প্রশ্নঃ বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ আইন দেশের উন্নয়নে কীভাবে অবদান রাখতে পারে তা আলোচনা কর।

Discuss how intellectual property law contributes to the development of a country.

বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি ও দেশের উন্নয়নঃ দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে সকল দেশে এক রকম নয়। অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাপকাঠিতে বিশ্বের দেশগুলোকে উন্নত, উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশে ভাগ করা হয়েছে। উন্নত দেশগুলো চায়— তাদের দেশের প্রযুক্তি পাচার রোধ করতে এবং মাঝারি ও বড় বড় শিল্প স্থাপনে অর্থ বিনিয়োগে আস্থা ও নিরাপত্তার অভাব দূরীকরণে ব্যবস্থা নিতে। বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি আইন এ সকল ব্যাপারে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধানে সচেষ্ট থাকে। উন্নয়নশীল দেশসমূহ তাদের কৃষি ও শিল্পখাতের উন্নয়নে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে থাকে। কৃষির উন্নয়ন ও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনই এদের প্রধান লক্ষ্য। ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় শিল্প স্থাপন, বাণিজ্যিক কার্যাবলি সম্প্রসারণ ও রপ্তানি করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এদের লক্ষ্য থাকে। অনেক উন্নয়নশীল দেশ ঐতিহ্যবাহী শিল্প ও লোকসংস্কৃতিতে বেশ সমৃদ্ধ। দেশীয় হস্তশিল্প ও শিল্পজাত দ্রব্য ও কাপড়ের ওপর নকশা ব্যবহার করে আর্থিক সুবিধা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করে থাকে।

পল্লি উন্নয়নে উন্নয়নশীল দেশসমূহ পল্লি অঞ্চলের সাধারণ অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে থাকে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে গ্রামাঞ্চলের লোকের জন্য উন্নত জীবনযাপন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উন্নয়নশীল দেশসমূহ নীতিনির্ধারণ করে থাকে। স্বল্পোন্নত দেশসমূহের উন্নয়নের একই লক্ষ্য থাকে।

প্যাটেন্ট ব্যবস্থায় ডকুমেন্টগণের কার্যগুলোর মধ্যে রয়েছে গবেষণাকর্মের জন্য প্রযুক্তিগত তথ্য সরবরাহ করা, বিকল্প প্রযুক্তি চিহ্নিত করা, সুনির্দিষ্ট প্রযুক্তির মূল্যায়ন, কারিগরি সমস্যার সমাধান বের করা ও অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশসমূহ এ সকল তথ্যসমূহ পেতে পারে যা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখবে। ট্রেডমার্ক ব্যবসায় বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। পণ্য উৎপাদনকারীরা নিরাপদে তাদের পণ্য বাজারজাত করতে পারে এবং অসাধু ব্যবসায়ী নিজেদের স্বার্থে ঐ সকল নিবন্ধিত মার্ক ব্যবহার করতে পারে না। উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের ব্যবসায়ীগণ অর্থের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত ট্রেডমার্ক কিনে বাজারজাত করতে পারে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।

উন্নয়নের ক্ষেত্রে কপিরাইট এক বিশেষ ভূমিকা রাখে। স্বাধীনতা লাভের পর অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশ তাদের জনগণকে শিক্ষিত করতে এবং বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। সাহিত্যকর্ম, শিল্পকর্ম, বৈজ্ঞানিক কর্ম ও বিভিন্ন নকশাকর্মের প্রণেতাদের প্রণোদনামূলক পদক্ষেপ নিয়ে এবং কপিরাইট আইন দ্বারা তাদের স্বার্থরক্ষা করলে এবং সর্বোপরি উন্নত দেশসমূহের এ জাতীয় কর্মের কৌশল গ্রহণ করে উন্নয়নশীল দেশগুলো নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ওয়াইপো প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। এভাবে মেধাস্বত্ব আইন দেশের বিভিন্নমুখী উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।