বাংলাদেশে যেকোন ধরণের অস্ত্র কেনার জন্য লাইসেন্স নিতে হয়। মূলত অস্ত্র আইন ১৮৭৮ (The Arms Act, 1878) এবং ১৯২৪ সালের আর্মস রুলস(Arms Rules, 1924) এর আওতায় যেকোন বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান করা হয়। কিন্তু বৈধ লাইসেন্স থাকা সত্বেও কোন ব্যক্তিকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা যায়। আসুন, আইনের ধারা উল্লেখপূর্বক বিধানগুলোর আলোচনা দেখি:

The Arms Act, 1878 এর ১২ ধারা মোতাবেক যদি কোন ব্যক্তি তার লাইসেন্সকৃত অস্ত্রসহ বা লাইসেন্সকৃত না হোক, এমন পন্থায় অথবা এমন অবস্থাতে অস্ত্র বহন করে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করে, যার ফলে ন্যায়সঙ্গতভাবে সন্দেহের উদ্রেক হয় যে, তার লাইসেন্সকৃত অস্ত্র/অস্ত্র বেআইনী উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে, সেক্ষেত্রে যেকোন ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যেতে পারে এবং তার নিকট থেকে বহনকৃত অস্ত্র কেড়ে নিতে পারেন।

উল্লেখ্য, আটককৃত ব্যক্তি ম্যাজিস্ট্রেট অথবা পুলিশ কর্মকর্তা না হলে- আটককৃত ব্যক্তি এবং আটককৃত অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ বা সামরিক সম্ভারসমূহ যত শীঘ্র সম্ভব পুলিশ কর্মকর্তার নিকট সোপর্দ করতে হবে। এক্ষেত্রে পুলিশও অযথা দেরি না করে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৫৩ ধারা এবং পিআরবি বিধি-২৮০ ও বিধি-৩২২ প্রয়োগের মাধ্যমে লাইসেন্সধারী অস্ত্র বহনকৃত ব্যক্তির দেহ তল্লাশী করে অস্ত্রটি নিজ হেফাজতে নিবেন এবং একটি জব্দতালিকা তৈরি করবেন। আটককৃত ব্যক্তি এবং অস্ত্রশস্ত্র ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হাজির করবেন।

এক্ষেত্রে আরো একটি কার্য ঘটিবে, তা হলো, ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৭(২) ধারা অনুযায়ী পুলিশ কর্মকর্তা আটককৃত ব্যক্তির লাইসেন্সের বিষয়টি যাচাই করবেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে যদি লাইসেন্সের সঠিকতা পাওয়া যায়, তবে মুচলেকা সম্পাদনের মাধ্যমে আটককৃত ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়ার বিধান রয়েছে । এক্ষেত্রে এরূপ ব্যক্তিকে হাজতখানায় রাখার প্রয়োজন নাই।

[ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৭(২) ধারা ও পিআরবি ৩১৭ বিধি]

আবার, ২৪ ঘন্টার মধ্যে যদি লাইসেন্সের সঠিকতা পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে বিচারার্থে আটককৃত ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধারকৃত অস্ত্রসহ আটককৃত ব্যক্তিকে একজন ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট হাজির করবেন। এক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৭ ধারার কোন প্রয়োগ না থাকলে এরূপ ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় আটক রাখা যাবে না (গ্রেফতারের স্থান হতে ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতের যাওয়ার সময় বাদে)।[ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৭(৩) ধারা ও ৬১ ধারা]                                                                                                                        >>>>>>>>>>