 
  • আমাজান নিম্নভূমি অঞ্চল।
দেশটির বেশিরভাগ এলাকা (৯০%) ক্রান্তীয় জলবায়ুর অন্তর্ভুক্ত। তবে দক্ষিণাংশে নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু বিদ্যমান।

ব্রাজিল খনিজ সম্পদ এবং শিল্পে সমৃদ্ধ। এখানকার উল্লেখযোগ্য খনিজ সম্পদ হলো- পেট্রোলিয়াম, স্বর্ণ, রৌপ্য, বক্সাইট, প্লাটিনাম, টিন, ইউরেনিয়াম প্রভৃতি।

শিল্পসমূহের মধ্যে রয়েছে মোটরগাড়ি, টেক্সটাইল, সিমেন্ট, লৌহ, ইস্পাত, বিমান প্রভৃতি। সাওপাওলো, রিওডিজেনিরো, বেলো হরিজোনটা | প্রধান শিল্পাঞ্চল ।

ব্রাজিলের ২৬টি রাজ্যের নাম :-

  • একর / Acre
  • এস্পিটো সাস্তো / Espírito Santo
  • আমাপা / Amapá
  • আমাজান / Amazonas
  • আলাগোস / Alagoas
  • গোইয়াস / Goiás
  • টোকান্টিনস / Tocantins
  • রোরাইমা / Roraima
  • রিও গ্রান্ডি দু সুল / Rio Grande do Sul
  • রিও ডি জেনিরো / Rio de Janeiro
  • রিও গ্র্যান্ড ড নরটে / Rio Grande do Norte
  • রোনডেনিয়া / Rondônia
  • বাহিয়া / Bahia
  • প্যারা / Pará
  • পারাইবা / Paraíba
  • প্ৰারনামবুকা / Pernambuco
  • প্যারাইনা / Paraná
  • পিউরি / Piauí
  • সিয়েরা / Ceará
  • সার্জিপ / Sergipe
  • সাও পাওলো / São Paulo
  • সান্তা ক্যাটারিনা / Santa Catarina
  • মারানহো / Maranhão
  • মাটো গ্রোসো / Mato Grosso
  • মাটো গ্রোসো দু সুল / Mato Grosso do Sul
  • মিনাস গেরেইস / Minas Gerais