বুক রিভিউ (পুস্তক সমালোচনা) কি :-

বই বা পুস্তক রিভিউ হল এক প্রকার সাহিত্য সমালোচনা যেখানে কোনো গ্রন্থ বা বইকে বিশ্লেষন করা হয় তার বিষয়, শৈলি এবং গুণাগুণের নিরীখে। যেখানে উঠে আসে সেই বইটির সাফল্য, অসাফল্য এবং গ্রহণযোগ্যতার মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

বই রিভিউ এর গুরুত্ব :-

গুটেন বার্গ এর ছাপাখানার ফসল ছিল বই। আর তবে থেকেই এ পর্যন্ত এর গুরুত্ব অটুট। বহু গণমাধ্যম সাফল্যের সাথে জন্মলাভ করে একটি নির্দিষ্ট সময়ে তার যাত্রা সমাপ্ত করেছে। নতুন কোনো প্রযুক্তির আগমনে সে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে নবীনকে স্থান করে দিয়েছে।

কিন্তু বই একমাত্র মাধ্যম যে নিজের স্থান কখনই ছেড়ে দেয়নি কাওকে। কারন এর চাহিদা, সাফল্য এবং গ্রহণ যোগ্যতা জন্মলগ্ন থেকে আজও অটুট।

ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে সব বয়সের সকল পেশার সর্বস্তরের মানুষ বই এর উপর নির্ভরশীল। ইতিহাস, শিক্ষা, সাংস্কৃতি ও মননের বাহক বই। পুস্তক সমালোচনা বা বুক রিভিউ মূলত স্থান পায় সংবাদপত্র এবং ম্যাগাজিনের নির্দিস্ট স্থানে।

বই পাঠকদের সঠিক এবং নতুন বইয়ের সাথে পরিচয় করে দেওয়াই বুক রিভিউ বা পুস্তক সমালোচনার মূল উদ্দেশ্য।

পুস্তক রিভিউ এর বৈশিষ্ট্য :-

১ – একটি শিরোনাম থাকে যা বইটির মূল আলোচ্য বিষয়কে সূচিত করে।

২ – বিশেষ শব্দসীমার মধ্যে লেখা হয় পুস্তক সমালোচনা। খুব বড় বা খুব ছোটো করে লেখা হয় না।

৩ – পুস্তক সমালোচনা, বইটির মূল বিষয় সম্পর্কে পাঠককে জানায়।

৪ – বইটির দোষ গুণ গুলি তুলে ধরে।

বুক রিভিউ কি ভাবে লিখবে :-

১ – অবশ্যই বইটি (যার সমালোচনা লেখা হবে) মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। না পড়ে মনগড়া কথা লেখা সম্পূর্ণ নীতি বিরুদ্ধ।

২ – বইটির একেবারে বাইরের কভার পৃষ্ঠা বা জ্যাকটটিকে বোঝার চেষ্টা করা। কারন জ্যাকেটে লেখা বইয়ের নাম, অন্য কোনো লেখা এবং ছবি বইটির মূল ভাবনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।

৩ – ওই লেখকের আগে কোনো বই প্রকাশিত হলে তা পড়া অথবা তার ওনাঞ্জন সম্পর্কে অবহিত থাকা।

৪ – বইটি পড়ার সময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নোট করা, যাতে সমালোচনা করার সময় সব দিক গুলি ফুটে ওঠে এবং কোনোটা বাদ না পড়ে।

৫ – কোনো গল্প, উপন্যাস বা এজাতীয় কিছু হলে তার উল্লিখিত চরিত্রগুলির নাম নোট করা। যাতে সমালোচনার সময় নির্ভুল ভাবে চরিত্রগুলির সমালোচনা করা যায়।

৬ – বইটির মূল ভাবনা (Main Idea) বুঝে নেওয়া যাতে সমালোচনার সময় এই বিষয়ে আলোকপাত করা যায় যে মূল ভাবনাটি কতটা সাফল্যের সঙ্গে পরিস্ফুট করতে পেরেছেন লেখক।

 

৭ – পাঠকেরা বইটি পড়েননি একথা মাথায় রেখে বইটির চরিত্র ও বিষয় সম্পর্কে পাঠককে প্রাথমিক ধারণা দেওয়া।

৮ – যথাসাধ্য নিরপেক্ষতা বজায় রেখে বুক রিভিউ করতে হবে।

৯ – লেখক, প্রকাশক ও মূল্যের উল্লেখ করা যাতে পাঠক তার সাধ্য বুঝে জায়গা থেকে সেটি সংগ্রহ করতে পারেন।