বাংলা সাহিত্যের একমাত্র পত্রকাব্যের নিদর্শন হলো ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’ [১৮৬২]। এ কাব্যটি ইতালির কবি ওভিদের Heroides কাব্যের আদর্শানুসারে লিখিত পত্রকাব্য। যিশু খ্রিষ্টের জন্মের অব্যবহিত পরে রচিত ওভিদের কবিতাগুলোর মূল বিষয়বস্তু প্রেম হলেও উপকরণ ছিল পুরাণের। মধুসূদনও তাই। তিনি অভিমান ও অনুযোগের যোগসূত্র দিয়ে বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন অবস্থানের কয়েকজন ক্ষুব্ধা ও বিরহিনী নারীকে সফলভাবে এ কাব্যে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। ওভিদের কাব্যের পত্রসংখ্যা ছিল একুশ। মধুসূদন এগারোটি পত্র সম্পূর্ণ করেছিলেন। আরো কয়েকটি শুরু করলেও তার পক্ষে শেষ করা সম্ভব হয়নি। ওভিদের কাব্যের নায়িকারা তাদের স্বামীর উদ্দেশ্যে প্রধানত প্রেম উদ্বোধিত চিত্তে পত্র রচনা করেছে।

তিনি এদেশের পৌরাণিক নারী চরিত্র উপজীব্য করে পত্র রচনা করেছেন। পত্রগুলোর কোনো নারী নিষিদ্ধ প্রেমে উন্মাদিনী, কেউ প্রিয় সঙ্গ লাভের জন্য কামাতুরা, কেউবা দুর্বল ভীরু। স্বামীর প্রতি তীব্র বাক্যবাণ বর্ষণে অকৃপণা। বীরাঙ্গনা কাব্যের চরিত্রগুলোতে কামনার রক্তরাগ এবং চরিত্রের সুদৃঢ় স্বাতন্ত্র্য প্রাধান্য পেয়েছে। তাই বলা যায়, বীরাঙ্গনা পত্রকাব্যটি সব দিক মিলিয়ে সফলতার দাবিদার।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।